মা-বাবার জন্য সন্তানের বিয়োগ-বেদনা অসহনীয়। ফলে সন্তানের মৃত্যুতে কোনো কোনো মা-বাবার মুখ থেকে এমন কথা বের হয়ে যায়, যা কুফরী কথা। যেমন সন্তানের মৃত্যুতে কোনো কোনো মা-বাবাকে বলতে শোনা যায়, 'আল্লাহ আমার সন্তান ছাড়া আর কাউকে দেখল না।'
মুমিন মাত্রই এমন কোনো কথা বলতে পারে না। দ্বীনের বিশুদ্ধ জ্ঞানের ভারসাম্যের অভাবেই মানুষ এমন কথা বলে ফেলে। এটি একটি কুফরী বাক্য, যা আল্লাহর ফয়সালার ওপর আপত্তি ও অভিযোগের ইঙ্গিত বহন করে।
সন্তান আল্লাহর দান। তিনি যাকে ইচ্ছা, তাকে এটা দান করেন। তেমনি সন্তান দেওয়ার পর সন্তানকে জীবিত রাখা বা নিয়ে যাওয়াও আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আর এ সন্তান তো আল্লাহই অনুগ্রহ করে দান করেছিলেন, তিনিই আবার নিয়ে গেছেন। তাছাড়া এতে অনেক হিকমতও নিহিত থাকে, যা আমাদের জানা নেই। সুতরাং আল্লাহর ফয়সালা মেনে নেওয়া ও সবর করাই মুমিনের জন্য শ্রেয় এবং এটাই নবিজির শিক্ষা।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনো এক কন্যা খবর পাঠালেন, তার এক সন্তান মৃতপ্রায় অবস্থা। তখন নবিজি খবরদাতাকে বললেন, তুমি গিয়ে তাকে বলো,
আল্লাহ যাকে নিয়ে যান সেও আল্লাহর, যাকে রাখেন সেও তাঁর। আর সবকিছুর জন্যই তাঁর কাছে রয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমা। সুতরাং তুমি তাকে ধৈর্য ধারণ করতে বলো এবং সওয়াবের আশা করতে বলো। পরে নবিজি তাকে দেখতে গেলেন।”১
কারো মৃত্যুতে মাতম করা, জামা-কাপড় ছেঁড়া, গাল চাপড়ানো, জাহেলী কথাবার্তা বলা প্রভৃতি কর্ম নিয়ে হাদীসে ধমকি এসেছে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
যে (কারো মৃত্যুশোকে বিলাপ করে) গাল চাপড়ায়, জামা ছেঁড়ে এবং জাহেলী যুগের মত বিভিন্ন (অন্যায়) কথা বলে সে আমাদের দলভুক্ত নয় ।
তাহলে কি সন্তান বা কারো বিয়োগ-বেদনায় কাঁদাও যাবে না? অবশ্যই কাঁদা যাবে, তবে বিলাপ করা এবং জাহিলী কথাবার্তা বলা যাবে না। নিজ সন্তানের বিয়োগ-বেদনায় স্বয়ং নবিজিও কেঁদেছেন; কিন্তু সাথে সাথে সতর্কও করে দিয়েছেন, এ অবস্থায়ও আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলা যাবে না। নবিজির সন্তান ইবরাহীমের মৃত্যুর সময় তিনি কাঁদছিলেন। এ দেখে আবদুর রহমান ইবন আউফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আপনিও কাঁদছেন আল্লাহর রাসূল! (কেননা তিনি ধারণা করেছিলেন, এ সাধারণ কান্নাও নিষিদ্ধ বিলাপের অন্তর্ভুক্ত)। তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, (এটি বিলাপ নয়) এ তো মানুষের মনের দয়া-মায়া (এর স্বাভাবিক প্রকাশ ও কষ্টের অশ্রু; এতে সমস্যা নেই)। তারপর বললেন,
চোখ অশ্রুক্ত, হৃদয় ব্যথিত। কিন্তু আমাদের রব অসন্তুষ্ট হন আমরা এমন কথা বলবো না। হে ইবরাহীম! তোমার বিয়োগে আমরা বড়ই ব্যথিত৷২
সুতরাং কারো মৃত্যুতেই আমাদের বিলাপ করা যাবে না এবং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলা যাবে না; বরং ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলতে এবং সবর করতে হবে; যার বিনিময়ে আল্লাহ জান্নাত দিবেন।
হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
যখন আমি আমার মুমিন বান্দার প্রিয়জনকে উঠিয়ে নিই আর সে (সবর করে এবং) সওয়াবের আশা রাখে; কেবল জান্নাতই হতে পারে এর প্রতিদান৩।৪
১. সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২৩
২. সহীহুল বুখারী, ১৩০৩
৩. প্রাগুক্ত, ৬৪২৪
৪. মাসিক আল-কাউসার থেকে গৃহীত।
মুমিন মাত্রই এমন কোনো কথা বলতে পারে না। দ্বীনের বিশুদ্ধ জ্ঞানের ভারসাম্যের অভাবেই মানুষ এমন কথা বলে ফেলে। এটি একটি কুফরী বাক্য, যা আল্লাহর ফয়সালার ওপর আপত্তি ও অভিযোগের ইঙ্গিত বহন করে।
সন্তান আল্লাহর দান। তিনি যাকে ইচ্ছা, তাকে এটা দান করেন। তেমনি সন্তান দেওয়ার পর সন্তানকে জীবিত রাখা বা নিয়ে যাওয়াও আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আর এ সন্তান তো আল্লাহই অনুগ্রহ করে দান করেছিলেন, তিনিই আবার নিয়ে গেছেন। তাছাড়া এতে অনেক হিকমতও নিহিত থাকে, যা আমাদের জানা নেই। সুতরাং আল্লাহর ফয়সালা মেনে নেওয়া ও সবর করাই মুমিনের জন্য শ্রেয় এবং এটাই নবিজির শিক্ষা।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনো এক কন্যা খবর পাঠালেন, তার এক সন্তান মৃতপ্রায় অবস্থা। তখন নবিজি খবরদাতাকে বললেন, তুমি গিয়ে তাকে বলো,
إِنَّ لِلهِ مَا أَخَذَ وَلَهُ مَا أَعْطَى وَكُلَّ شَيْءٍ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَى، فَمُرْهَا فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ
আল্লাহ যাকে নিয়ে যান সেও আল্লাহর, যাকে রাখেন সেও তাঁর। আর সবকিছুর জন্যই তাঁর কাছে রয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমা। সুতরাং তুমি তাকে ধৈর্য ধারণ করতে বলো এবং সওয়াবের আশা করতে বলো। পরে নবিজি তাকে দেখতে গেলেন।”১
কারো মৃত্যুতে মাতম করা, জামা-কাপড় ছেঁড়া, গাল চাপড়ানো, জাহেলী কথাবার্তা বলা প্রভৃতি কর্ম নিয়ে হাদীসে ধমকি এসেছে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَطَمَ الخُدُودَ ، وَشَقَ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيَّةِ.
যে (কারো মৃত্যুশোকে বিলাপ করে) গাল চাপড়ায়, জামা ছেঁড়ে এবং জাহেলী যুগের মত বিভিন্ন (অন্যায়) কথা বলে সে আমাদের দলভুক্ত নয় ।
তাহলে কি সন্তান বা কারো বিয়োগ-বেদনায় কাঁদাও যাবে না? অবশ্যই কাঁদা যাবে, তবে বিলাপ করা এবং জাহিলী কথাবার্তা বলা যাবে না। নিজ সন্তানের বিয়োগ-বেদনায় স্বয়ং নবিজিও কেঁদেছেন; কিন্তু সাথে সাথে সতর্কও করে দিয়েছেন, এ অবস্থায়ও আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলা যাবে না। নবিজির সন্তান ইবরাহীমের মৃত্যুর সময় তিনি কাঁদছিলেন। এ দেখে আবদুর রহমান ইবন আউফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আপনিও কাঁদছেন আল্লাহর রাসূল! (কেননা তিনি ধারণা করেছিলেন, এ সাধারণ কান্নাও নিষিদ্ধ বিলাপের অন্তর্ভুক্ত)। তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, (এটি বিলাপ নয়) এ তো মানুষের মনের দয়া-মায়া (এর স্বাভাবিক প্রকাশ ও কষ্টের অশ্রু; এতে সমস্যা নেই)। তারপর বললেন,
يَا إِبْرَاهِيمُ لَمَحْزُونُونَ إِنَّ العَيْنَ تَدْمَعُ، وَالقَلْبَ يَحْزَنُ، وَلاَ نَقُولُ إِلَّا مَا يَرْضَى رَبِّنَا، وَإِنَّا بِفِرَاقِكَ
চোখ অশ্রুক্ত, হৃদয় ব্যথিত। কিন্তু আমাদের রব অসন্তুষ্ট হন আমরা এমন কথা বলবো না। হে ইবরাহীম! তোমার বিয়োগে আমরা বড়ই ব্যথিত৷২
সুতরাং কারো মৃত্যুতেই আমাদের বিলাপ করা যাবে না এবং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলা যাবে না; বরং ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলতে এবং সবর করতে হবে; যার বিনিময়ে আল্লাহ জান্নাত দিবেন।
হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
مَا لِعَبْدِي الْمُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءُ، إِذَا قَبَضْتُ صَفِيَّهُ مِنْ أَهْلِ الدِّنْيَا ثُمَّ احْتَسَبَهُ، إِلَّا الجَنَّةُ.
যখন আমি আমার মুমিন বান্দার প্রিয়জনকে উঠিয়ে নিই আর সে (সবর করে এবং) সওয়াবের আশা রাখে; কেবল জান্নাতই হতে পারে এর প্রতিদান৩।৪
১. সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২৩
২. সহীহুল বুখারী, ১৩০৩
৩. প্রাগুক্ত, ৬৪২৪
৪. মাসিক আল-কাউসার থেকে গৃহীত।
Attachments