সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রবন্ধ আর-রাশীদ নামের অর্থ ও ব্যাখ্যা

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
10,257
Credits
6,303
আর-রাশীদ (সঠিক পথের নির্দেশক, বিচক্ষণ, সচেতন)[1]:

তিনি কথা ও কাজে সর্বক্ষেত্রেই সঠিক পথের নির্দেশক। তিনি বিভ্রান্ত লোকদেরকে ইন্দ্রিয়বোধগাম্য পথ এবং পথহারাকে নৈতিকতার পথ প্রদর্শন করেন। তিনি সৃষ্টিকুলের জন্য নবী-রাসূলদের মাধ্যমে পূর্ণ হিদায়েতের যে শরী‘আত প্রেরণ করেছেন সে শরী‘আতের দ্বারা তাদেরকে সঠিক পথের দিক-নির্দেশনা দেন। মুমিন বান্দা যখন কাজে-কর্মে একমাত্র তাঁরই জন্য একনিষ্ঠ হয় তখন তিনি তাদেরকে সুপথ দেখান, তাদের যাবতীয় কল্যাণের পথ নির্দেশ করেন, তাদের জন্য কাজকে সহজ করে দেন এবং কঠোরতা দূর করে দেন।[2] সঠিক পথের নির্দেশনাই তাঁকে আর-রাশীদ তথা সুপথের নির্দেশক হওয়া ও বান্দাকে তিনি দিক-নির্দেশনা দিয়ে থাকেন এটি প্রমাণ করে। অত:এব, তাঁর তাকদীর সংক্রান্ত বাণীসমূহ যা প্রতিটি জিনিসের মধ্যে বিদ্যমান এবং তিনি এর দ্বারা সবকিছু পরিচালনা করেন তা সবকিছুই সত্য; কেননা তাঁর সব কাজেই রয়েছে হিকমত, সৌন্দর্য ও নিপুণতা। তাঁর শর‘ঈ দীনি বাণীসমূহ বলতে বুঝায়, তিনি তাঁর প্রেরিত কিতাবসমূহে যেসব কথা বলেছেন এবং নবী-রাসূলগণের যবানে তিনি যা বলেছেন সেসব সংবাদের সবকিছুই পরিপূর্ণ সত্য এবং আদেশ-নিষেধে রয়েছে পূর্ণ ন্যায়-পরায়নতা। কেননা আদেশ ও নিষেধের ক্ষেত্রে আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্য ও সুন্দর বাণী বলার কেউ নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿وَتَمَّتۡ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدۡقٗا وَعَدۡلٗا١١٥﴾ [الانعام: ١١٥]​

“আর আপনার রবের বাণী সত্য ও ন্যায়পরায়ণতার দিক থেকে পরিপূর্ণ হয়েছে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১১৫]

বনী-রাসূলদের মাধ্যমে (সৎকাজের দেওয়া ও অসৎকাজের থেকে নিষেধ করা) হিদায়েত বান্দার জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সুপথের নির্দেশনা; বরং এক কথায় বলা যায় যে, তাদের নির্দেশিত পথ ব্যতীত যে হিদায়েত তালাশ করবে তাকে আল্লাহ গোমরাহ করবেন। যে ব্যক্তিকে হিদায়েতের পথ দেখানো হবে না সে কখনও হিদায়েত পাবে না। অত:এব, এর দ্বারা বান্দার ইলমী পথ নির্দেশনা অর্জিত হবে অর্থাৎ বস্তুর হাকীকত, উসূল, ফুরু‘ (শাখা মাস’আলা), দীনি ও দুনিয়াবী কল্যাণ ও অকল্যাণ ইত্যাদি তার কাছে স্পষ্ট হবে। আবার এ হিদায়েতের দ্বারা তার কাছে আমলী পথ নির্দেশনাও অর্জিত হবে। এ পথ নির্দেশনা অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে, কলবকে পবিত্র করে, ভালো কাজ ও উত্তম চরিত্রের দিকে আহ্বান করে, সমস্ত সৌন্দর্যের প্রতি উৎসাহিত করে এবং যাবতীয় নিকৃষ্ট ও অসুন্দরের থেকে অনুৎসাহিত ও সতর্ক করে। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর হিদায়েত তালাশ করবে সে হিদায়েত প্রাপ্ত হবে আর যে ব্যক্তি তাঁর পথ নির্দেশনা পাবে না সে পথ-ভ্রষ্ট ও গোমরাহ হবে। রাসূলদের প্রেরণ ও সর্বময় হিদায়েত সমৃদ্ধ আসমানী কিতাবসমূহ নাযিলের পরে কারো কোন ওযর থাকবে না। কত লোক অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে হিদায়েত তালাশ করার পরে পথ-ভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে হিদায়েত পেয়েছেন। কেননা সে জানে যে, আল্লাহই একমাত্র হিদায়েত দানকারী।[3]


[1] গ্রন্থকার এ নামটিকে আসমাউল হুসনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন; কিন্তু এটি আল্লাহর নাম হতে হলে দলিল থাকতে হবে।
[2] তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১২৭।
[3] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৭৮-৭৯; আত-তাফসীর, ৫/৬৩১।
 
Top