সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রবন্ধ আর-রফীক নামের অর্থ ও ব্যাখ্যা

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
10,257
Credits
6,303
আর-রফীক (কোমল, নম্র ব্যবহারকারী):

আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে আরেকটি নাম হলো আর-রফীক (কোমল, নম্র ব্যবহারকারী)। তিনি তাঁর কাজে-কর্মে ও শরী‘আতের বিধি-বিধান নাযিলে বান্দার উপর কোমলতা ও নম্রতা দেখিয়েছেন। আর এ নামটি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত সহীহ হাদীস থেকে নেওয়া হয়েছে।

«إِنَّ اللهَ رَفِيقٌ يُحِبُّ الرِّفْقَ، وَيُعْطِي عَلَى الرِّفْقِ مَا لَا يُعْطِي عَلَى الْعُنْفِ، وَمَا لَا يُعْطِي عَلَى مَا سِوَاهُ».​

“আল্লাহ কোমল, নম্র ব্যবহারকারী। তিনি কোমলতা ও নম্রতা পছন্দ করেন। তিনি নম্রতার জন্য এমন কিছু দান করেন যা কঠোরতার জন্য দান করেন না; আর অন্য কোন কিছুর জন্যও তা দান করেন না।”[1]

আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কাজে অত্যন্ত নম্র ও কোমল। তিনি সৃষ্টিজগতকে তাঁর হিকমত ও নম্রতা অনুসারে স্তরে স্তরে ধীরে ধীরে সৃষ্টি করেছেন; অথচ তিনি তাদেরকে একই সাথে ও একই সময়ে সৃষ্টি করতে সক্ষম।[2]

যে ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টিজগত ও তাঁর শরী‘আত নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করবে সে দেখতে পাবে কিভাবে একটির পরে আরেকটি স্তরে স্তরে আশ্চর্যান্বিতভাবে তিনি সৃষ্টি করেছেন। অত:এব, সে ব্যক্তিই ধৈর্যশীল ও বিনম্র যে সৃষ্টিকুলের ব্যাপারে আল্লাহর নিয়ম ও তাঁর রাসূলের সুন্নাতের অনুসরণে প্রতিটি কাজ কোমলতা, ধীরস্থিরতা ও প্রশান্তির সাথে সম্পাদন করে থাকে।

কোমলতা ও নম্রতা যদি কারো চলার পদ্ধতি হয় তাহলে তার জন্য যাবতীয় কাজ সহজ হয়ে যায়; বিশেষ করে দাওয়াতী কাজে মানুষকে আদেশ-নিষেধ ও উপদেশ দিতে যা কিছু প্রয়োজন হয় সেগুলো তার জন্য সহজ হয়ে যায়। কেননা মানুষ কোমলতা ও নম্রতার মুখাপেক্ষী। এমনিভাবে কেউ কথার মাধ্যমে কাউকে কষ্ট দিয়ে সে যদি তাকে গালিগালাজ না করে নিজের জিহ্বাকে হিফাযত করে এবং নম্রতা ও কোমলতার দ্বারা যদি নিজেকে সংযত রাখে, তাহলে সে উক্ত ব্যক্তির কথা ও কাজের অনুরূপ প্রতিবাদ করলে যতটা প্রতিবাদ হতো তার চেয়ে বেশি প্রতিবাদ হবে। এর সাথে সে আরাম, প্রশান্তি, গম্ভীর্যতা ও ধৈর্যশীলতা অর্জন করল।

কেউ চিন্তা-ভাবনা করলে দেখতে পাবে আল্লাহর শরী‘আতের কোমলতা, এর আহকামের স্তরে স্তরে সুবিন্যাস্ততা, প্রশস্ততা ও সহজভাবে এ শরী‘আতের বিধি-বিধান আরোপিত হওয়া, বান্দার প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগীতা, তিনি সৃষ্টিজগতকে স্তরে স্তরে সৃষ্টি করার হিকমত, তাদেরকে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তরিত করা ইত্যাদির রহস্য ও হিকমত কারো জ্ঞানে সীমাবদ্ধ করতে পারে না।

বান্দার কোমলতা তার দৃঢ়তার সাথে সাংঘর্ষিক নয়। সে কিছু ব্যাপারে কোমল ও নম্র হতে পারে; কিন্তু প্রয়োজনে সে কঠোরও হতে পারে। যখন কঠোর হওয়া দরকার তখন কঠোর হওয়া কোমলতার বিপরীত নয়।[3]


[1] সহীহ মুসলিম, ৪/২০০৩-২০০৪, কিতাবুল বির ওয়াস সিলাহ, বাব, ফাদলুর রিফক, হাদীস নং ২৫৯৩, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে হাদীসটি বর্ণিত।
[2] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৬৩।
[3] তাওদীদুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১২৩।
 
Top