মুওয়াত্তা মালিক ২য় খন্ড - PDF

হাদিস গ্রন্থ মুওয়াত্তা মালিক ২য় খন্ড - PDF ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রাহি.)

মুওয়াত্ত্বা মালিক গ্রন্থের কতিপয় বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

১. মাদীনাবাসীর বর্ণনার উপর ভিত্তি করে রচিত। মুওয়াত্ত্বা হলো ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) কর্তৃক সংকলিত সর্বপ্রথম হাদীস গ্রন্থ। এ গ্রন্থটি পুরোপুরিভাবে মাদীনাবাসীর বর্ণনার ভিত্তিতে সংকলন করা হয়েছে। গ্রন্থটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, প্রণয়নের জন্য ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ)-কে মাদীনার বাইরে যাতায়াত করতে হয়নি। মাদীনার লোকেরা নাবী এবং তাঁর সহাবীদের সবচেয়ে বেশি সান্নিধ্য লাভ: করেছেন। তাই তাদের থেকে তিনি খুব সহজেই হাদীস গ্রহণ করেছেন।

২. বিশুদ্ধতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ মুওয়াত্ত্বা মুওয়াত্ত্বার বিশুদ্ধতা ও তাঁর মর্যাদা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত, আর সে কারণেই এর নাম 'মুওয়াত্ত্বা' রাখা হয়েছে। মুওয়াত্ত্বা মালিকে কেবল সেই সকল বর্ণনা ও ফাতাওয়া সন্নিবেশিত হয়েছে, যা সমসাময়িক সকল আলিম সমর্থন করেছিলেন। রসূলুল্লাহ -এর সহাবা ও তাবিঈগণ যে সকল মাসআলার উপর 'আমাল করেছেন ফাতাওয়া দিয়েছেন, সেই সকল মাসআলার সমাধান মুওয়াত্ত্বায় সংকলিত হয়েছে। তাই একে 'মুওয়াত্ত্বা' নামে নামকরণ করা হয়েছে। ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) মুওয়াত্ত্বার কাজ সম্পন্ন করার পর মাদীনার বিখ্যাত ৭০ জন ফাক্বীহ 'আলিমের সামনে পরীক্ষার জন্য পেশ করেন। তারা সকলেই এর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন। এজন্য তিনি এর নামকরণ করেন 'মুওয়াত্ত্বা'।

৩. ক্রমানুসারে হাদীস বিন্যাস এ গ্রন্থটির আরেকটি বিশেষত্ব এই যে, এখানে প্রথমে নাবী -এর হাদীস, তারপর সহাবীদের কথা এবং এরপর ভাবি ঈদের কুরআন হাদীসভিত্তিক ফাতাওয়া ক্রমানুসারে সাজানো হয়েছে।

৪. সানাদের বিশুদ্ধতা মুওয়াত্ত্বা গ্রন্থের সর্বাপেক্ষা বিশুদ্ধ ও উত্তম সানাদ হলো জোড়া সানাদ। যা মাত্র দু'টি সানাদে বর্ণিত হয়। যেমন, মালিক নাফি', নাফি' ইবনু 'উমার-এর সানাদ হলো হাদীসের জগতে স্বর্ণ সানাদ। সানাদের বিচারে মুওয়াত্ত্বা মালিক-এর স্থান সবার উপরে। কারণ এখানে ইমাম মালিক থেকে মুহাম্মাদ পর্যন্ত তিনের অধিক কখনো হয়নি। এ গ্রন্থের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সহাবী, তাবি'ঈ এবং তাবি তাবি'ঈ পর্যন্ত একটি হাদীস বর্ণিত হওয়ার পর তা গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

৫. বর্ণনাকারীদের আধিক্য এ গ্রন্থের কথা প্রায় এক হাজার ব্যক্তি বর্ণনা করেছেন। এতে প্রমাণিত হয়। যে, সে সময় ইসলামী সমাজে এটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত ছিল।

৬. অধ্যায়ভিত্তিক সাজানো মুওয়াত্ত্বাকে ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) অধ্যায়ভিত্তিক সাজিয়েছেন। তিনি একটি করে অধ্যায় এনে তার অধীনে রসূলুল্লাহ -এর হাদীস এনেছেন। এতে সবার জন্য হাদীস খুঁজে পাওয়া ও অধ্যয়ন করা সহজ হয়েছে।

৭. তাহক্বীক্ব, তাখরীজ ও ফিক্বহ সংযোজন : এ গ্রন্থটিতে য'ঈফ হাদীস খুবই অল্প। তবুও জাতিকে হাদীসের সঠিক গ্রন্থ উপহার দেয়ার জন্য অনেক মুহাক্কিক 'আলিম এ গ্রন্থটির তাহক্বীক্ব করেছেন। আর যুগের চাহিদা অনুযায়ী আমরা 'হাদীস একাডেমী'র পক্ষ থেকে এর তাখরীজ ও ফিক্বহ সংযোজন করেছি। ফালিল্লা- হিল হাম্দ ।

রিওয়ায়াত মুওয়াত্ত্বায় স্থান পেয়েছে। এতে মারফু হাদীস আছে ৬০০, মুরসাল ২৩৫, মাওকুফ ৬১৩, তাবি'ঈনদের ক্বওল ও ফাতাওয়ার সংখ্যা ২৮৫, বালাগাতে মালিক ৫টি।

৯. ফিক্বহী বিষয় আলোচনা এ গ্রন্থে ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) আল্লাহর রসূল -এর হাদীস উল্লেখ করার পর হাদীস অনুসারে তাঁর বুঝও উল্লেখ করেছেন। এটি যেমন হাদীসের কিতাব তেমনি এটি ফিক্বহেরও কিভাব।

১০. মুওয়াত্ত্বা কিতাবে ইমাম মালিকের কতিপয় পরিভাষা : ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর পছন্দনীয় কোন ব্যক্তি বা মাদীনার কোন ফাক্বীহ বিশেষ করে ফুক্বাহায়ে সা'আ বা সাতজন ফাক্বীর কথা ও তাঁদের অভিমতকে তাঁর ভাষায় এভাবে বর্ণনা করেছেন- অর্থাৎ আমাদের নিকট সুন্নাত এরূপ।

মুহাদ্দিসীন ও ফাক্বীহদের কোন কিতাব পাঠ করার পর কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হলে এবং কোন ফাতাওয়া স্থির করলে তিনি উল্লেখ করেছেন- তার মানে আমর ইয়াহইয়া বলেন, ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ)-এর নিকট রিওয়ায়াত পৌঁছলে তিনি বর্ণনা করেছেন, আমার নিকট রিওয়ায়াত পৌঁছেছে যে....।

মাদীনার 'উলামার কোন বিষয়ে ইজমা' সংঘটিত হলে তিনি এটাকে এভাবে প্রকাশ করতেন- “যে সুন্নাতে আমাদের নিকট কোন মতানৈক্য নেই তা এরূপ।” মতানৈক্য থাকলে যে মত অধিক শক্তিশালী তা তিনি উল্লেখ করতেন। তখন তিনি এটাকে এভাবে বলতেন- "আমি যা শুনেছি তার মধ্যে এটাই উত্তম।"

১১. ইমামের নিজ হাতে সংকলিত ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) এ কিতাবটি নিজ হাতে লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি ৪০ (চল্লিশ) বছর যাবৎ এর উপর গবেষণা করে বিভিন্ন তথ্য সংযোজন-বিয়োজন করেন।

১২. মুওয়াত্ত্বার বিভিন্ন সংকলন বিভিন্ন ছাত্র কর্তৃক বর্ণিত মুওয়াত্ত্বার ১৬টি সংকলন প্রসিদ্ধ। তন্মধ্যে তাঁর অন্যতম প্রিয় ছাত্র ইয়াহ্ইয়া কর্তৃক বর্ণিত সংকলনটি অতি প্রসিদ্ধ ও সমাদৃত। আমরা 'হাদীস'একাডেমী' থেকে এ সংকলনটি প্রণয়ন করেছি। তবে এতে ফিক্বহী মাসায়িল সংযোজিত হয়েছে শায়খ যুবায়র “আলী যাঈ (রহিমাহুল্লাহ)-এর উর্দূ মুওয়াত্ত্বা মালিক থেকে। যা ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ)-এর অপর একজন ছাত্র 'আবদুর রহমান ইবনু কাসিম (রহিমাহুল্লাহ)-এর মুওয়ারা রিওয়ায়াত ইবনু কাসিম-এর অনুবাদ ও ব্যাখ্যা। যার হাদীস সংখ্যা ৫২৭টি। উল্লেখ্য যে, মুওয়াত্মার সংকলনের সংখ্যা ৩০টি বলেও মত আছে।

১৩. মুওয়াত্ত্বা কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা: ওয়াব ইবনু খালিদ বলেন, “পূর্ব ও পশ্চিমে রসূলুল্লাহ এর হাদীস বিষয়ে ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) অপেক্ষা বেশি নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি আর কেউ ছিলেন না।”

ইমাম শাফিঈ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, “কোন হাদীসের কোন অংশ নিয়ে সন্দেহ হলে ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) সে হাদীস বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকতেন।"

অতএব বুঝা গেল যে, ইমাম মালিক-এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সকল মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ আলিম মুওয়াত্ত্বাকে হিদায়াতের মশালরূপে গ্রহণ করেছিলেন।

১৪. তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ) প্রায় লক্ষাধিক হাদীস যাচাই-বাছাই করে। তার কিতাবটি রচনা করেছেন। মানুষের জানার মৌলিক বিষয়গুলো তিনি এখানে একত্রিত করেছেন। তাঁর এ কিতাবটি অন্যদের তুলনায় অনেক সংক্ষিপ্ত।
Purchase Link
Click Here to BUY NOW!

বইটি ক্রয় করে লেখক ও প্রকাশককে নতুন বই প্রকাশে উদ্বুদ্ধ করুন।

Author
Abu AbdullahVerified member
Downloads
28
Views
707
First release
Last update

Ratings

0.00 star(s) 0 ratings
Back
Top