বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ালে যে কোন সচেতন ব্যক্তি অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন যে, এমন কোন এলাকা নেই যেখানকার লোকেরা কোন না কোন পীর অথবা কোন না কোন কবর নিয়ে ব্যস্ত নয়। কারণ, তারা মনে করছে, উক্ত পীর বা কবর তাদের জন্য ইহকাল ও পরকালের সমূহ কল্যাণ বয়ে আনবে। এরা তাদেরকে সমূহ বিপদ থেকে রক্ষা করবে। এদের পূজা করলে আল্লাহ্ তা'আলা তাদের উপর অত্যন্ত সন্তুষ্ট হবেন এবং তাঁর নৈকট্য দ্রুত লাভ করা সম্ভবপর হবে। পরকালে এরা তাদের জন্য সুপারিশ করবে। তাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে চিরস্থায়ী জান্নাতে পৌঁছিয়ে দিবে। কেউ কেউ তো আবার উক্ত পীর বা কবর নিয়ে অতি বাড়াবাড়িকে বুযুর্গদের নিতান্ত অধিকার বলে জ্ঞান করছে। যা না করলে তাদের এহেন মানহানির জন্য পরকালে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট কঠিন জবাবদেহি করতে হবে; অথচ তাদের কর্মকাণ্ড এবং মক্কার কাফির ও মুশরিকদের কর্মকাণ্ডের মাঝে তেমন কোন ব্যবধান খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং কখনো কখনো শিক ও কুফরির ক্ষেত্রে এদের করুণ অবস্থা মক্কার কাফির ও মুরিদের শির্ক ও কুফরিকে ম্লান করে দেয়। এদের উক্ত কর্মকাণ্ডকে যদি সঠিক বলে ধরে নেয়া হয় তা হলে বিশ্বের বুকে শির্ক ও কুফরির কোন অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাবে না। উক্ত মানসিকতার দ্বিধা নিরসনের জন্যই অত্র পুস্তিকাটির অবতারণা। পুস্তিকাটিতে কবর প্রেমিক ও পীর পূজারীদের কিছু সন্দেহের বিস্তারিত উত্তর সন্নিবেশিত হয়েছে। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় হচ্ছে এই যে, এ পুস্তিকাটিতে রাসূল সাঃ সম্পৃক্ত যতগুলো হাদীস উল্লিখিত হয়েছে সাধ্যমত উহার বিশুদ্ধতার প্রতি সযত্ন দায়িত্বশীল দৃষ্টি রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিদেনপক্ষে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা নাসেরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ্) এর হাদীস শুদ্ধাশুদ্ধনির্ণয়ন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এতদসত্ত্বেও সকল যোগ্য গবেষকদের পুনর্বিবেচনার সুবিধার্থে প্রতিটি হাদীসের সাথে তার প্রাপ্তিস্থাননির্দেশ সংযোজন করা হয়েছে। তবুও সম্পূর্ণরূপে নিরেট নির্ভুল হওয়ার জোর দাবি করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি না। শব্দ ও ভাষাগত প্রচুর ভুল-ভ্রান্তি বিজ্ঞ পাঠকবর্গের চক্ষুগোচরে আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে ভুল গুরুসামান্য যতটুকুই হোক না কেন লেখকের দৃষ্টিগোচর করলে চরম কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ থাকবো। যে কোন কল্যাণকর পরামর্শ দিয়ে দাওয়াতী স্পৃহাকে আরো বর্ধিত করণে সর্বসাধারণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। আল্লাহ্ তা'আলা সবার সহায় হোন।
- লেখক
- লেখক