অন্যান্য হিদায়াত হারানোর নীরব পথ

Joined
Aug 24, 2025
Threads
4
Comments
4
Reactions
57
হিদায়াত এমন এক অমূল্য ধনভাণ্ডার, যা মেহনত, চেষ্টা ও ত্যাগ ছাড়া ধরে রাখা যায় না। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক অপূর্ব নেয়ামত, কিন্তু এই নেয়ামতের কদর না করলে তা ধীরে ধীরে আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। হিদায়াত হারাতে হারাতে মানুষ এমন এক সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়, যেখানে অন্তর হয় শূন্য, অস্থির, বিষণ্ণ, অবসাদগ্রস্ত।

যখন কেউ হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়, তখন তার হৃদয়ে এক প্রশান্তির স্রোত বইতে থাকে। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় যদি সে দেখতে পায়, এই স্রোত যেন ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে আসছে, তখন তা হয়ে দাঁড়ায় এক বেদনাদায়ক বাস্তবতা। হিদায়াত থাকা মানেই এটুকু নয় যে, তা স্থায়ী হয়ে গেছে। বরং একজন মানুষ মৃত্যুর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হিদায়াতের মুখাপেক্ষী থাকে।

আমাদের সমাজে, বিশেষ করে সাধারণ পড়ুয়াদের মাঝে, হিদায়াত হারানোর একটি বড় কারণ হচ্ছে সহশিক্ষা (co-education)। যতই কেউ চোখের হেফাজত করার চেষ্টা করুক না কেন, সহশিক্ষার পরিবেশে বেগানা নারীর দিকে চোখ যাওয়া প্রায় অনিবার্য হয়ে পড়ে। শুরুটা হয় দৈনিক কয়েকবার তাকানোর মাধ্যমে, আর এভাবেই অজান্তেই নফস তাকে ফেতনার দিকে টেনে নিয়ে যায়।

অনেক যুবক আছে যারা পাপ করে, কিন্তু তাদের অন্তর মৃত নয়। তারা উপলব্ধি করে যে তারা ভুল করেছে, এবং আল্লাহর দরবারে ফিরে আসে। তারা তাওবা করে, কান্নাকাটি করে, আবারো হিদায়াতের পথ ধরে হাঁটার চেষ্টা করে। এটি একটি বিরল গুণ — কারণ অনেকেই পাপে নিমজ্জিত হয়ে সে অনুভূতিও হারিয়ে ফেলে। যারা পাপ করেও ফিরে আসে, বুঝতে হয় তাদের অন্তরে দীনের প্রতি এক গভীর মহব্বত রয়েছে।

তবুও প্রশ্ন থেকে যায়: দীনের প্রতি টান থাকার পরও কেন তারা পাপে লিপ্ত হয়? কারণ একটাই — নফসের ধোঁকা। নফস ধীরে ধীরে এমনভাবে একজনকে ফাঁদে ফেলে, যেন সে নিজেই নিজের শত্রুতে পরিণত হয়। বুঝেও সে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। কিন্তু যখন সে পাপ করে, তখন সে অস্থির হয়ে উঠে, অনুশোচনায় ভুগে, এবং আল্লাহর দরবারে ফিরে আসে।

এই অনুশোচনা, এই ফিরে আসার স্পৃহা — হিদায়াতের একটি নিদর্শন। তবে, বারবার ফিরে আসা আর সতর্ক না হওয়া, এটা এক সময় এমন জায়গায় নিয়ে যেতে পারে যেখানে তাওবা করার তাওফিকও চলে যেতে পারে। তাই হিদায়াত ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন মেহনত, পরিবেশ থেকে নিজেকে দূরে রাখা, এবং আল্লাহর নিকট সার্বক্ষণিক দোআ।

"হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে আপনার দীন উপর অবিচল রাখুন।"
(তিরমিযি: ২১৪০)

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
 
হ্যাঁ, জানি। এই সহশিক্ষার পরিবেশে শুধু ছেলেদের না, মেয়েদের অবস্থাও এমন। যারা হিদায়াত পেয়েছে, সেইসব মেয়েদেরকেও এই পরিবেশে নিজের দ্বীন টিকিয়ে রাখতে রোজই প্রায় নিজের নফস - এর সাথে লড়তে হয়।

ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূব, সাব্বিত ক্বালবি ‘আলা দ্বীনিক।
يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ
 
Similar content Most view View more
Back
Top