আহলে কুরআন বা হাদীস অস্বীকারকারীদের উৎপত্তি কখন থেকে? ভারতবর্ষে হাদীস অস্বীকারকারীদের উৎপত্তি কখন থেকে?
ভূমিকা: ইতিহাসে আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভবিষ্যদ্বাণীর একটি বাস্তব চিত্র হলো ভ্রান্ত ফেরকা আহলে কুরআন দাবিদার মুনকিরুল হাদীস।
রাসূল (ﷺ) উক্ত দল সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, ‘জেনে রাখো আমাকে কিতাব (কুরআন) এবং তার সাথে অনুরূপ একটি বস্ত্ত দেয়া হয়েছে। অচিরেই এমন এক সময় আসবে যখন কোন পেটপুরে খাদ্য গ্রহণকারী (প্রাচুর্যবান) ব্যক্তি তার আসনে বসে বলবে, তোমরা শুধু এ কুরআনকেই গ্রহণ কর, তাতে যা হালাল পাবে তা হালাল আর তাতে যা হারাম পাবে তা হারাম মনে কর।’(আবু দাঊদ হা/৪৬০৫ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৬২)।
অন্য আরেক হাদীসে এসেছে, ‘আমি যেন তোমাদের মধ্যে কাউকে এমন অবস্থায় না পাই যে, সে তার সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকবে এবং তার নিকট যখন আমার আদিষ্ট কোন বিষয় অথবা আমার নিষেধ সম্বলিত কোন কিছু (হাদীস) উত্থাপিত হবে তখন সে বলবে, আমি তা জানি না। আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে আমরা যা পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব।’(আবু দাঊদ হা/৪৬০৪ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৬৩)।
রাসূল (ﷺ)-এর উক্ত ভবিষ্যদ্বাণী হিজরী দ্বিতীয় শতকের শেষের দিকে বাস্তবে দেখা দেয়। এ সময় এমন কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটে, যারা সুন্নাতকে অস্বীকার করে। ইমাম শাফেঈ এমন একজন হাদীস অস্বীকারকারী ব্যক্তির সাথে তার মুনাযারার কথা উল্লেখ করেছেন। (কিতাবুল উম্ম ৭/২৮৭-২৯২)।
সেখানে তিনি তার দাবীর অসারতা প্রমাণ করেছেন। অতঃপর দীর্ঘ এগারো শত বছর হাদীস অস্বীকারকারীদের অস্তিত্বের কোন প্রমাণ মিলেনি। বিগত শতাব্দী তথা ত্রয়োদশ হিজরীতে এই ফিৎনার পুনরাবির্ভাব ঘটে মিসর, ইরাকে। (বিস্তারিত দ্রঃ ‘হাদীসের প্রামাণিকতা’ বই)।
ভারতবর্ষে হাদীস অস্বীকারকারীদের উৎপত্তি:
তাওহীদের শহর পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থিত ‘উম্মুল কুরা’ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, খাদিম হুসাইন ইলাহী বাখশ (হাফিযাহুল্লাহ) ‘উম্মুল কুরা’ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স (M.A) করার সময় ‘আহলে কুরআন’ সম্পর্কে গবেষণা করেছিলেন এবং এ সম্পর্কে তিনি فِرْقَةُ أَهْلِ الْقُرْآنِ بِبَاكِسْتَانِ وَمَوْقِفُ اْلِإسْلَامِ مِنْهَا শীর্ষক একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ (Thesis) রচনা করেছিলেন।
পরবর্তীতে তিনি তাঁর প্রবন্ধকেই গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি ‘আহলে কুরআনের উৎপত্তি’ নামক শিরোনামে বলেছেন, ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়কালে ১৭০০ শতকের শেষের দিক থেকেই হাদীস সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অন্তরে সন্দেহ, দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও সংশয় তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। ভারতবর্ষের পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে ইসলাম ধর্মের নামে অত্যাধিক জঘন্য, বিপদগামী, আদর্শচ্যুত, দিশেহারা, ধ্বংসাত্মক ও মারাত্মক দু’টি দল উদ্ভাবিত ও অভ্যুদিত হয়েছে। যার একটির নাম ‘ক্বাদিয়ানী’, আর অপরটির নাম ‘আহলে কুরআন’।
১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম অভিশপ্ত গোলাম আহমাদ ক্বাদিয়ানী নিজেকে নাবী বলে দাবী করার মাধ্যমে ‘ক্বাদিয়ানী’ সম্প্রদায় শিরোনামে আসে। আর ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে একই প্রদেশ থেকে হাদীস অস্বীকারকারী আব্দুল্লাহ চড়কলাবীর প্ররোচনায় ‘আহলে কুরআন’ নামক অপর একটি ভ্রান্ত দলের উৎপত্তি হয়। যে সাধারণ মানুষদের সুন্নাতকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে।
শুধু কুরআন মানার প্রতি আহ্বান করতে থাকে এবং সে ‘লাহোরের জিনিয়ান-ওয়ালী’ নামক একটি মাসজিদে আশ্রয় গ্রহণ করে। শুরুর দিকে মূলত দু’জন ব্যক্তি-ই এই ভ্রান্ত মতবাদের নেতৃত্ব দিয়েছিল। একজন পূর্ব ভারতের বিহার রাজ্যের ‘মুহিব্বুল হাক্ব আজীম আবাদী’, অপরজন পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে পলায়নকারী ‘লাহোরের আব্দুল্লাহ চড়কলাবী।’(আল-কুরআনিয়্যীন, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯-২১)।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, এরা দু’জনেই কিন্তু সাইয়্যিদ আহমাদ খাঁন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। ‘ছাওতু আলীকারাহ বা আলীগড়ের ডাক’ নামক আন্দোলনের সময়কালে তিনি বলেছিলেন, ‘দ্বীন মানার জন্য শুধু কুরআনকেই যথেষ্ট মনে করতে হবে এবং হাদীসকে শারঈ দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যাবে না’। এই আহ্বান ‘মুহিব্বুল হাক্ব আযীমাবাদী’ ও আব্দুল্লাহ চড়কলাবীকে’ গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।’(আল-কুরআনিয়্যীন ১ম খণ্ড, পৃ. ২২)
বর্তমানে বাংলাদেশেও এই ভ্রষ্ট আক্বীদার কিছু ব্যক্তির আবির্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা থেকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
বর্তমানে ‘আহলে কুরআন’ নামক দলটি চারটি উপদলে বিভক্ত। যথা:
ইসলামের নামে যে সমস্ত মাযহাব, দল ও মতবাদের অভ্যুদয় ঘটেছে তাদের স্বধর্মভ্রষ্টতা, পদস্খলিতা ও অধঃপতনের বিষয়টি পরিস্ফুটিত করার সর্বাধিক সহজবোধ্য ও সহজলব্ধ উপায় হলো তার উৎপত্তিকাল সম্পর্কে পরিজ্ঞাত বা তথ্যাভিজ্ঞ হওয়া।
কেননা হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর(রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন- বানী ইসরাঈল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাতও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন একজোড়া জুতার একটি আরেকটির মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উম্মাতের মধ্যেও কেউ তাই করবে। আর বানী ইসরাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল।
আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সব দলগুলোই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(ﷺ)! সে দল কোনটি? তিনি বললেন,আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত। (তিরমিযী, হা/২৬৪১; মিশকাত, তাহক্বীক্ব ছানী, হা/১৬৯, ১৭১; সনদ হাসান, সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৩৪৮; সহীহুল জামি, হা/৫৩৪৩)।
উপরোক্ত হাদীসের আলোকে একথা দিবালোকের ন্যায় প্রতীয়মান হয় যে, যারাই রাসূলুল্লাহ(ﷺ) এবং তাঁর সাহাবীগণের আদর্শকে আঁকড়ে ধরবে, বিবিধ দলসমূহের মধ্য হতে শুধু তারাই প্রকৃত ইসলামের ও হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আর তারাই সফলতা, সার্থকতা এবং পরিত্রাণ পাবে। (মাসিক আল ইখলাস থেকে সংকলিত আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
হাদীস অস্বীকারকারী কাফের ধারাবাহিক ১০ পর্বের আজ চতুর্থ পর্ব।
উপস্থাপনায়, জুয়েল মাহমুদ সালাফি
ভূমিকা: ইতিহাসে আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভবিষ্যদ্বাণীর একটি বাস্তব চিত্র হলো ভ্রান্ত ফেরকা আহলে কুরআন দাবিদার মুনকিরুল হাদীস।
রাসূল (ﷺ) উক্ত দল সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, ‘জেনে রাখো আমাকে কিতাব (কুরআন) এবং তার সাথে অনুরূপ একটি বস্ত্ত দেয়া হয়েছে। অচিরেই এমন এক সময় আসবে যখন কোন পেটপুরে খাদ্য গ্রহণকারী (প্রাচুর্যবান) ব্যক্তি তার আসনে বসে বলবে, তোমরা শুধু এ কুরআনকেই গ্রহণ কর, তাতে যা হালাল পাবে তা হালাল আর তাতে যা হারাম পাবে তা হারাম মনে কর।’(আবু দাঊদ হা/৪৬০৫ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৬২)।
অন্য আরেক হাদীসে এসেছে, ‘আমি যেন তোমাদের মধ্যে কাউকে এমন অবস্থায় না পাই যে, সে তার সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসে থাকবে এবং তার নিকট যখন আমার আদিষ্ট কোন বিষয় অথবা আমার নিষেধ সম্বলিত কোন কিছু (হাদীস) উত্থাপিত হবে তখন সে বলবে, আমি তা জানি না। আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে আমরা যা পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব।’(আবু দাঊদ হা/৪৬০৪ প্রভৃতি; মিশকাত হা/১৬৩)।
রাসূল (ﷺ)-এর উক্ত ভবিষ্যদ্বাণী হিজরী দ্বিতীয় শতকের শেষের দিকে বাস্তবে দেখা দেয়। এ সময় এমন কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটে, যারা সুন্নাতকে অস্বীকার করে। ইমাম শাফেঈ এমন একজন হাদীস অস্বীকারকারী ব্যক্তির সাথে তার মুনাযারার কথা উল্লেখ করেছেন। (কিতাবুল উম্ম ৭/২৮৭-২৯২)।
সেখানে তিনি তার দাবীর অসারতা প্রমাণ করেছেন। অতঃপর দীর্ঘ এগারো শত বছর হাদীস অস্বীকারকারীদের অস্তিত্বের কোন প্রমাণ মিলেনি। বিগত শতাব্দী তথা ত্রয়োদশ হিজরীতে এই ফিৎনার পুনরাবির্ভাব ঘটে মিসর, ইরাকে। (বিস্তারিত দ্রঃ ‘হাদীসের প্রামাণিকতা’ বই)।
ভারতবর্ষে হাদীস অস্বীকারকারীদের উৎপত্তি:
তাওহীদের শহর পবিত্র মক্কা নগরীতে অবস্থিত ‘উম্মুল কুরা’ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফাদ্বীলাতুশ শাইখ, খাদিম হুসাইন ইলাহী বাখশ (হাফিযাহুল্লাহ) ‘উম্মুল কুরা’ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স (M.A) করার সময় ‘আহলে কুরআন’ সম্পর্কে গবেষণা করেছিলেন এবং এ সম্পর্কে তিনি فِرْقَةُ أَهْلِ الْقُرْآنِ بِبَاكِسْتَانِ وَمَوْقِفُ اْلِإسْلَامِ مِنْهَا শীর্ষক একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ (Thesis) রচনা করেছিলেন।
পরবর্তীতে তিনি তাঁর প্রবন্ধকেই গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি ‘আহলে কুরআনের উৎপত্তি’ নামক শিরোনামে বলেছেন, ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়কালে ১৭০০ শতকের শেষের দিক থেকেই হাদীস সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অন্তরে সন্দেহ, দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও সংশয় তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। ভারতবর্ষের পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে ইসলাম ধর্মের নামে অত্যাধিক জঘন্য, বিপদগামী, আদর্শচ্যুত, দিশেহারা, ধ্বংসাত্মক ও মারাত্মক দু’টি দল উদ্ভাবিত ও অভ্যুদিত হয়েছে। যার একটির নাম ‘ক্বাদিয়ানী’, আর অপরটির নাম ‘আহলে কুরআন’।
১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম অভিশপ্ত গোলাম আহমাদ ক্বাদিয়ানী নিজেকে নাবী বলে দাবী করার মাধ্যমে ‘ক্বাদিয়ানী’ সম্প্রদায় শিরোনামে আসে। আর ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে একই প্রদেশ থেকে হাদীস অস্বীকারকারী আব্দুল্লাহ চড়কলাবীর প্ররোচনায় ‘আহলে কুরআন’ নামক অপর একটি ভ্রান্ত দলের উৎপত্তি হয়। যে সাধারণ মানুষদের সুন্নাতকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে।
শুধু কুরআন মানার প্রতি আহ্বান করতে থাকে এবং সে ‘লাহোরের জিনিয়ান-ওয়ালী’ নামক একটি মাসজিদে আশ্রয় গ্রহণ করে। শুরুর দিকে মূলত দু’জন ব্যক্তি-ই এই ভ্রান্ত মতবাদের নেতৃত্ব দিয়েছিল। একজন পূর্ব ভারতের বিহার রাজ্যের ‘মুহিব্বুল হাক্ব আজীম আবাদী’, অপরজন পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে পলায়নকারী ‘লাহোরের আব্দুল্লাহ চড়কলাবী।’(আল-কুরআনিয়্যীন, ১ম খণ্ড, পৃ. ১৯-২১)।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, এরা দু’জনেই কিন্তু সাইয়্যিদ আহমাদ খাঁন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। ‘ছাওতু আলীকারাহ বা আলীগড়ের ডাক’ নামক আন্দোলনের সময়কালে তিনি বলেছিলেন, ‘দ্বীন মানার জন্য শুধু কুরআনকেই যথেষ্ট মনে করতে হবে এবং হাদীসকে শারঈ দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যাবে না’। এই আহ্বান ‘মুহিব্বুল হাক্ব আযীমাবাদী’ ও আব্দুল্লাহ চড়কলাবীকে’ গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।’(আল-কুরআনিয়্যীন ১ম খণ্ড, পৃ. ২২)
বর্তমানে বাংলাদেশেও এই ভ্রষ্ট আক্বীদার কিছু ব্যক্তির আবির্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা থেকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
বর্তমানে ‘আহলে কুরআন’ নামক দলটি চারটি উপদলে বিভক্ত। যথা:
(১) উম্মাতু মুসলিম আহলুয-যিকর ওয়াল কুরআন।
(২) উম্মাতুন মুসলিমাতুন
৩) তুলূঊ ইসলাম এবং
(৪) তাহরীকু তা‘মীর ইসলাম।(আল-কুরআনিয়্যীন ১ম খণ্ড, পৃ. ৫৭-৬৪)।
ইসলামের নামে যে সমস্ত মাযহাব, দল ও মতবাদের অভ্যুদয় ঘটেছে তাদের স্বধর্মভ্রষ্টতা, পদস্খলিতা ও অধঃপতনের বিষয়টি পরিস্ফুটিত করার সর্বাধিক সহজবোধ্য ও সহজলব্ধ উপায় হলো তার উৎপত্তিকাল সম্পর্কে পরিজ্ঞাত বা তথ্যাভিজ্ঞ হওয়া।
কেননা হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর(রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন- বানী ইসরাঈল যে অবস্থায় পতিত হয়েছিল, নিঃসন্দেহে আমার উম্মাতও সেই অবস্থার সম্মুখীন হবে, যেমন একজোড়া জুতার একটি আরেকটির মতো হয়ে থাকে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রকাশ্যে তার মায়ের সাথে ব্যভিচার করে থাকে, তবে আমার উম্মাতের মধ্যেও কেউ তাই করবে। আর বানী ইসরাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল।
আমার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সব দলগুলোই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল(ﷺ)! সে দল কোনটি? তিনি বললেন,আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত। (তিরমিযী, হা/২৬৪১; মিশকাত, তাহক্বীক্ব ছানী, হা/১৬৯, ১৭১; সনদ হাসান, সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৩৪৮; সহীহুল জামি, হা/৫৩৪৩)।
উপরোক্ত হাদীসের আলোকে একথা দিবালোকের ন্যায় প্রতীয়মান হয় যে, যারাই রাসূলুল্লাহ(ﷺ) এবং তাঁর সাহাবীগণের আদর্শকে আঁকড়ে ধরবে, বিবিধ দলসমূহের মধ্য হতে শুধু তারাই প্রকৃত ইসলামের ও হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আর তারাই সফলতা, সার্থকতা এবং পরিত্রাণ পাবে। (মাসিক আল ইখলাস থেকে সংকলিত আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
হাদীস অস্বীকারকারী কাফের ধারাবাহিক ১০ পর্বের আজ চতুর্থ পর্ব।
উপস্থাপনায়, জুয়েল মাহমুদ সালাফি
Attachments