‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

সূরা আন-নাজম ১৯, ২০ আয়াতে উল্লেখিত নামগুলো কিসের এবং এ নামকরণের উদ্দেশ্য কি? আয়াতের ব্যাখ্যা কি?

মহামহিয়ান আল্লাহ বলেন:

أَفَرَءَيۡتُمُ ٱللَّٰتَ وَٱلۡعُزَّىٰ ١٩ وَمَنَوٰةَ ٱلثَّالِثَةَ ٱلۡأُخۡرَىٰٓ ٢٠ [النجم: ١٩، ٢٠]​

‘‘(১৯) তোমরা কি ভেবে দেখেছ ‘‘লাত ও উযযার অবস্থা সম্বন্ধে? (২০) এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে?’’ (সূরা আন-নাজম) এ আয়াতে উল্লেখিত নামগুলো কিসের এবং এ নামকরণের উদ্দেশ্য কি? আয়াতের ব্যাখ্যা কি?

উত্তর: লাত, উযযা এবং মানাত এ তিনটি জাহেলী (অজ্ঞতা, অন্ধকার) যুগের মুশরিকদের দেব-দেবীর নাম। মুশরিকরা এগুলোর ইবাদাত উপাসনা করতো। ‘‘আফরাআইতুম’’ অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ইলাহ বানিয়ে ইবাদাত করছো তাদের দ্বারা কারো উপকার বা অপকার হতে দেখেছো? অতঃপর ঐ সব বস্তুকে মহীয়ান গরিয়ান আল্লাহর শরীক বানানো যেতে পারে কি?

‘আল-লাত’ শব্দের ‘তা’ তাশদীদ বিহিন পড়লে অর্থ হবে, তৎকালিন তায়েফে অবস্থিত বড় একটি পাথর। এ পাথর কেন্দ্রিক ঘর তৈরী করে তার উপরে আবার কাপড়ের পর্দা ঝুলানো হয়। এ স্থানকে সাকিফ গোত্র সম্মান করত। (মক্কা বিজয়ের পর) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ স্থানে মুগিরা ইবনে শু‘বা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রেরণ করেন, মুগিরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ঐ পুজা মন্ডুপ ভেঙ্গে চুরমার করে আগুন জ্বালিয়ে দেন। মুশরিক সম্প্রদায় আল-ইলাহ হতে আল-লাত শব্দ উদ্ভাবন করেছে। পক্ষান্তরে ‘আল-লাত’ শব্দের ‘তা’ বর্ণে তাশদীদ দিয়ে পাঠ করলে অর্থ হবে একজন ভালো লোকের নাম। ঐ ব্যক্তি হাজীদের ছাতুতে পানি মিশিয়ে দিত বা হাজীদেরকে সাহায্য করত। সে মারা গেলে লোকজন তার কবরের কাছে জড়ো হয়ে বাড়াবাড়ির এক পর্যায়ে মৃত ব্যক্তির পূজা-বন্দেগী শুরু করে দেয়। আলোচিত ব্যাখ্যা দুটির মধ্যে কোনো বৈপরিত্ব নেই।

‘আল-উয্যা’ হচ্ছে, মক্কা ও তায়েফের মধ্যস্থিত ‘নাখলা’ উপত্যকার একটি গাছ। কুরাইশরা এটাকে পূজা-ইবাদাত উপাসনা এবং তাজিম করত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন এটাকে ধ্বংস করার জন্য খালিদ ইবন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহুকে প্রেরণ করেন এবং তা ধ্বংস করা হয়। উয্যা শব্দটি আরবী ‘ঈযযা’ বা সম্মান-ইযযত ধাতু হতে গৃহীত।

আর ‘মানাত’ হচ্ছে মক্কা ও মদিনার মধ্যস্থিত একটি প্রকাণ্ড পাথর। এটাকে আওস ও খাযরাজ গোত্রদ্বয় ভক্তি সম্মান-তাজিম করত। মানাত শব্দটি আল-মান্নান বা ‘সর্বশ্রেষ্ঠ হিতকারী’ যা আল্লাহর নাম হতে গ্রহণ করা হয়েছে। কথিত আছে যে ঐ পাথরের কাছে জাহেলী যুগের লোকেরা বরকতের জন্য জীব-জন্তুর রক্ত প্রবাহিত (যবাই) করে মন বাসনা পূরণের আশা করতো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বৎসর ঐ স্থানে আলী ইবনে আবী তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রেরণ করেন, অতঃপর তিনি তা ধ্বংস করে দেন[1]


[1] জামে আল-ফরিদ পৃ:৫২।

 

Share this page