‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

সাহাবী আনাস ইবনে মালিকের সংক্ষিপ্ত জীবনী

প্রকৃত নাম : আনাস। কুনিয়াত বা উপনাম আবু হামযাহ। পিতার নাম : মালেক ইবনু নযর। মাতার নাম : উম্মু সুলাইম বিনতে মিলহান।

তিনি নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর হিজরতের দশ বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। এতে প্রতীয়মান হয় যে, নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মদীনায় হিজরত করার সময় আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু) দশ বছর বয়সের বালক।

রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর খেদমত : আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু) একজন প্রসিদ্ধ সাহাবী ও রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অন্যতম খাদেম ছিলেন। দশ বছরের বালক অবস্থায় উম্মু সুলাইম আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু)- কে রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর খেদমতে রেখে যান। তিনি অত্যন্ত সহনশীলতা ও ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে একটানা দশ এর খেদমতে অতিবাহিত করেন। তাঁর বর্ণনা মতে, রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোনো দিন তাঁকে কোনো কাজের আদেশ করেননি। তাঁর নায়ের অনুরোধে অনুরোধে রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর জন্য এ দুআ করেন-

❝হে আল্লাহ! আপনি তাঁর সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বৃদ্ধি করে দিন এবং তাকে যা কিছু প্রদান করেন তাতে বরকত দান করুন।❞

সন্তান-সন্ততি : তাঁর ছেলে-মেয়ে ও নাতী- নাতনীর সংখ্যা ছিল ১০০ জন। কারো মতে, ১০ জন। তন্মধ্যে ২ জন কন্যা সন্তান ছিল। প্রসিদ্ধ তথ্যমতে তাঁর সন্তান সংখ্যা ছিল ১২০-এরও উর্দ্ধে।

যুদ্ধে অংশগ্রহণ : বয়সে ছোট থাকার কারণে আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু) বদর ও উহুদ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে পরবর্তী সকল যুদ্ধে তিনি রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

সরকারি দায়িত্ব পালন : আবু বকর (রাদিআল্লাহু আনহু) এর খেলাফতকালে তাঁকে বাহরাইনের গভর্নর নিযুক্ত করা হয় এবং উমার (রাদিআল্লাহু আনহু) এর খেলাফতকলে বসরা নগরীতে ফিকহের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

তাঁর গুণাবলী : সাহাবীদের মাঝে তিনি জ্ঞানী, গুণী ও একজন ফকীহ হিসেবে সুপ্রসিদ্ধ ছিলেন। তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম বুখারী স্বীয় ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু) এর ইন্তেকালের পর মাসরুক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) মন্তব্য করেছেন, আজ অর্ধেক জ্ঞান চলে গিয়েছে। তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জবাবে বলেন : তিনি একজন সুবিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। যখন আমরা হাদীসের ব্যাপারে মতানৈক্য করতাম, তখন আমরা বলতাম, চল আমরা ঐ ব্যক্তির কাছে যাই, যিনি মহানবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে হাদীস শ্রবণ করেছেন।

হাদীস শাস্ত্রে তাঁর অবদান : তিনি অধিক হাদীস বর্ণনাকারীদের একজন। রাসুল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ থেকে তিনি সর্বমোট ২২৮৬টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে ইমাম বুখারী ও মুসলিম সম্মিলিতভাবে ১৬৮টি, ইমাম বুখারী এককভাবে ৮৩টি এবং ইমাম মুসলিম এককভাবে ৯১টি হাদীস নিজ নিজ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। আনাস (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে অসংখ্য তাবেয়ী হাদীস বর্ণনা করেছেন। হাসান বসরী, ইবনু সিরীন, হুমাইদ ও সাবেত বুনানী তাদের মধ্যে অন্যতম।

ইন্তেকাল : উমাইয়া খলীফা আব্দুল মালেক ইবনু মারওয়ানের খিলাফতকালে ১০৩ বছর বয়সে ৯৩ হিজরী সালে বসরা নগরীতে তিনি ইন্তেকাল করেন।

— মাসিক তর্জুমানুল হাদীস, নভেম্বর ২০২৪
 
Last edited:

Share this page