সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Golam Rabby

বিবাহ ও দাম্পত্য সাময়িকভাবে বিবাহ নিষিদ্ধ নারীগণ

Golam Rabby

Knowledge Sharer

ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
LV
12
 
Awards
22
Credit
3,132
যেসকল নারী সাময়িকভাবে বিবাহ নিষিদ্ধ, তারা দুই ভাগে বিভক্ত:

প্রথম ভাগ: একত্রিত (সহবাস) হওয়ার কারণে নিষিদ্ধ;
দ্বিতীয় ভাগ: অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার কারণে নিষিদ্ধ।

প্রথম ভাগ: একত্রিত (সহবাস) হওয়ার কারণে যারা নিষিদ্ধ:
১. দুই বোন একত্র হওয়া; আপন বোন হোক অথবা দুধ বোন। দুই জনের আকদে নিকাহ একত্রে হোক অথবা ভিন্ন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন:

“তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ একত্রে দুই বোনকে (বিবাহ বন্ধনে) রাখা” (সুরা নিসা : ২৩)

২. কোনো মহিলা এবং তার ফুফু অথবা খালাকে একত্র করা। কোনো মহিলা আর তার ভাই অথবা বোনের মেয়ে অথবা ছেলের বা মেয়ের মেয়েকে একত্র করা।

মুলনীতি: এমন দুইজন নারী একত্র হওয়া নিষিদ্ধ, যাদের একজনকে পুরুষ ও অন্যজনকে নারী ধরা হলে একজন আরেকজনকে বিবাহ করা বৈধ হবে না।
এর দলীল আবু হুরায়রা (রাদি.) এর হাদীস। নিশ্চয়ই আল্লাহর রসুল (সাঃ) বলেন:

“কেউ যেন ফুফু ও তার ভাতিজিকে এবং খালা ও তার ভাগনিকে একত্রে বিয়ে না করে"(বুখারী, হা. ৫১০৯; মুসলিম, হা. ১৪০৮)
আবু হুরায়রা (রাদিঃ) আরেকটি হাদীস: তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো নারীকে তার ফুফুর সাথে এবং কোনো ফুফুকে তার ভাতিজীর সাথে একত্রে বিয়ে করা যাবে না। অনুরূপভাবে কোনো নারী ও তার খালা এবং কোনো খালা ও তার ভাগ্নীকে একত্রে বিয়ে কারা যাবে না। অনুরূপ বড় (বোন)-কে ছোট (বোনের) সাথে এবং ছোটকে বড় (বোনোর) সাথেও একত্রে বিয়ে করা যাবে না। (আবু দাউদ, হা. ২০৬৫; তিরমিজি, হা. ১১২৬; সহীহ)

আলেমগণও এই নিষিদ্ধ হওয়ার উপর একমত হয়েছেন।

দ্বিতীয় ভাগ:   অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার কারণে নিষিদ্ধ।
১. অন্যের ইদ্দত পালন করছে এমন নারীকে বিবাহ করা হারাম। মহান আল্লাহ বলেছেন, "নির্দিষ্ট কাল (ইদ্দত) পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ বন্ধনের সংকল্প করো না" (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৫)

২. যে নিজের স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে তার জন্য এই স্ত্রীকে বিবাহ করা হারাম। যতক্ষণ না নিকাহে সহীর মাধ্যমে অন্য কোনো স্বামী এই মহিলার সাথে মিলন করবে। কারণ মহান আল্লাহ বলেন, "অতঃপর উক্ত স্ত্রীকে যদি সে (তৃতীয়) তালাক দেয়, তবে যে পর্যন্ত না ঐ স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিবাহ করবে, তার পক্ষে সে বৈধ হবে না" (সূরা বাকারাহ, আয়াত ২৩০)

৩. ইহরাম বাঁধা নারীকে বিবাহ করা হারাম। যতক্ষণ না সে তার ইহরাম থেকে হালাল হচ্ছে। উসমান (রাদিঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসের ভিত্তিতে। নিশ্চয়ই আল্লাহ বলেন, "মুহরিম ব্যক্তি বিবাহ করবে না, অন্যকে বিবাহ করাবে না এবং বিবাহের প্রস্তাব দিবে না" (মুসলিম, হা. ১৪০৯)

৪. কাফেরের জন্য মুসলিম নারীদের বিবাহ করা হারাম। আল্লাহ বলেছেন, "তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে" (সূরা বাকারাহ, আয়াত ২২১)

৫. মুসলিম পুরুষের জন্য কাফের মহিলাকে বিবাহ করা হারাম। কিন্তু সে কিতাবী মহিলাকে বিবাহ করতে পারবে। আল্লাহ বলেছেন, "তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে " (সূরা বাকারাহ, আয়াত ২২১)
আরও বলেছেন, "তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে, তাদের সচ্চরিত্রা নারীদেরকে (বিবাহ করো) বৈধ" (সূরা মায়িদাহ, আয়াত ৫)

৬. কোনো মুসলিম স্বাধীন পুরুষের জন্য মুসলিম দাসীকে বিবাহ করা হারাম। তবে অবস্থা যদি এমন হশ যে, সে যেনায় জড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে অপর দিকে কোনো স্বাধীন মহিলার মোহর অথবা দাসী কেনার টাকা তার কাছে নেই। সেই অবস্থায় মুসলিম দাসীকে বিবাহ করা তার জন্য বৈধ আছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, "আর তোমাদের মধ্যে কারো স্বাধীনা বিশ্বাসী (মুমিন) নারীকে বিবাহ করার সামর্থ্য না থাকলে, তোমরা তোমাদের অধিকারভুক্ত বিশ্বাসী (মুমিন) যুবতী বিবাহ করবে। আর আল্লাহ তোমাদের বিশ্বাস (ঈমান) সম্বন্ধে খুব ভালোরূপে পরিজ্ঞাত। তোমরা একে অপরে সমান। সুতরাং তারা (প্রকাশ্যে) ব্যভিচারিণী অথবা (গোপনে) উপপতি গ্রহণকারিণী না হয়ে সচ্চরিত্রা হলে, তাদের মালিকের অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিবাহ কর এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদেরকে তাদের মোহর প্রদান কর। অতঃপর বিবাহিতা হয়ে যদি তারা ব্যভিচার করে, তাহলে তাদের শাস্তি (অবিবাহিতা) স্বাধীন নারীর অর্ধেক। এ (দাসী-বিবাহের বিধান) তাদের জন্য, যারা তোমাদের মধ্যে (কষ্ট ও) ব্যভিচারকে ভয় করে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তাহলে তাতে তোমাদের মঙ্গল রয়েছে। আল্লাহ মহা ক্ষমাশীল পরম দয়ালু" (সূরা নিসা, আয়াত ২৫)

৭. মুসলিম ক্রীতদাসের জন্য তার মহিলা মনিবকে বিবাহ করা হারাম। কারণ এ ব্যাপারে আলেমগণ একমত হয়েছেন। আরেকটি কারণ হলো, স্ত্রী মনিব তার স্বামী গোলাম হলে তাদের মাঝে অনেক বিরোধিতা দেখা দিবে।

৮. মালিকের নিজের দাসীকে বিবাহ করা হারাম। কারণ মালিকানা চুক্তি বিবাহ চুক্তি থেকে বেশি শক্তিশালী।

উৎসঃ আল ফিকহুল মুয়াসসার, নবম অধ্যায়- বিবাহ ও তালাক (আত তাওহীদ প্রকাশনী)
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,350Threads
Total Messages
17,210Comments
Total Members
3,679Members
Latest Messages
Shajib AuzidLatest member
Top