সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর রোজা কেউ রাখতে সক্ষম না হলে ইসলামের দৃষ্টিতে তার করণীয় কি?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,146
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,471
Credits
24,212
✪ রামাযানে অসুস্থ, মুসাফির ও অতিবৃদ্ধ বা মৃত্যপথযাত্রীর রোযার ক্ষেত্রে করণীয় ✪ টাকা দিয়ে ফিদিয়া দেয়ার বিধান প্রশ্ন: কোনও ব্যক্তি যদি রমজান মাসে রোজা রাখতে সক্ষম না হয় তাহলে তার ফিদিয়া হিসেবে ৫০০ টাকা গরিব-মিসকিনকে দান করলেই আদায় হয়ে যাবে- একথাটা কতটুকু সঠিক? বা রোজা কেউ রাখতে সক্ষম না হলে ইসলামের দৃষ্টিতে তার করণীয় কি? উত্তর: ❑ সাময়িক রোগী ও মুসাফির ব্যক্তি রোযা রাখতে না পারলে করণীয়: কোনো ব্যক্তি যদি রমযানুল মোবারকে অসুস্থ হয়ে যায় অথবা সফরে থাকে তাহলে তার জন্যে কী করণীয় আর কেউ যদি রমজানে রোযা রাখতে মোটেও সক্ষম না হয় সে ব্যাপারে ইসলাম কী বলেছে এর উত্তর আমরা সুরা বাকারার ১৮৪ নাম্বার আয়াতে পাই। আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, ٍ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ “কোনো ব্যক্তি যদি অসুস্থ থাকে অথবা সফরে থাকে, তার পক্ষে অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ করে নিতে হবে। অর্থাৎ যে কয়দিন অসুস্থ থাকবে, অসুস্থ থাকার কারণে রোজা রাখতে সক্ষম হয়নি অথবা সফরে থাকার কারণে রোজা ভেঙে ফেলেছে তার জন্যে করণীয় হল, রমজানের পরে আগামী রমজান আসার আগ পর্যন্ত যে কোনো সময় সেই রোযাগুলো কাযা করে নেয়া। ❑ অতিবৃদ্ধ, জটিল রোগে আক্রান্ত বা মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তি যদি রোযা রাখতে সক্ষম না হয় তাহলে করণীয়: উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলছেন: وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ “আর এটি (রোযা রাখা) যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট দায়ক হয়, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্যদান করবে।” এই আয়াতের তাফসীর হল, কোনো ব্যক্তি যদি অতিরিক্ত বয়স হওয়ার কারণে কারণে অথবা শয্যাশায়ী রোগে আক্রান্ত হয়ে যাওয়ার কারণে রোজা রাখতে সক্ষম না হয় অর্থাৎ এমনভাবে অসুস্থ হয়েছে যে, এই রোগ থেকে আর মুক্তি পাওয়ার আর সম্ভাবনা দেখা যায় না বা প্রায় মৃত্যু পথযাত্রী। তাহলে এ ধরণের লোকের ক্ষেত্রে ফিদিয়া দিতে হবে। আর তা হল, একটা রোযার বিনিময়ে একজন মিসকিনকে খাদ্যদ্রব্য প্রদান। কেননা অত্র আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন: فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ “একজন অসহায় মানুষকে খাবার ফিদিয়া দিবে।” ❑ খাবার খাওয়ানো বা খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ফিদিয়া দেয়ার পরিমান ও পদ্ধতি: এ মর্মে সম্মানিত মুফাসসির ও ফকীহগণ উল্লেখ করেছেন যে, প্রতিটি রোযার বিনিময়ে একজন গরিব মানুষকে একবেলা পেটভরে খাবার খাওয়াতে হবে অথবা তাকে খাদ্যদ্রব্য দান করতে হবে। খাদ্যদ্রব্য প্রদানের নিয়ম হল, প্রত্যেক সমাজের প্রধান খাবার প্রায় অর্ধ সা’ তথা সোয়া/দেড় কিলোগ্রাম পরিমান প্রদান করা। সুতরাং কোনো ব্যক্তি যদি একমাস রোযা রাখতে না পারে মৃত্যু পথযাত্রী হওয়ার কারণে অথবা অতিরিক্ত বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে অথবা এমন রোগাক্রান্ত হওয়ার কারণে যে রোগ থেকে সুস্থ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই তাহলে প্রতিটি রোযার বিনিময়ে একজন গরিব-অসহায় মানুষকে একবেলা পেটপুরে তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়াবে অথবা সোয়া/দেড় কিলো পরিমাণ চাল (যেটা আমাদের দেশের প্রধান খাদ্রদ্রব্য) দান করবে। তাহলেই যথেষ্ট হবে ইনশা আল্লাহ। ❑ টাকা দিয়ে ফিদিয়া দেয়া: যেমনটি আপনি যেমনটি প্রশ্ন করেছেন যে, ৫০০টাকা দিলে ফিদিয়া আদায় হবে কিনা? আমরা বলব, যেহেতু কুরআনে কারীমে আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা طَعَام বলেছেন। طَعَام মানে খাবার বা খাদ্যদ্রব্য। সুতরাং খাবার খাওয়ানো বা খাদ্যদ্রব্য দান করা উচিৎ। এর পরিবর্ততে টাকা-পয়সা, পোশাক বা আসবাব-সামগ্রী কিনে দেয়া ঠিক হবে না। সুতরাং যারা বলে যে ৫০০ টাকা দিলেই ফিদিয়া আদায় হয়ে যাবে তাদের কথা সঠিক নয়। সঠিক কথা হল, প্রতিটি রোযার বিনিময়ে একজন মিসকিনকে একবেলার খাবার দিতে হবে। আর তা যদি আমরা সোয়া/দেড় কিলোগ্রাম চউল দেই (যেমনটি সম্মানিত ফকীহগণ উল্লেখ করেছেন)তাহলেও ইন শা আল্লাহ যথেষ্ট হবে। অবশ্য যদি কেউ ফিদিয়া হিসেবে টাকা প্রাদান করে কিন্তু সেই টাকা দিয়ে গরীব-মিসকিনদেরকে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে দেয়া হয় তাহলে ইনশাআল্লাহ তাতেও অসুবিধা নেই। আল্লাহু আলাম। ●●●●●●●●●●● উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলিল লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, KSA দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, KSA
 
Top