প্রবন্ধ রাগ দমন করা ও চুপ থাকার ফযীলত ও রাগান্বিত হলে করণীয়

Golam RabbyVerified member

Knowledge Sharer
ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Jan 3, 2023
Threads
658
Comments
802
Reactions
7,031
'যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন'। (সূরা আলে ইমরান : ১৩৪)

আবূ হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী করীম (সা:) কে বললেন, আমাকে উপদেশ দিন। নবী করীম (সা:) বললেন, তুমি রাগ করো না। সে কয়েকবার একই কথা
জিজ্ঞেস করলে নবী করীম (সা:) প্রত্যেকবার একই উত্তর দিলেন, তুমি রাগ কর না। [সহীহ বুখারী, হা. ৬১১৬]

হুমাইদ ইবনু আব্দুর রহমান নবী করীম (সা:) এর ছাহাবীদের মধ্যকার একজন ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন, একজন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা:) কে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সা:) আমাকে ওছিয়ত করুন? তিনি (সা:) বললেন, তুমি রাগ করবে না। রাবী বলেন, লোকটি বলল, নবী (সা:) এর কথা শুনে আমি চিন্তা করতে লাগলাম, তাহলে রাগই সকল ধরণের মন্দকে একত্রিত করে। [মুসনাদে আহমাদ, হা. ২৩১৭১; সহীহ]

আব্দুল্লাহ ইবনু 'আমর (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা:) কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জিনিসে আমাকে আল্লাহর ক্রোধ থেকে রক্ষা করবে? তিনি বললেন, রাগ করবে না। [মুসনাদে আহমাদ, হা. ৬৬৩৫; ছহীহ লি-গাইরহী]

আবূ দারদা (রা:) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা:) কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা:) আমাকে এমন আমলের কথা শিখিয়ে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন, তুমি রাগ করবে না, তাহলেই তোমার জন্য জান্নাত। [ত্বাবারাণী, আল-মু'জামুল আওসাত্ব, হা.২৩৫৩; ছহীহ লি-গাইরিহী, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা.২৭৪৯]

আবূ হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা:) বলেছেন, ঐ ব্যক্তি শক্তিশালী নয়, যে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করতে পারে। বরং সে ব্যক্তিই প্রকৃত শক্তিশালী, যে ব্যক্তি রাগের
সময় নিজেকে সংযত করে রাখতে পারে। [ছহীহ বুখারী, হা.৬১১৪; ছহীহ মুসলিম, হা.২৬০৯] অন্য বর্ণনায় এসেছে,

‘ঐ ব্যক্তি শক্তিশালী নয়, যে মানুষের উপর বিজয়ী হয়। বরং সে ব্যক্তিই প্রকৃত শক্তিশালী, যে ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তির উপর বিজয়ী হয়'। [সহীহ ইবনু হিব্বান, হা. ৭১৭; সহীহ আত তারগীব, হা. ২৭৫০]

ইবনু ওমর (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বান্দার ক্রোধ সংবরণে যে মহান প্রতিদান রয়েছে তা অন্য কিছু সংবরণে নেই। [ইবনু মাজাহ, হা. ১৩০৮; ছহীহ, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা. ২৭৫২]

মু'আয ইবনু আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, যে ব্যক্তি ক্রোধকে সংবরণ করে, অথচ সে কাজ করতে সে সক্ষম; (তার এ ছবরের কারণে) আল্লাহ তাকে
সৃষ্টিকুলের সকলের সামনে ডেকে বলবেন, তুমি যে হুরকে চাও, পসন্দ করে নিয়ে যাও। [ইবনু মাজাহ, হা. ১৩০৮;ছহীহ, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব, হা. ২৭৫২]

সুলায়মান ইবনু ছুরাদ (রা:) বলেন, নবী করীম (সা:) এর সামনে দু'ব্যক্তি বাকবিতণ্ডা করছিল। তাদের একজন ভয়ানক ক্রোধান্বিত হন এবং তার চেহারা রাগে লাল হয়ে গেল। তখন নবী করীম (সা:) তার প্রতি তাকিয়ে বললেন, আমি এমন একটি কালেমা জানি যা পাঠ করলে ক্রোধ তার থেকে চলে যায়। (আর তা হল) ‘আমি বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই'। তখন যারা নবী করীম (সা:) এর কথা শুনেছেন, তাদের মধ্য থেকে একজন সেই ব্যক্তির দিকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, তুমি কি জান, রাসূলুল্লাহ (সা:) এই মাত্র কী বলেছেন? তিনি বলেছেন, অবশ্যই আমি এমন একটি কালেমা জানি, তা যদি সে পাঠ করত তাহলে তার থেকে তা (ক্রোধ) চলে যেত। (আর তা হল) এই 'আমি বিতাড়িত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর পানাহ চাই'। তখন সে ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি কি আমাকে পাগল মনে করছ?।' [ছহীহ বুখারী, হা.৩২৮২: ছহীহ মুসলিম, হা.২৬১০]

 
Similar threads Most view View more
Back
Top