আলজেরিয়ার তুল্লাবুল ইলমদের একজন ফদ্বীলাতুশ শায়খ, মুহাম্মদ বিন ছ্বলেহ আল-‘উছাইমীনকে এমন কিছু লোকের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল যারা কোনো নির্দেশনা ও শর্ত ছাড়াই শাসকদের তাক্বফীর করে।
শাইখ উত্তর দিলেন: "যারা তাক্বফীর করে, তারাই খাওয়ারিজের উত্তরাধিকারী, যারা আলী ইবনু আবি তালিব [رضي الله عنه]-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। কাফির হল সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল صلى الله عليه وسلم কাফের ঘোষণা করেছেন, এবং তাক্বফীরের শর্ত রয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে, ইলম এবং তাদের মধ্যে রয়েছ, ইরাদাহ [ইচ্ছা, অভিপ্রায়]। সুতরাং আমাদের জানা উচিত যে এই শাসক সত্যের বিরোধিতা করেছে, এবং সে সত্য জানে এবং সে ইচ্ছাকৃত বিরোধিতা করতে চেয়েছে, এবং তার কোন ত্রুটিপূর্ণ ব্যাখ্যা [সেই ব্যাপারে] নেই। যেমন একজন ব্যক্তি যখন একটি মূর্তিকে সিজদাহ্ করে এবং সে জানে যে একটি মূর্তিকে সিজদাহ্ করা শিরক্ এবং তার কোন ত্রুটিপূর্ণ ব্যাখ্যা নেই।
যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হ’ল, এই বিষয়টির শর্ত রয়েছে, এবং তাক্বফীরের দিকে দ্রুত ধাবিত হওয়া জায়েয নয়, এই রকম ‘এটা হালাল [বৈধ] এবং এটা হারাম [অবৈধ]’ বলার দিকেও দ্রুত ধাবিত হওয়া জায়েয নয়।
প্রশ্নকর্তা: ‘এছাড়াও, তারা সালমান বিন ‘ফাহাদ আল-আওদাহ্, এবং সাফার আল-‘হাওয়ালীর ক্যাসেটগুলো শুনে৷ আমরা কি তাদের তা না শুনতে উপদেশ দিবো?’
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘বারাকাল্লাহু ফিক। তাদের ক্যাসেটগুলিতে যেসব ভাল [কথা] রয়েছে— তা তাদের ক্যাসেট ছাড়া অন্যান্যদের ক্যাসেটে পাওয়া যায়, এবং তাদের ক্যাসেটগুলোর বিরুদ্ধে কিছু [খারাপ] মন্তব্য রয়েছে, তাদের কিছু ক্যাসেটে, সবগুলোতে নয়৷ এবং আমি তোমার জন্য তাদের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম নই— আমি [সক্ষম নই]— এটার মধ্যে এবং ওইটার মধ্যে!
প্রশ্নকর্তা: সেক্ষেত্রে আপনি আমাদের তাদের কথা না শুনার পরামর্শ দিচ্ছেন?
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘না [তাদের কথা শুনিও না]। আমি তোমাকে শায়খ ইবনু বাযের ক্যাসেটগুলি, শায়খ আল-আলবানীর ক্যাসেটগুলি, এবং ন্যায়নিষ্ঠ ও বিশুদ্ধতার জন্য পরিচিত শায়খদের ক্যাসেটগুলি শুনার পরামর্শ দিচ্ছি, এবং তাদেরও [যারা] বিদ্রোহী/বৈপ্লবিক চিন্তাধারার [ছাওরাহ্ ফিরাকিয়্যাহ্’র] কারণে পরিচিত নন।
প্রশ্নকারী: হে শায়খ! এমনকি যদি এই বিষয়ে—উদাহরণস্বরুপ— এখানে মতপার্থক্য [খি’লাফ] রয়েছে— তাই তারা শাসকদের তাক্বফির করে এবং তারা বলে যে ‘এটি জিহাদ’— উদাহরণস্বরুপ— আলজেরিয়াতে, এবং তারা সালমান এবং সাফার আল-‘হাওয়ালির ক্যাসেটগুলি শুনে। হে শায়খ! তাহলে কি এই খিলাফ [মতপার্থক্য] এমন একটি যা ফুর’ঈ? অথবা এটি উসূলে পার্থক্য?
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘না! এটি আক্বীদাহ্’র মধ্যে পার্থক্য [খি’লাফ আক্বদী’ঈ], কারণ এটি আহলুস সুন্নাহ্'র উসূলের একটি যে আমরা পাপের কারণে কাউকে তাক্বফীর করি না!’
প্রশ্নকর্তা: ‘তারা, হে শায়খ! কাবীরাহ্ গুনাহকারীদেরকে তাক্বফীর করে না, শাসকদের ব্যতীত, তারা এই আয়াত দেখায়, ‘যারা আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দ্বারা বিচার করে না, তারা কাফির’, এবং তারা শুধু শাসকদের তাক্বফীর করে?!’
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘এই আয়াত সম্পর্কে
ইবনু আব্বাসের একটি আছার আছে, যা ব্যাখ্যা করে যে এই কুফর ইসলাম থেকে বেরে করে দেয় না, যেমনটি রাসূল صلى الله عليه وسلم-এর হাদীসে দেখা যায়, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া পাপ [ফুসুক্ব] এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করা কুফর৷’ এবং মুফাছছিরুনদের কারো কারো মতে, এটি [আয়াত] প্রকৃতপক্ষে আহলুল কিতাবদের জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল, কারণ আয়াতটির প্রকৃত প্রসঙ্গ সেটিই যা [এর] পূর্বে বলা হয়েছে, ‘আমি তাও’রাত অবতীর্ণ করেছিলাম, তাতে ছিল সঠিক পথের দিশা ও আলো। অনুগত নবীগণ এর দ্বারা ইয়াহূ’দীদেরকে ফায়সালা দিত। দরবেশ ও আলিমরাও [তাই করত] কারণ তাদেরকে আল্লাহ্’র ক্বিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল আর তারা ছিল এর সাক্ষী। কাজেই মানুষকে ভয় করো না, আমাকেই ভয় কর, আর আমার আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় করো না। আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন, সে অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না তারাই কা’ফির’ [সূরা মায়িদাহ্: ৪৪ নং আয়াত]।”
বঙ্গানুবাদ: আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ রাকিব খান।
সোর্স
শাইখ উত্তর দিলেন: "যারা তাক্বফীর করে, তারাই খাওয়ারিজের উত্তরাধিকারী, যারা আলী ইবনু আবি তালিব [رضي الله عنه]-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। কাফির হল সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল صلى الله عليه وسلم কাফের ঘোষণা করেছেন, এবং তাক্বফীরের শর্ত রয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে, ইলম এবং তাদের মধ্যে রয়েছ, ইরাদাহ [ইচ্ছা, অভিপ্রায়]। সুতরাং আমাদের জানা উচিত যে এই শাসক সত্যের বিরোধিতা করেছে, এবং সে সত্য জানে এবং সে ইচ্ছাকৃত বিরোধিতা করতে চেয়েছে, এবং তার কোন ত্রুটিপূর্ণ ব্যাখ্যা [সেই ব্যাপারে] নেই। যেমন একজন ব্যক্তি যখন একটি মূর্তিকে সিজদাহ্ করে এবং সে জানে যে একটি মূর্তিকে সিজদাহ্ করা শিরক্ এবং তার কোন ত্রুটিপূর্ণ ব্যাখ্যা নেই।
যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হ’ল, এই বিষয়টির শর্ত রয়েছে, এবং তাক্বফীরের দিকে দ্রুত ধাবিত হওয়া জায়েয নয়, এই রকম ‘এটা হালাল [বৈধ] এবং এটা হারাম [অবৈধ]’ বলার দিকেও দ্রুত ধাবিত হওয়া জায়েয নয়।
প্রশ্নকর্তা: ‘এছাড়াও, তারা সালমান বিন ‘ফাহাদ আল-আওদাহ্, এবং সাফার আল-‘হাওয়ালীর ক্যাসেটগুলো শুনে৷ আমরা কি তাদের তা না শুনতে উপদেশ দিবো?’
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘বারাকাল্লাহু ফিক। তাদের ক্যাসেটগুলিতে যেসব ভাল [কথা] রয়েছে— তা তাদের ক্যাসেট ছাড়া অন্যান্যদের ক্যাসেটে পাওয়া যায়, এবং তাদের ক্যাসেটগুলোর বিরুদ্ধে কিছু [খারাপ] মন্তব্য রয়েছে, তাদের কিছু ক্যাসেটে, সবগুলোতে নয়৷ এবং আমি তোমার জন্য তাদের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম নই— আমি [সক্ষম নই]— এটার মধ্যে এবং ওইটার মধ্যে!
প্রশ্নকর্তা: সেক্ষেত্রে আপনি আমাদের তাদের কথা না শুনার পরামর্শ দিচ্ছেন?
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘না [তাদের কথা শুনিও না]। আমি তোমাকে শায়খ ইবনু বাযের ক্যাসেটগুলি, শায়খ আল-আলবানীর ক্যাসেটগুলি, এবং ন্যায়নিষ্ঠ ও বিশুদ্ধতার জন্য পরিচিত শায়খদের ক্যাসেটগুলি শুনার পরামর্শ দিচ্ছি, এবং তাদেরও [যারা] বিদ্রোহী/বৈপ্লবিক চিন্তাধারার [ছাওরাহ্ ফিরাকিয়্যাহ্’র] কারণে পরিচিত নন।
প্রশ্নকারী: হে শায়খ! এমনকি যদি এই বিষয়ে—উদাহরণস্বরুপ— এখানে মতপার্থক্য [খি’লাফ] রয়েছে— তাই তারা শাসকদের তাক্বফির করে এবং তারা বলে যে ‘এটি জিহাদ’— উদাহরণস্বরুপ— আলজেরিয়াতে, এবং তারা সালমান এবং সাফার আল-‘হাওয়ালির ক্যাসেটগুলি শুনে। হে শায়খ! তাহলে কি এই খিলাফ [মতপার্থক্য] এমন একটি যা ফুর’ঈ? অথবা এটি উসূলে পার্থক্য?
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘না! এটি আক্বীদাহ্’র মধ্যে পার্থক্য [খি’লাফ আক্বদী’ঈ], কারণ এটি আহলুস সুন্নাহ্'র উসূলের একটি যে আমরা পাপের কারণে কাউকে তাক্বফীর করি না!’
প্রশ্নকর্তা: ‘তারা, হে শায়খ! কাবীরাহ্ গুনাহকারীদেরকে তাক্বফীর করে না, শাসকদের ব্যতীত, তারা এই আয়াত দেখায়, ‘যারা আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দ্বারা বিচার করে না, তারা কাফির’, এবং তারা শুধু শাসকদের তাক্বফীর করে?!’
শায়খ ইবনু ‘উছাইমীন: ‘এই আয়াত সম্পর্কে
ইবনু আব্বাসের একটি আছার আছে, যা ব্যাখ্যা করে যে এই কুফর ইসলাম থেকে বেরে করে দেয় না, যেমনটি রাসূল صلى الله عليه وسلم-এর হাদীসে দেখা যায়, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া পাপ [ফুসুক্ব] এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করা কুফর৷’ এবং মুফাছছিরুনদের কারো কারো মতে, এটি [আয়াত] প্রকৃতপক্ষে আহলুল কিতাবদের জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল, কারণ আয়াতটির প্রকৃত প্রসঙ্গ সেটিই যা [এর] পূর্বে বলা হয়েছে, ‘আমি তাও’রাত অবতীর্ণ করেছিলাম, তাতে ছিল সঠিক পথের দিশা ও আলো। অনুগত নবীগণ এর দ্বারা ইয়াহূ’দীদেরকে ফায়সালা দিত। দরবেশ ও আলিমরাও [তাই করত] কারণ তাদেরকে আল্লাহ্’র ক্বিতাবের রক্ষক করা হয়েছিল আর তারা ছিল এর সাক্ষী। কাজেই মানুষকে ভয় করো না, আমাকেই ভয় কর, আর আমার আয়াতকে নগণ্য মূল্যে বিক্রয় করো না। আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন, সে অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না তারাই কা’ফির’ [সূরা মায়িদাহ্: ৪৪ নং আয়াত]।”
বঙ্গানুবাদ: আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ রাকিব খান।
সোর্স