সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ লোকে বলে, ‘মিথ্যা না বললে ব্যবসা চলে না।’ এ কথা কি ঠিক? ব্যবসায় মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যে কসম খাওয়ায় পাপ কি?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,135
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,496
Credits
24,212
তাদের কথা ঠিক নয়। ব্যবসা চলা না চলা আল্লাহর হাতে। রুজি ও বরকতের চাবি তার হাতে। সুতরাং সদা সত্য কথা বলাই মুসলিমের গুন। আর মিথ্যা বলা মুনাফিকের গুন।

রাসুল (সঃ) বলেছেন, “নিশ্চয় সত্যবাদীরা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে ‘মহাসত্যবাদি’ রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচার এর দিকে নিয়ে যায়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে ‘মহামিথ্যাবাদীরূপে’ লিপিবদ্ধ করা হয়। (বুখারি ও মুসলিম)

মিথ্যা কসম খেয়েও মাল বিক্রয় করা মহাপাপ। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে ) তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য থাকবে যন্ত্রণা দায়ক শাস্তি।” বর্ণনা কারি বলেন, ‘রাসুল (সঃ) উক্ত বাক্যগুলো তিনবার বললেন।’ আবু যার বললেন, ‘তাঁরা ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হোক! তাঁরা কারা? হে আল্লাহর রাসুল!’ তিনি বললেন, ‘(লুঙ্গি কাপড় ) পায়ের গাঁটের নিচে যে ঝুলিয়ে পরে, দান করে যে লোকের কাছে দানের কথা বলে বেড়ায় এবং মিথ্যা কসম খেয়ে যে পণ্য বিক্রি করে।’ (মুসলিম)

তিনি বলেছেন, “ যে ব্যক্তি কোন মুসলমান ব্যক্তির মাল না হক আত্মসাৎ করার জন্য মিথ্যা কসম খাবে, সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাত করবে, যখন তিনি তার উপর ক্রোধান্বিত থাকবেন। অতঃপর এর সমর্থনে আল্লাহ আযযা অজাল্লার কিতাব থেকে রাসুলুল্লাহ (সঃ) এই আয়াত পরে শুনালেন,

“যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ও নিজের শপথ স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে (দয়ার দৃষ্টিতে) চেয়ে দেখবেন না , তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” (আলে ইমরান ৭৭ আয়াত, বুখারি ও মুসলিম)

তিনি আরও বলেন, “ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ে পৃথক না হওয়া পর্যন্ত (ক্রয় বিক্রয়ে তাদের) এখতিয়ার থাকে। সুতরাং তাঁরা যদি (ক্রয় বিক্রয়ে) সত্য বলে এবং (পণ্য দ্রবের দোষ গুন) খুলে বলে, তাহলে তাদের ক্রয় বিক্রয়ে বরকত দেয়া হয়। অন্যথা যদি (পণ্যদ্রব্যের দোষগুণ) গোপন করে এবং মিথ্যা বলে তাহলে, বাহ্যতঃ তাঁরা লাভ করলেও তাদের ক্রয় বিক্রয়ের বরকত বিনাশ করে দেয়া হয়।আর মিথ্যা কসম পণ্য দ্রব্য চালু করে ঠিকই , কিন্তু তা উপার্জনে বরকত বিনাশ করে দেয়।

পরন্ত মিথ্যা বলে বা মিথ্যা কসম খেয়ে ধোঁকা দিয়ে পণ্য বিক্রয় করা অসদুপায়ে অন্যের মাল হরণ করার শামিল। আর আল্লাহ বলেছেন,

“ হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা একে অন্যের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। তবে তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে ব্যবসার মাধ্যমে (গ্রহণ করলে তা বৈধ )। (নিসাঃ ২৯)


সূত্র: দ্বীনী প্রশ্নোত্তর।
লেখক: শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী​
 
Top