‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

বিদআত বিদআতের পরিচয় পরিচিতি

Muin uddin

New member

Threads
1
Comments
1
Reactions
10
Credits
243
ইসলাম পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এতে নতুন করে কোন কিছু সংযোজন-বিয়োজনের সুযোগ নেই। এ ব্যবস্থা মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক জীবন থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক জীবন পর্যন্ত পরিব্যপ্ত।

যা সর্বদিক থেকে পরিপূর্ণ ও সুস্পষ্ট। এতে কোন অস্পষ্টতার চিহ্ন নেই। এর প্রতিটি বিধান মানবতার জন্য অনুসরণীয় ও অনুশীলনযোগ্য। সর্বশেষ নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জীবনে যা সম্পূর্ণটাই বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদর্শিত এ জীবন বিধানের বাস্তব রূপ হচ্ছে তাঁর সুন্নাত।

এজন্য পরবর্তীকালে এর বাইরে ইবাদতের নামে যা কিছু নতুন আবিষ্কৃত হয়েছে সেটাকেই বিদ‘আত হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।

শরী‘আতে নতুন কোন রীতি-নীতি সংযোজিত হলে সেটা বিদ‘আত হয়। যা গর্হিত অপরাধ। মূলত বিদ‘আত মুমিনের আমল বিনষ্টকারী এক ভয়ংকর মারণাস্ত্র। এটি জঘন্য অপরাধ ও ঈমান বিধ্বংসী এক মারাত্মক ব্যাধি। ঘুর্ণিঝড় যেমন সবকিছুকে মুহূর্তের মধ্যে লণ্ড-ভণ্ড ও বিনাশ করে দেয় অনুরূপ বিদ‘আতও তার পুঞ্জীভূত আক্রমণে মুসলিম জীবনকে গ্রাস করে ফেলে, ম্লান ও স্তিমিত করে দেয় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চির উন্নত ও সমুজ্জ্বল সুন্নাতী আদর্শকে।

এটি সুন্নাতকে গলা টিপে হত্যা করে এবং অসম্পূর্ণ প্রমাণ করে। অথচ ইসলামী শরী‘আতের প্রধান দু’টি মৌল নীতির একটি হল সুন্নাত। সুন্নাত মুসলিমের সামগ্রিক জীবনের একমাত্র অবলম্বন। মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রেই সুন্নাতের প্রভাব রয়েছে। মানুষের ইহলৌকিক কল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তির একমাত্র সোপান হল এই সুন্নাত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সুন্নাতী আদর্শ ভূলুণ্ঠিত করে আজ বিদ‘আতী চেতনা লালন করা হচ্ছে। বিদ‘আতকেই সুন্নাত হিসাবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

আর সুন্নাতকে করা হচ্ছে অপমান। বিদ‘আতের আক্রমণে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাত যেন আজ ক্ষতিগ্রস্ত। অথচ ইসলামে বিদ‘আতের কোন স্থান নেই। কেননা ইসলাম পরিপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর মাত্র কিছুদিন পূর্বে বিদায় হজ্জের ময়দানে আল্লাহ তা‘আলা ইসলামকে পরিপূর্ণ ঘোষণা করেছেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اَلۡیَوۡمَ اَکۡمَلۡتُ لَکُمۡ دِیۡنَکُمۡ وَ اَتۡمَمۡتُ عَلَیۡکُمۡ نِعۡمَتِیۡ وَ رَضِیۡتُ لَکُمُ الۡاِسۡلَامَ دِیۡنًا​

‘আজ তোমাদের দ্বীন তোমাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নে‘মতকে সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম’ (সূরা আল-মায়িদাহ : ৩)।

ইসলাম এমন একটি জীবন ব্যবস্থা, যেখানে মানব জাতির প্রয়োজনীয় কোন কিছুই বাদ রাখা হয়নি। সব বিষয়েই পরিপূর্ণ বিধান বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, مَا فَرَّطۡنَا فِی الۡکِتٰبِ مِنۡ شَیۡءٍ ‘আমরা এ কিতাবে কোন কিছুই বাদ দেইনি’ (সূরা আল-আন‘আম : ৩৮)।

উপরিউক্ত আয়াতদ্বয় থেকে স্পষ্ট হল যে, ইসলাম পরিপূর্ণ একটি জীবন ব্যবস্থা। অতএব পরিপূর্ণ এই জীবন ব্যবস্থায় কেউ যদি বিদ‘আত প্রবেশ করায়, তাহলে ঐ বিদ‘আতটি সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সমপরিমাণ সুন্নাত সমাজ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যেমন,

عَنْ حَسَّانَ قَالَ مَا ابْتَدَعَ قَوْمٌ بِدْعَةً فِىْ دِيْنِهِمْ إِلَّا نَزَعَ اللهُ مِنْ سُنَّتِهِمْ مِثْلَهَا ثُمَّ لَا يُعِيْدُهَا إِلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ​

তাবেঈ হাস্সান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন ‘কোন জাতি যখনই তাদের দ্বীনের মধ্যে কোন বিদ‘আত সৃষ্টি করে, তখনই আল্লাহ তা‘আলা তাদের থেকে সে পরিমাণ সুন্নাত উঠিয়ে নেন। ক্বিয়ামত পর্যন্ত সে সুন্নাত আর তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয় না’।[১]

আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত সকল বিধান রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষের নিকট সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন। কোন একটা বিধান তিনি বাদ রাখেননি। হাদীসে এসেছে,

مَا تَرَكْتُ شَيْئًا مِمَّا أَمَرَكُمُ اللهُ بِهِ إِلَّا وَقَدْ أَمَرْتُكُمْ بِهِ وَلَا تَرَكْتُ شَيْئًا مِمَّا نَهَاكُمُ اللهُ عَنْهُ إِلَّا وَقَدْ نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ​

‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন এমন কোন জিনিসই আমি (বর্ণনা করতে) ছাড়িনি। আমি তাঁর হুকুম তোমাদেরকে অবশ্যই দিয়েছি। আর আমি এমন কোন জিনিস ছাড়িনি যা আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। অথচ আমি তোমাদের নিষেধ করেনি।[২] মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হজ্জের ভাষণে বিশ্ব মানবতার জন্য দু’টি বস্তু রেখে যান, যে দু’টি বস্তুকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরলে কেউ কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطَبَ النَّاسَ فِىْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّىْ قَدْ تَرَكْتُ فِيْكُمْ مَا إِنِ اعْتَصَمْتُمْ بِهِ فَلَنْ تَضِلُّوْا أَبَدًا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ​

ইবনু ‘আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত, বিদায় হজ্জের ময়দানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে বলেন, হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস ছেড়ে যাচ্ছি তোমরা যদি তা আঁকড়ে ধরে থাক, তাহলে কখনো তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। সেটা হল- আল্লাহর কিতাব তথা আল-কুরআন এবং তাঁর নবীর সুন্নাত তথা হাদীস’।[৩]

উপরিউক্ত আলোচনায় শরী‘আত যে ‘দু’টি মানদণ্ড’-এর উপর ভিত্তিশীল, তা স্পষ্ট হয়েছে, যা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিপূর্ণভাবে তার বিস্তারিত বিবরণ পেশ করেছেন। সুতরাং মুক্তির মানদণ্ড হল কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ। এর বাইরে সবই ভ্রষ্টতা।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিদ‘আতের আগ্রাসনে সুন্নাত আজ ম্রিয়মাণ। অত্যাধুনিক এই যুগেও মুসলিম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নাতকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাতী আদর্শ আজ বিদ‘আতের জালে বন্দি হয়ে পড়েছে।

সুন্নাতী আদর্শ পরিত্যাগ করে কেউ শবেবরাত, শবেমে‘রাজ, ঈদে মীলাদুন্নবী ইত্যাদির মত বিদ‘আতে লিপ্ত হয়েছে। কেউ ছবিনা খতম করছে, চল্লিশার দিনে কথিত মীলাদের নামে দু‘আর অনুষ্ঠান করছে, মৃত পিতা-মাতা ও নিকটতম আত্মীয়-স্বজনের নামে কুরআন বকশিয়ে দিচ্ছে, মহররম রাত্রি উদ্যাপন করছে, ওরস কিংবা ইছালে ছওয়াব মাহফিল করছে।

কেউ রামাযান মাসে বদর দিবস পালন করছে, ঈদের পরে ‘ঈদ পূণর্মিলনী অনুষ্ঠান করছে। কেউ আবার জন্ম দিবস, মৃত্যু দিবস, বিবাহ বার্ষিকী ইত্যাদি উদ্যাপন করছে। এমনকি সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত সালাতও বিদ‘আতে আক্রান্ত।

রামাযানের ফরয ছওম ও অন্যান্য নফল ছওমের ক্ষেত্রেও বিদ‘আত অনুপ্রবেশ করেছে। হজ্জের ক্ষেত্রে তো সর্বাধিক পরিমাণ বিদ‘আতের ছড়াছড়ি। দুঃখের বিষয় হল- পূর্ব পুরুষ ও প্রবৃত্তির দোহায় দিয়ে মূর্খ, দুনিয়া পূজারী তথাকথিত একশ্রেণীর দরবারী আলেম কর্তৃক সমাজে বিভিন্ন বিদ‘আত প্রচলিত আছে। যেমন নিম্নের বর্ণনাগুলো এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য,

ক). প্রখ্যাত সাহাবী আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে বলেন যে,

مَا أَعْرِفُ شَيْئًا مِمَّا كَانَ عَلَى عَهْدِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِيْلَ الصَّلَاةُ قَالَ أَلَيْسَ ضَيَّعْتُمْ مَا ضَيَّعْتُمْ فِيهَا​

‘আজকাল কোন জিনিসই সে অবস্থায় পাই না, যেমন নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ছিল। প্রশ্ন করা হল যে, সালাতও? তিনি বললেন, সে ক্ষেত্রেও যা নষ্ট করার তোমরা কি তা করনি’? [৪] পরের বর্ণনাটি আরো আশ্চর্যজনক।

খ). প্রখ্যাত তাবিঈ ইবনু শিহাব আয-যুহরী (৫৮-১২৪ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

دَخَلْتُ عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ بِدِمَشْقَ وَهُوَ يَبْكِىْ فَقُلْتُ مَا يُبْكِيْكَ فَقَالَ لَا أَعْرِفُ شَيْئًا مِمَّا أَدْرَكْتُ إِلَّا هَذِهِ الصَّلَاةَ وَهَذِهِ الصَّلَاةُ قَدْ ضُيِّعَتْ​

‘একদিন আমি দিমাস্কে আনাস ইবনু মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-এর নিকট প্রবেশ করলাম আর তখন তিনি কাঁদছিলেন। আমি বললাম, আপনি কেন কাঁদছেন? তখন তিনি বললেন, (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে) আমি যে সব বিষয় দেখেছিলাম, তার মধ্যে কেবল এই সালাত ছাড়া কোন কিছুই আমি চিনতে পারছি না। এমনকি সালাতও নষ্ট হয়ে গেছে’।[৫]

গ). ছাল্ত ইবনু বুহরাম (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

مَرَّ ابْنُ مَسْعُوْدٍ بِامْرَأَةٍ مَعَهَا تَسْبِيْحٌ تُسَبِّحُ بِهِ فَقَطَعَهُ وَأَلْقَاهُ ثُمَّ مَرَّ بِرَجُلٍ يُسَبِّحُ بِحَصَى فَضَرَبَهُ بِرِجْلِهِ ثُمَّ قَالَ لَقَدْ سَبَقْتُمْ! رَكِبْتُمْ بِدْعَةً ظُلْمًا! وَلَقَدْ غَلَبْتُمْ أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِلْمًا!​

‘ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) এক মহিলার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার কাছে দানা ছিল, যার দ্বারা ঐ মহিলা তাসবীহ গণনা করছিল। ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) সেগুলো কেড়ে নিলেন এবং দূরে ফেলে দিলেন। অতঃপর একজন লোকের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলেন যে কংকর দ্বারা তাসবীহ গণনা করছিল।

ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তাকে নিজের পা দ্বারা লাথি মারলেন। তারপর বললেন, তোমরা অগ্রগামী হয়েছ! আর অন্ধ বিদ‘আতের উপর আরোহণ করেছ! তোমরাই কি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী হিসাবে ‘ইলমের দিক থেকে বিজয়ী হয়েছ’! [৬] অন্যত্র ইবনু মাসঊদ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) তাদেরকে আরো শক্ত করে বলেন,

فَعُدُّوْا سَيِّئَاتِكُمْ فَأَنَا ضَامِنٌ أَنْ لَا يَضِيْعَ مِنْ حَسَنَاتِكُمْ شَىْءٌ وَيْحَكُمْ يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ مَا أَسْرَعَ هَلَكَتَكُمْ هَؤُلَاءِ صَحَابَةُ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَوَافِرُوْنَ وَهَذِهِ ثِيَابُهُ لَمْ تَبْلَ وَآنِيَتُهُ لَمْ تُكْسَرْ وَالَّذِىْ نَفْسِىْ فِىْ يَدِهِ إِنَّكُمْ لَعَلَى مِلَّةٍ هِىَ أَهْدَى مِنْ مِلَّةِ مُحَمَّدٍ أَوْ مُفْتَتِحُوْ بَابِ ضَلَالَةٍ​

‘তোমরা তোমাদের পাপগুলো গণনা কর, আমি দায়িত্ব নিচ্ছি যে, তোমাদের কোন নেক কাজ বিনষ্ট করা হবে না। হতভাগা হে উম্মতে মুহাম্মাদী! কত দ্রুত তোমরা ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছ! এখনো তোমাদের মাঝে তোমাদের নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনেক সাহাবী জীবিত রয়েছেন।

দেখ! তাঁর পোশাকগুলো এখনো পুরাতন হয়নি, তাঁর আসবাবপত্র এখনো ভেঙ্গে নষ্ট হয়নি! (অথচ তার আগেই তোমরা ধ্বংসের পথে চলে গেলে?)। আল্লাহর কসম, তোমরা কি এমন মিল্লাত আবিষ্কার করলে, যা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মিল্লাতের চেয়ে উত্তম, না-কি ভ্রষ্টতার দ্বার উন্মুক্ত করে দিলে?’[৭]

ঘ). অন্যদিকে শুধু ক্বিবলার কথা উল্লেখিত হয়েছে। কোন একদিন লোকেরা জুমু‘আর সালাত আদায় করে চলে যাওয়ার সময় দেখল যে, তাবেঈ হাসান আল-বাছরী (২১-১১০ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) মসজিদের এক কোণে বসে কাঁদছেন। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, কীসে আপনাকে কাঁদাচ্ছ? তখন তিনি বলেন,

وَمَالِيْ لَا أَبْكِيْ وَمَا أَعْرِفُ لَكُمْ شَيْئًا مِمَّا أَدْرَكْت عَلَيْهِ النَّاسَ إلَّا الْقِبْلَةَ​

‘কেন কাঁদব না! আমি সাহাবায়ে কেরামকে দ্বীনের যে অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলাম, তন্মধ্যে ক্বিবলা ব্যতীত কোন কিছুই আমি চিনতে পারছি না’।[৮]

ঙ). প্রখ্যাত তাবেঈ মু‘আবিয়া ইবনু কুররা (৩৬-১১৩ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

أَدْرَكْتُ سَبْعِيْنَ رَجُلًا مِّنْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ خَرَجُوْا فِيْكُمْ الْيَوْمَ مَا عَرَفُوْا شَيْئًا مِّمَّا أَنْتُمْ عَلَيْهِ إِلَّا الْأَذَانَ​

‘সত্তর জন সাহাবীর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছে। তারা যদি আজ থাকতেন, তাহলে তোমাদের যে বর্তমান অবস্থা, তা থেকে কেবল আযান ছাড়া তাঁরা কোন কিছুই চিনতে পারতেন না’।[৯]

চ). ইমাম মালিক (৯৩-১৭৯ হি./৭১১-৭৯৫ খ্রি.) (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর চাচা আবু সুহাইল (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে, তিনি তাঁর পিতা মালিক (রাযিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণনা করে, তিনি অত্যন্ত দুঃখ করে বলেন,

مَا أَعْرِفُ شَيْئًا مِمَّا أَدْرَكْتُ عَلَيْهِ النَّاسَ إِلَّا النِّدَاءَ بِالصَّلَاةِ​

‘আমি সাহাবীগণকে দ্বীনের যে অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলাম, তন্মধ্যে কেবল আযান ব্যতীত অন্য কোন কিছুই আমি চিনতে পারছি না’।[১০] অর্থাৎ আযান ব্যতীত সব কিছুর মধ্যে কিছু না কিছু পরিবর্তন এসেছে। উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় সুলায়মান আল-বাজী (৪০৩-৪৭৪ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

أَنَّهُ بَاقٍ عَلَى مَا كَانَ عَلَيْهِ لَمْ يَدْخُلْهُ تَغْيِيْرٌ وَلَا تَبْدِيْلُ بِخِلَافِ الصَّلَاةِ فَقَدْ أُخِّرَتْ عَنْ أَوْقَاتِهَا وَسَائِرِ الْأَعْمَالِ دَخلهَا التَّغْيِيْرُ​

‘শুধু আযানটাই কোন ধরনের পরিবর্তন ও বিকৃতি ছাড়াই পূর্বের অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে। এমনকি সালাতের মধ্যেও পরিবর্তন এসেছে। এখন সালাত তার নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরী করে আদায় করা হয়। তাছাড়া সকল আমলের মধ্যেই পরিবর্তন এসেছে’।[১১] যদিও বর্তমানে নিকৃষ্ট ও পথভ্রষ্ট শী‘আরা আযানেও পরিবর্তন এনে নিজেদের আক্বীদা-বিশ্বাস মতে আযান তৈরি করেছে। অন্যদিকে মাযহাবী গোঁড়ামির কারণে আযানের আগে ও পরে অনেক কিছু সংযোজন করা হয়েছে।

ছ). ২৪১ হিজরীর পূর্বে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (১৬৪-২৪১ হি.) (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,

لَوْ صَلَّيْتَ فِىْ مِائَةِ مَسْجِدٍ مَا رَأَيْتَ أَهْلَ مَسْجِدٍ وَاحِدٍ يُقِيْمُوْنَ الصَّلَاةَ عَلَى مَا جَاءَ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَنْ أَصْحَابِهِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ فَاتَّقُوا اللهَ وَانْظُرُوْا فِىْ صَلَاتِكُمْ وَصَلَاةَ مَنْ يُّصَلِّىْ مَعَكُمْ​

‘তুমি যদি এই যুগের একশ’ মসজিদেও সালাত আদায় কর, তবুও তুমি কোন মসজিদে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবায়ে কেরাম (রাযিয়াল্লাহু আনহুম)-এর সালাত দেখতে পাবে না। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের নিজেদের সালাত এবং তোমাদের সাথে যারা সালাত আদায় করে, তাদের সালাতের প্রতি কড়া দৃষ্টি রাখ’।[১২]

উক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হল যে, সাহাবী, তাবি‘ঈ ও তাবি‘ তাবি‘ঈগণের যুগেও কতিপয় ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে ‘ইবাদতের মধ্যে পরিবর্তন ও বিকৃতি ঘটেছিল। যেগুলোর সাথে সুন্নাতের কোন সম্পর্ক ছিল না। আর এ সমস্ত শরী‘আত বিরোধী কর্মকা- সাহাবীগণ কঠোরহস্তে দমন করেছিলেন। পক্ষান্তরে সময়ের বিবর্তনে বর্তমানে মুসলিমদের ধর্মীয় অবস্থা শুধু করুণই নয়, বরং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নাত থেকে মানুষ দূরে অবস্থান করছে।

প্রবৃত্তি পূজারী হয়ে স্বেচ্ছাচারিতাকেই মানুষ প্রাধান্য দিচ্ছে। শরী‘আতকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাচ্ছে। এভাবে মুমিন জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে বিদ‘আত আজ সুন্নাতের জায়গা দখল করে নিয়েছে। কোন্টি সুন্নাত আর কোন্টি বিদ‘আত বুঝার কোন উপায় নেই। সবই যেন বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মস্তিষ্কপ্রসূত। মুসলিমদের জাতীয় জীবনে এ এক মারাত্মক পরিস্থিতি। কেননা বিদ‘আতের পঙ্কিল প্লাবনে সুন্নাতের দিকপ্লাবী নির্মল আলোকচ্ছটা ম্লান হয়ে এসেছে আর বিদ‘আতের কালো আঁধার সর্বত্র ছেয়ে গেছে, গ্রাস করে ফেলেছে সমগ্র ইসলামী শরী‘আতকে।

বিদ‘আতের পরিচয়​


বর্তমানে বিদ‘আতের পরিচয়ের ব্যাপারে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সকলের মাঝে একটা ভ্রষ্টতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এজন্য সর্বাগ্রে বিদ‘আতের আভিধানিক ও শারঈ অর্থ সম্পর্কে স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। নিম্নে তা উল্লেখ করা হল-

বিদ‘আত (بِدْعَةٌ) শব্দটি ‘আরবী। এর অর্থ নতুন সৃষ্টি। বিদ‘আতের শাব্দিক অর্থ বর্ণনায় অভিধানবেত্তাগণের দৃষ্টিভঙ্গি নিম্নরূপ:

১). ‘আল-মুখাছ্ছাছ’ প্রণেতা ইবনু সীদাহ (৩৯৮-৪৫৮ হি./১০০৭-১০৬৬ খ্রি.) اَلبَدِيْع ‘সৃষ্টিকর্তা’ শব্দ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন, যিনি পূর্ব দৃষ্টান্ত ছাড়াই নতুন করে সৃষ্টি করেছেন। যেমন বলা হয়ে থাকে, ابْتَدَعَ اللهُ الخَلْقَ ‘আল্লাহ নতুন সৃষ্টি করেছেন’। সেখান থেকেই বলা হয়, بِدْعَةٌ ‘বিদ‘আত’ অর্থাৎ এমন উদ্ভাবিত বিষয়, যা সংঘটিত হয়নি এবং যা সুন্নাত নয়।

যেমন মহান আল্লাহ বলেন, قُلۡ مَا کُنۡتُ بِدۡعًا مِّنَ الرُّسُلِ ‘আপনি বলুন, আমি রাসূলগণের মধ্যে নতুন নই (সূরা আল-আহক্বাফ : ৯)’।[১৩] অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আমিই প্রথম নবী নই, যাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে অহী ও শরী‘আত প্রদান করা হয়েছে। বরং আমার পূর্বে বহু রাসূলকে আল্লাহ জান্নাতের সুসংবাদদাতা ও জাহান্নামের ভীতি প্রদর্শনকারী হিসাবে পাঠিয়েছেন। আর আমি তাঁদের রাস্তায় রয়েছি’।[১৪]

২). প্রখ্যাত অভিধানবেত্তা ইবনু মালিক আত-ত্বা-ই আল-জিয়ানী (৫৯৮-৬৭২ হি.) বলেন, وهي كل محدثة ‘প্রত্যেক নতুনভাবে প্রবর্তিত বিষয়ই বিদ‘আত’।[১৫]

৩). ‘লিসানুল ‘আরব’ প্রণেতা ইবনুল মানযূর (৬৩০-৭১১ হি./১২৩২-১৩১১ খ্রি.) বলেন, البِدْعةُ الحَدَث وما ابْتُدِعَ من الدِّيْنِ بعد الإِكمال ‘বিদ‘আত হল- পরিপূর্ণ হওয়ার পর দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করা’।

তিনি উদাহরণস্বরূপ বলেছেন যে, بدَع الشيءَ يَبْدَعُه بَدْعاً وابْتَدَعَه ‘সে নতুনভাবে বস্তুটির উদ্ভাবন করেছে’। এ অর্থেই নতুনভাবে খনন করা কূপকে رَكِيٌّ بَدِيْعٌ বলা হয়।[১৬] তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলার গুণবাচক নামগুলোর মধ্যে بَدِيْعٌ ‘সৃষ্টিকর্তা’ অন্যতম।

যেমন মহান আল্লাহ বলেন, بَدِیۡعُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ‘পূর্বের কোন নমুনা ব্যতীত আল্লাহ তা‘আলা আকাশ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন’ (সূরা আল-বাকারাহ : ১১৭)।

অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, وَ رَہۡبَانِیَّۃَۨ ابۡتَدَعُوۡہَا مَا کَتَبۡنٰہَا عَلَیۡہِمۡ اِلَّا ابۡتِغَآءَ رِضۡوَانِ اللّٰہِ ‘আর বৈরাগ্যবাদ- ইহা তো তারা নিজেরাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রবর্তন করেছিল। আমরা তাদের এ বিধান দেয়নি’ (সূরা আল-হাদীদ : ২৭)। ইবনু মানযূর (৬৩০-৭১১ হি./১২৩২-১৩১১ খ্রি.) প্রত্যেক জিনিসের প্রথম ও নতুন সৃষ্টিকেও بِدْعُ বলে আখ্যায়িত করেছেন।[১৭]

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

- মুহাম্মাদ বযলুর রহমান
পি-এইচ. ডি গবেষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।​



তথ্যসূত্র :

[১]. সুনানুদ দারিমী, ১ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ ১৪০৭ হি.), পৃ. ৫৮, হা/৯৮; ফাজীলাতুশ শাইখ ‘আব্দুল্লাহ ইবনু সালিহ আল-‘আবীলান, সিলসিলাতুল আসারিছ সহীহাতি আবিছ সহীহিল মুসনাদি মিন আক্বওয়ালিছ সাহাবাতি ওয়াত তাবিঈন, ১ম খণ্ড (প্রকাশস্থান বিহীন : দারুল ফারূক, ১ম সংস্করণ ১৪২৪ হি./২০০৩ খ্রি.), পৃ. ৪১. হা/২৯; মিশকাতুল মাছাবীহ, ১ম খণ্ড (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৩য় সংস্করণ ১৪০৫ হি./১৯৮৫ খ্রি.), পৃ. ৪১, হা/১৮৮, সনদ সহীহ।

[২]. সুনানুল বায়হাকী আল-কুবরা, ৭ম খণ্ড (মক্কা : মাকতাবাতু দারিল বায, ১৪১৪ হি./১৯৯৪ খ্রি.), পৃ. ৭৬, হা/১৩২২১; মুসনাদুশ শাফিঈ (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তারিখ বিহীন), পৃ. ৩৯০, হা/১৮০০; সনদ মুলসাল সূত্রে হাসান, সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৮০৩।

[৩]. আল-মুসতাদরাকু ‘আলাছ সহীহাইন, ১ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ১ম সংস্করণ, ১৪১১ হি./১৯৯০ খ্রি.), পৃ. ১৭১, হা/৩১৮; সুনানুল বায়হাকী আল-কুবরা, ১০ তম খণ্ড, পৃ. ১১৪, হাদীস নং-২০১২৩, সনদ সহীহ।

[৪]. সহীহ বুখারী, হা/৫২৯; তিরমিযী, হা/২৪৪৭।

[৫]. সহীহ বুখারী, হা/৫৩০।

[৬]. মুহাম্মাদ ইবনু ওয়াযযাহ আল-কুরতুবী, আল-বিদাঊ ওয়ান নাহী আনহা (প্রকাশস্থান বিহীন : মাকতাবাতু ইবনি তায়মিয়্যাহ, ৩য় সংস্করণ, ১৪২৯ হি./২০০৮ খ্রি.), পৃ. ২৬, হা/২৭।

[৭]. সুনান আদ-দারেমী, ১ম খণ্ড, পৃ. ৭৯, হা/২০৪, সনদ সহীহ; ‘আব্দুল মুহসিন ইবনু হামাদ ‘আব্বাদ আল-বদর, শারহু হাদীসিন জিবরীল ফী তা‘লীমিদ দ্বীন (রিয়াদ : মাতবা‘আতু সাফীর, ১ম সংস্করণ ১৪২৪ হি./২০০৩ খ্রি.), পৃ. ১৯।

[৮]. আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু মুহাম্মাদ আল-‘আবদারী ইবনুল হাজ্জ, আল-মাদখাল, ১ম খণ্ড (প্রকাশস্থান : দারুল ফিকর, ১৪০১ হি./১৯৮১ থ্রি.), পৃ. ৪৯।

[৯]. ‘আব্দুর রহমান ইবনু ‘আলী ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু জাওযী, ছিফাতুছ ছাফাওয়াহ, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ ফাখূরী ও ড. মুহাম্মাদ রাওয়াস ক্বালা‘আহজী, ৩য় খণ্ড (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, ১৩৯৯ হি./১৯৭৯ খ্রি.), পৃ. ২৫৭, হা/৫১০।

[১০]. মালিক ইবনু আনাস, আল-মুওয়াত্ত্বা, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ মুছত্বফা আল-‘আযমী, ২য় খণ্ড (প্রকাশস্থান বিহীন : মুওয়াস্সাসাতু যাইদ ইবনি সুলতান আলি নিহয়ান, ১ম সংস্করণ ১৪২৫ হি./২০০৪ খ্রি.), পৃ. ৯৯, হা/২৩৩।

[১১]. ‘আব্দুর রহমান ইবনু আবি বাকর জালালুদ্দীন আস-সুয়ূত্বী, তানভীরুল আহালিক শারহ মুওয়াত্ত্বা মালেক, ১ম খণ্ড (মিসর : আল-মাকতাবাতুত তিজারাতিল কুবরা, ১৩৮৯ হি./১৯৬৯ খ্রি.), পৃ. ৭১।

[১২]. আবুল হুসাইন ইবনু ‘আবী ই‘আলা, ত্বাবাক্বাতুল হানাবিলাহ, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ হামিদ আল-ফাকী, ১ম খণ্ড (বৈরূত : দারুল মা‘আরিফাহ, তা.বি.), পৃ. ৩৫০।

[১৩]. আবুল হাসান ‘আলী ইবনি ইসমা‘ঈল আন-নাহবী আল-লাগবী আল-আন্দালুসী লি ইবনি সীদাহ, আল-মুখাছ্ছাছ, তাহক্বীক্ব : খালীল ইবরাহীম জিফাল, ৫ম খণ্ড (বৈরূত : দারু ইহাইয়াইত তুরাছিল ‘আরাবী, ১ম সংস্করণ, ১৪১৭ হি./১৯৯৬ খ্রি.), পৃ. ২২৬-২২৭।

[১৪]. আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আলী আল-হামাভী, আল-মিছবাহুল মুনীর ফী গারীবিশ শারহিল কাবীর, ১ম খণ্ড (মিসর : মাকতাবাতুস সাইয়েদ মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহিদ ইবনু তূবা, ১ম সংস্করণ ১৩২২ হি.), পৃ. ২১।

[১৫]. মুহাম্মাদ ইবনু ‘আব্দিল্লাহ ইবনু ‘আব্দিল্লাহ ইবনু মালিক আত-ত্বা-ই আল-জিয়ানী, ইকমালুল আ‘লাম বিতাসলীসিল কালাম, তাহক্বীক্ব : সা‘দ ইবনু হামদান আল-গামিদী, ১ম খণ্ড (সঊদী ‘আরব : জামি‘আতু উম্মিল ক্বোরা, ১৪০৪ হি./১৯৮৪ খ্রি.), পৃ. ৬১।

[১৬]. মুহাম্মাদ ইবনু মুকাররম ইবনু মানযূর আল-আফরীক্বী, লিসানুল ‘আরব, ৮ম খণ্ড (বৈরূত : দারু সাদর, ১ম সংস্করণ, তা.বি.), পৃ. ৬; মুহাম্মাদ ইবনু আবি বাকর ইবনু ‘আব্দির কাদির আর-রাযী, মুখতারুছ ছিহাহ, তাহক্বীক্ব : মাহমূদ খাতির (বৈরূত : মাকতাবাতু লিবানন নাশিরূন, নতুন সংস্করণ, ১৪১৫ হি./১৯৯৫ খ্রি.), পৃ. ৭৩; আবুল হাসান ‘আলী ইবনু ইসমা‘ঈল ইবনু সাইয়িদিহিল মুরসী, আল-মুহকামু ওয়াল মুহীতুল আ‘যাম, ২য় খণ্ড (বৈরূত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, ২০০০ খ্রি.), পৃ. ৩৩।

[১৭]. والبِدْعُ الشيء الذي يكون أَوّلاً-লিসানুল ‘আরব, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৬; আল-মুহকামু ওয়াল মুহীতুল আ‘যামু, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৩।




সূত্র: আল-ইখলাছ।​
 

Share this page