সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
FORUM BOT

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন : সূরা তওবার ১১১ নং আয়াতের ব্যাখ্যা জানতে চাই।

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,135
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,839
Credits
24,212
উত্তর : আয়াতটির অর্থ : ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মাল খরিদ করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। তারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে। অতঃপর তারা হত্যা করে অথবা নিহত হয়। এর বিনিময়ে তাদের জন্য (জান্নাত লাভের) সত্য ওয়াদা করা হয়েছে তওরাত, ইনজীল ও কুরআনে। আর আল্লাহর চাইতে নিজের অঙ্গীকার অধিক পূরণকারী আর কে আছে? অতএব তোমরা এই ক্রয়-বিক্রয়ের বিনিময়ে (জান্নাতের) সুসংবাদ গ্রহণ কর যা তোমরা তাঁর সাথে করেছ। আর এটাই হ’ল মহা সফলতা’ (তওবাহ ৯/১১১)। উপরোক্ত আয়াতে ১৩ নববী বর্ষে হজ্জের মওসুমে (১২ই যিলহাজ্জ) মক্কায় অনুষ্ঠিত বায়‘আতে কুবরার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। উক্ত বায়‘আতে ইয়াছরিব থেকে আগত ৭৩ জন পুরুষ ও ২ জন নারী শরীক ছিলেন। বায়‘আতের পূর্বে হযরত আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহাহ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার প্রভুর জন্য ও আপনার নিজের জন্য শর্ত পেশ করুন। তখন তিনি বললেন, আমি আমার প্রতিপালকের জন্য এই শর্ত পেশ করছি যে, তোমরা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। আর আমার নিজের জন্য শর্ত করছি যে, তোমরা আমাকে হেফাযত করবে ঐসব বস্ত্ত থেকে যেসব থেকে তোমরা নিজেদের জান ও মাল হেফাযত করে থাক’। তারা বলল, এতে আমাদের কি লাভ যদি আমরা এগুলো করি? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘জান্নাত’। তখন তারা বলল, ‘ব্যবসায়িক লাভের এই চুক্তি আমরা ভঙ্গ করব না এবং ভঙ্গ করার আবেদনও করব না’। তখন অত্র আয়াতটি নাযিল হয় (ইবনু জারীর হা/১৭২৭০; কুরতুবী হা/৩৪৯৪; ফাতহুল বারী ৬/৪; ইবনু কাছীর ৪/২১৮, সনদ হাসান লিগাইরিহী)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তারা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কোন কথার উপরে আপনার নিকটে বায়‘আত করব? তিনি বললেন, (১) সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় আমার কথা শুনবে ও তা মেনে চলবে (২) কষ্টে ও সচ্ছলতায় (আল্লাহর রাস্তায়) খরচ করবে (৩) সর্বদা ন্যায়ের আদেশ দিবে ও অন্যায় থেকে নিষেধ করবে (৪) আল্লাহর জন্য কথা বলবে এভাবে যে, আল্লাহর পথে কোন নিন্দুকের নিন্দাবাদকে পরোয়া করবে না (৫) যখন আমি ইয়াছরিবে তোমাদের কাছে হিজরত করে যাব, তখন তোমরা আমাকে সাহায্য করবে এবং যেভাবে তোমরা নিজেদের ও নিজেদের স্ত্রী ও সন্তানদের হেফাযত করে থাক, সেভাবে আমাকে হেফাযত করবে। বিনিময়ে তোমরা ‘জান্নাত’ লাভ করবে’ (আহমাদ হা/১৪৪৯৬; ছহীহাহ হা/৬৩; সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ৩য় মুদ্রণ ২১২-২১৬ পৃঃ)। অপরদিকে প্রকৃত পক্ষে যারা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করে শাহাদাত বরণ করবে বা কাফেরদের হত্যা করে বিজয় লাভ করবে বা দু’টিই লাভ করবে তাদের পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে (ইবনু কাছীর, ঐ আয়াতের তাফসীর)। স্মর্তব্য যে, বর্তমানে বিশ্বময় জিহাদের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী পূরণ না করেই চটকদার কথা বলে যারা জিহাদের নামে জঙ্গীবাদী কার্যকলাপ করে যাচ্ছে, তারা ইসলামের শত্রু এবং খারেজী চরমপন্থীদের দলভুক্ত। যাদের ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) বহুপূর্বেই মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করে গিয়েছেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৮৯৪; বিস্তারিত দ্রঃ ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই)
সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।
 
Top