‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: কুরআন তিলাওয়াত এর সময় সেজদার আয়াত পেলে অথবা সেজদায় শোকর দিলে সেজদারত অবস্থায় কি শুধু ৩ বার সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা পড়লেই হবে না কি সেই সাথে অন্

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,127
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
34,896
Credits
24,212
উত্তর: সেজদায়ে শোকর এর হুকুম যে কোন সুসংবাদ প্রাপ্তি, সাফল্য অর্জন, প্রত্যাশ পূরণ বা বিপদ মুক্তির পর আল্লাহর দরবারে সেজদায়ে শোকর বা কৃতজ্ঞতা আদায়ের উদ্দেশ্যে সেজদা দেয়া সুন্নত। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে: عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ إِذَا جَاءَهُ أَمْرُ سُرُورٍ أَوْ بُشِّرَ بِهِ خَرَّ سَاجِدًا شَاكِرًا لِلَّهِ ‏
সেজদায়ে শোকরের পদ্ধতি: সুসংবাদ বা দু:সংবাদ থেকে মুক্তির খবর পাওয়ার সাথে সাথে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায়ের উদ্দেশ্যে একটি সেজদা দেয়া। এতে সেজদার বিভিন্ন দুআ ও তাসবীহ পাঠ করা। (যেমন সুবহানা রাব্বিয়াআল আ’লা) তারপর ইচ্ছা হলে অন্যান্য দুআও পাঠ যেতে পারে। কতিপয় জ্ঞাতব্য বিষয়: ▪ক. সেজাদয়ে শোকরের জন্য পবিত্রতা শর্ত নয়। বরং যে অবস্থায় রয়েছে সে অবস্থায় সেজদা দেয়া জায়েয। শরীর পাক থাকুক অথবা নাপাক থাকুক। ▪খ. এমনকি অধিক বিশুদ্ধ মতানুসারে সালাতের অন্যান্য শর্তাবলীও এখানে প্রযোজ্য নয়। কারণ হাদীসে সালাতের যে সকল শর্তাবলী, (যেমন পবিত্রতা অর্জন, কিবলামূখী হওয়া, সতর ঢাকা, মহিলাদের পূর্ণ পদা করা ইত্যাদি) সেজদায়ে শোকরের ব্যাপারে সেগুলো বর্ণিত হয় নি। ▪ গ. এতে তাশাহুদ ও সালাম নেই। ▪ ঘ. এতে একটি মাত্র সেজদা দিতে হবে; দুটি নয়। ▪ ঙ. এতে তাকবীর দেওয়ারও প্রয়োজ নাই। কেননা এ ব্যাপারে দলীল নেই। আর দলীল ব্যাতিরেকে কোন আমল করা শরীয়ত সম্মত নয়। ▃▃▃▃▃▃▃▃ ৩) তেলাওয়াতে সেজদার হুকুম: কুরআনে মোট ১৪টি মতান্তরে ১৫টি আয়াতুস সেজদাহ রয়েছে। তেলাওয়াতকারী সগুলোর কোন একটি তিলাওয়াত করলে তার জন্য একটি সেজদা দেয়া সুন্নতে মুআক্কাদাহ (অধিক নির্ভরযোগ্য মতানুসারে।) সেজাদায়ে তেলাওয়াতের পদ্ধতি ও বিধিবিধান: ▪ক. সালাতের মধ্যে সেজদার আয়াত তেলাওয়াত করলে ‘আল্লাহু আকাবার’ বলে সেজদায় যাওয়া এবং সেজদার দুআ ও তাসবীহগুলরো মধ্য থেকে এক বা একাধিক দুআ পাঠ করা। অত:পর তেলাওয়াতে সেজদার বিখ্যাত দুআটি পাঠ করা। আয়িশাহ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতের বেলা তিলাওয়াতের সেজদাতে এই দু‘আ পাঠ করতেনঃ
নিম্নোক্ত দুআটিও পড়া হাদীস সম্মত:
(হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে ইবনে আব্বার রা. হতে। সুনান তিরমিজী (ইফাঃ)অধ্যায়ঃ ৬/ সফর (أَبْوَابُ السَّفَرِ) পরিচ্ছদঃ সিজদা-এ কুরআনের দু’আ। এ হাদীসটিকে কোন কোন মুহাদ্দিস যঈফ বলেছেন। তবে ইবনে খুযাইমা, হাকিম ও ইবনে হিব্বা প্রমূখ সহীহ বলেছেন, আলবানী হাসান বলেছেন।) তারপর আল্লাহু আকবার বলে সেজদা থেকে উঠে পূণরায় সালাতের জন্য উঠে দাঁড়ানো। ▪খ. ইমাম সাহেব জেহরী সালাত তথা যে সকল সালাতে উচ্চস্বরে কিরাআত পাঠ করতে হয় সে সকল সালাতে (যেমন মাগরিব ও ইশার প্রথম দু রাকাআত এবং ফজরের দু রাকাআতে সেজদার তিলাওয়াত পাঠ করার পর তাৎক্ষণাৎ আল্লাহু আকবার বলে সেজদা দিবে তার অনুসরণ করে মুসল্লীগণও সেজদা দিবে। তারপর আল্লাহু আকবার বলে উঠে দাঁড়াবে। কিন্তু যে যে সকল সালাতে উচ্চ আওয়াযে কিরাতআত নেই সে সকল নামাযে (যেমন যোহর, আসর সালাত) ইমাম সেজদার আয়াত তেলাওয়াত করলেও সেজদা দিবে না। কারণ এতে মুক্তাদীদের সালাতে তালগোল লেগে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ▪গ. একাকি সালাত আদায় করার সময় যখনই তিলাওয়াতের সেজদা পাঠ করবে তখনই সেজদা দিবে। কেননা, হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সা. সালাতে প্রতিবার নিচে নামা ও উপরে উঠার সময় তাকবীর বলতেন। সুতরাং সালাতে সেজদায়ে তেলাওয়াত দেয়ার সময় তাকবীর দিবে এবং উঠার সময়ও তাকবীর দিবে। ▪ঘ. সালাতের বাইরে তেলাওয়াতের সময় কেবল সেজদায় যাওয়ার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে কিন্তু উঠার সময় তাকবীল বলার প্রয়োজন নাই। কেননা হাদীসে কেবল তাকবীর দেয়ার সময় আল্লাহু আকবার বলার কথা এসেছে। সেজদা থেকে উঠার সময় তাকবীর বলার কথা আসে নি। যেমন ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, كَانَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ عَلَيْنَا القُرْآنَ, فَإِذَا مر بِالسَّجْدَةِ كبر وَسَجَدَ وَسَجَدْنَا
▪ ঙ. সালাতের বাইরে তেলাওয়াতের সেজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর দেয়ার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে কিন্তু সেজদা থেকে উঠার সময় তাকবীর দেয়ার কথা বর্ণিত হয় নি (যেমনটি উপরোক্ত হাদীস থেকে স্পষ্ট হয়েছে)। তাই উঠার সময় তাকবীর দেয়ার প্রয়োজন নাই। ▪ চ. সালাতের বাইরে কুরআন তিলাওয়াতের সেজদার জন্য পবিত্রতা শর্ত নয়। ▪ ছ. এতে তাশাহুদ বা সালাম নেই। ▪ জ. এতে একটি মাত্র সেজদা দিতে হবে; দুটি নয়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে একমাত্র তাঁর উদ্দেশ্যে অধিক পরিমানে সেজদার মাধ্যমে তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায়কারী নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা হিসেবে কবুল করে নিন। আমীন। আল্লাহু আলাম। ▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬ উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (মাদানী) দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
 

Share this page