সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: কাউকে শহীদ বলার হুকুম কী?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,147
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,671
Credits
24,212
উত্তর: কাউকে শহীদ বলা দু’ভাবে হতে পারে। (১) নির্দিষ্ট কোনো কাজকে উল্লেখ করে শহীদ বলা। এভাবে বলা, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে নিহত হলো সে শহীদ, নিজের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেলে শহীদ, প্লেগ রোগে মারা গেলে শহীদ---। এভাবে বলা জায়েয আছে। কেননা এখানে আপনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস অনুযায়ী সাক্ষ্য প্রদান করছেন। (২) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দিষ্ট করে যাকে শহীদ বলেছেন এবং সমস্ত মুসলিম যাকে শহীদ বলে ঘোষণা দিয়েছে, তাকে ব্যতীত অন্য কাউকে নির্দিষ্ট করে শহীদ বলা জায়েয নেই। ইমাম বুখারী এভাবে একটি অধ্যায় রচনা করেছেন যে, “একথা বলা যাবে না যে অমুক ব্যক্তি শহীদ”। ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন, অর্থাৎ অহীর মাধ্যমে অবগত হওয়া ব্যতীত অকাট্যভাবে কারও জন্য শাহাদাতের ফায়সালা দেওয়া যাবে না। তিনি সম্ভবত উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর একটি ভাষণের দিকে ইংগিত করেছেন। তিনি বলেছেন, তোমরা যুদ্ধ ক্ষেত্রে বলে থাক অমুক ব্যক্তি শহীদ, অমুক শহীদ হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে। খবরদার এভাবে বলো না। কারণ, তার অন্য উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। তোমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মতো বল যে, “যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মারা গেল অথবা জীবন দিল সে শহীদ”।[1] কোনো বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে হলে সে বিষয়ে ইলম থাকতে হবে। শহীদ হওয়ার শর্ত হলো আল্লাহর দীনকে সমুন্নত করার জন্য জিহাদ করতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করা। আর এটি অন্তরের গোপন অবস্থা। তা জানার কোনো উপায় নেই। এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَثَلُ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَنْ يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِهِ»

“আল্লাহর পথে জিহাদকারীর দৃষ্টান্ত হলো, আর আল্লাহই ভালো জানেন কে আল্লাহর পথে জিহাদ করে।”[2] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,
«وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يُكْلَمُ أَحَدٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَنْ يُكْلَمُ فِي سَبِيلِهِ إِلَّا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَاللَّوْنُ لَوْنُ الدَّمِ وَالرِّيحُ رِيحُ الْمِسْكِ»

“ঐ সত্ত্বার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে শরীরে জখম হবে, আর আল্লাহই ভালো জানেন কে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে আহত হয়, সে কিয়ামতের দিন এমতাবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তার ক্ষত স্থান হতে রক্ত ঝরতে থাকবে, রং হবে রক্তের, কিন্তু তার গন্ধ হবে মিসকের সুঘ্রাণের ন্যায়।”[3] যারা জিহাদ করে নিহত হয়, তাদের বাহ্যিক অবস্থা ভালো। তাদের জন্য কল্যাণ কামনা করি, কিন্তু তাদেরকে জান্নাতের সার্টিফিকেট প্রদান করি না। তাদের প্রতি খারাপ ধারণাও করি না। তবে দুনিয়াতে তাদের উপর শহীদের হুকুম প্রযোজ্য হবে। জিহাদের ময়দানে নিহত ব্যক্তিকে তার পরিহিত কাপড়েই রক্ত সহকারে দাফন করা হবে এবং তার জানাযা পড়া হবে না। আর যদি অন্যভাবে শহীদ হয়ে থাকে, তবে তাকে গোসল দেওয়া হবে, কাফন পরানো হবে এবং জানাযার সালাত পড়া হবে। কাউকে ‘শহীদ’ হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার অর্থ তাকে জান্নাতের সাক্ষ্য দেওয়া। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে শহীদ বলেছেন, তাকে ব্যতীত অন্য কাউকে শহীদ বলেন না। ইমাম ইবন তাইমিয়ার মতে মুসলিমদের সর্বসম্মতিক্রমে যাকে শহীদ বলা হয়েছে, তাকে শহীদ বলা যাবে।
সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম। লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।
 
Top