উত্তর: আয়না দেখার প্রচলিত দুআটি সঠিক নয়। কেননা এ মর্মে একাধিক হাদিস পাওয়া গেলেও হাদিস বিশারদগণের দৃষ্টিতে কোনটি সহিহ নয়। এগুলোর মধ্যে কোনটি বানোয়াট আর কোনটি মারাত্মক পর্যায়ের দুর্বল।
সাধারণ মুসলিম সমাজে আয়না দেখার দুআ হিসেবে যে দুআটি সর্বাধিক প্রচলিত তা হল:
১. এতে হুসাইন ইবনে আবিস সারি (الحسين بن أبي السري) নামক একজন বর্ণনাকারী আছে, সে মিথ্যুক। বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আবু আরুবা আল হাররানি [জন্ম: ২২০ হি. এর পরে-মৃত্যু: ৩১৮ হি.] তাকে মিথ্যুক প্রতিপন্ন করেছেন।
অনুরূপভাবে তার (উক্ত বর্ণনাকারীর) ভাই মুহাম্মদ ইবনুস আবিস সারীও তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। (তাহযিবুত তাহযিব ২/৩১৫)
২. এতে আব্দুর রহমান ইবনে ইসহাক নামক আরেকজন বর্ণনাকারী আছে। সে মাতরূক (পরিত্যাজ্য)। ইমাম আহমদ প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ তাকে ‘পরিত্যাজ্য বলে ঘোষণা করেছেন। (আল মীযান ২/৩১৫)
এ ছাড়াও আয়না দেখার দুআ সংক্রান্ত আরও কিছু হাদিস পাওয়া যায় কিন্তু কোনটাই সহিহ নয়।
যেমন:
– শাইখ আলাবনির দৃষ্টিতে উক্ত হাদিসটি যইফ বা দুর্বল। [আল কালিমুত তাইয়েব, পৃষ্ঠা নং ২২৩]
তবে সাধারণভাবে আল্লাহর নিকট সচ্চরিত্র প্রার্থনা করার জন্য অনুরূপ একটি দুআ সহিহ সনদে সাব্যস্ত হয়েছে। তা হল:
অর্থ: “হে আল্লাহ, তুমি আমার দৈহিক গঠন যেমন সুন্দর করেছো তেমনি আমার চরিত্রকেও সুন্দর করে দাও।” [মুসনাদ আহমদ। শাইখ আলবানী রহঃ মিশকাতুল মাসাবীহ কিতাবের তাহকিকে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। হাদিস নং ৫০৯৯]
❑ তাহলে আয়না দেখার সময় কি কোনও দুআ পড়া উচিৎ নয়?
এ মর্মে যেহেতু বিশেষ কোন দুআ সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয় নি সেহেতু অন্যান্য কাজ করার আগে যেভাবে ‘বিসমিল্লাহ’ (আল্লাহর নামে শুরু) পাঠ করতে হয় এ ক্ষেত্রেও তাই যথেষ্ট। আল্লাহু আলাম।
সাধারণ মুসলিম সমাজে আয়না দেখার দুআ হিসেবে যে দুআটি সর্বাধিক প্রচলিত তা হল:
الْحَمْدُ لِلَّهِ ، اللَّهُمَّ كَمَا حَسَّنْتَ خَلْقِي فَحَسِّنْ خُلُقِي
উচ্চারণ: “আল হামদুলিল্লাহ, আল্লা-হুম্মা, কামা হাসসানতা খালক্বী ফা হাসসিন খুলুক্বী”। (সকল প্রশংসা আল্লাহর, হে আল্লাহ, তুমি আমার দৈহিক গঠন যেমন সুন্দর করেছো তেমনি আমার চরিত্রকেও সুন্দর করে দাও।) কিন্তু দু:খের বিষয় হল, বিজ্ঞ মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে এ সংক্রান্ত হাদিসটি মউযু বা বানোয়াট। তারা বলেছেন,هذا الحديث رواه ابن السني في “عمل اليوم والليلة” (163) من طريق الْحُسَيْن بْن أَبِي السَّرِيِّ ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَعْدٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ : ” أَنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا نَظَرَ وَجْهَهُ فِي الْمِرْآةِ قَالَ: (الْحَمْدُ لِلَّهِ ، اللَّهُمَّ كَمَا حَسَّنْتَ خَلْقِي فَحَسِّنْ خُلُقِي) ” .
وهذا إسناد موضوع: ابن أبي السري كذاب ، كذبه أبو عروبة ، وكذبه أخوه محمد.
انظر : “تهذيب التهذيب” (2 /315) .
وعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ متروك ، تركه أحمد وغيره .
انظر: “الميزان” (2/548)
এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইবনুস সুন্নি তার ’আমালুল ইয়াউমি ওয়াল লায়লাহ’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠা নং ১৬৩) কিন্তু এর সনদটি মউযু বা বানোয়াট। (কেননা এর বর্ণনা সূত্রে দুটি আপত্তি রয়েছে। যথা:)وهذا إسناد موضوع: ابن أبي السري كذاب ، كذبه أبو عروبة ، وكذبه أخوه محمد.
انظر : “تهذيب التهذيب” (2 /315) .
وعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ متروك ، تركه أحمد وغيره .
انظر: “الميزان” (2/548)
১. এতে হুসাইন ইবনে আবিস সারি (الحسين بن أبي السري) নামক একজন বর্ণনাকারী আছে, সে মিথ্যুক। বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আবু আরুবা আল হাররানি [জন্ম: ২২০ হি. এর পরে-মৃত্যু: ৩১৮ হি.] তাকে মিথ্যুক প্রতিপন্ন করেছেন।
অনুরূপভাবে তার (উক্ত বর্ণনাকারীর) ভাই মুহাম্মদ ইবনুস আবিস সারীও তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। (তাহযিবুত তাহযিব ২/৩১৫)
২. এতে আব্দুর রহমান ইবনে ইসহাক নামক আরেকজন বর্ণনাকারী আছে। সে মাতরূক (পরিত্যাজ্য)। ইমাম আহমদ প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ তাকে ‘পরিত্যাজ্য বলে ঘোষণা করেছেন। (আল মীযান ২/৩১৫)
এ ছাড়াও আয়না দেখার দুআ সংক্রান্ত আরও কিছু হাদিস পাওয়া যায় কিন্তু কোনটাই সহিহ নয়।
যেমন:
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي سَوَّى خَلْقِي فَعَدَلَهُ ، وصَوَّرَ صُورَةَ وَجْهِي فَحَسَّنَهَا، وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ الحمد لله ، أكمل خلقي ، وحسن صورتي ، وَزَانَ مِنِّي مَا شَانَ مِنْ غَيْرِي
(উৎস: islamqa-সংক্ষেপায়িত)– শাইখ আলাবনির দৃষ্টিতে উক্ত হাদিসটি যইফ বা দুর্বল। [আল কালিমুত তাইয়েব, পৃষ্ঠা নং ২২৩]
তবে সাধারণভাবে আল্লাহর নিকট সচ্চরিত্র প্রার্থনা করার জন্য অনুরূপ একটি দুআ সহিহ সনদে সাব্যস্ত হয়েছে। তা হল:
اللَّهُمَّ كَمَا حَسَّنْتَ خَلْقِي فَأَحْسِنْ خُلُقِي
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা কামা হাসসানতা খালক্বী ফা আহসিন খুলুক্বী।অর্থ: “হে আল্লাহ, তুমি আমার দৈহিক গঠন যেমন সুন্দর করেছো তেমনি আমার চরিত্রকেও সুন্দর করে দাও।” [মুসনাদ আহমদ। শাইখ আলবানী রহঃ মিশকাতুল মাসাবীহ কিতাবের তাহকিকে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। হাদিস নং ৫০৯৯]
❑ তাহলে আয়না দেখার সময় কি কোনও দুআ পড়া উচিৎ নয়?
এ মর্মে যেহেতু বিশেষ কোন দুআ সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয় নি সেহেতু অন্যান্য কাজ করার আগে যেভাবে ‘বিসমিল্লাহ’ (আল্লাহর নামে শুরু) পাঠ করতে হয় এ ক্ষেত্রেও তাই যথেষ্ট। আল্লাহু আলাম।
উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।।
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।।
Last edited by a moderator: