পাপ (ফাসেকী) ও বিদআতী কাজের জন্য কাউকে বয়কট করা সম্পর্কে শাইখ আব্দুল আজিজ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
হাদিস: কোনো মুসলিমের জন্য তার (মুসলিম) ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি কথা না বলে থাকা অনুমোদিত নয়। তিন দিন অনুমোদিত। কিন্তু দুনিয়াবি বিষয়ে যদি তাদের ভেতরে কোনো মতবিরোধ হয় সেক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে। মামলা-মোকাদ্দমা নিয়ে বিবাদের ক্ষেত্রে সে তাকে তিন বা তার কম দিনের জন্য পরিহার করতে পারে। তবে তিন দিনের বেশি তাকে বর্জন করে চলার অধিকার নেই। তাদের উভয়ের মাঝে সে-ই উত্তম যে প্রথমে সালাম দিবে।
কিন্তু তার পাপের জন্য তাকে বয়কট করা হয়ে থাকলে সেটি তিন, চার বা তার বেশি দিনে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং যারা প্রকাশ্যে পাপ করেছে তাদের তিন দিনের বেশি, এক বছরের বেশি, দুই বছরের বেশি এবং তার চেয়েও অধিক সময়ের জন্য বয়কট করাটা জায়েজ এবং বয়কট করাটাই নির্দেশিত হবে। যতক্ষণ অবধি পাপী তওবা না করছে, যতক্ষণ অবধি সে নত স্বীকার না করছে, যতক্ষণ অবধি তার ভ্রষ্টতা এবং পাপ থেকে ফিরে না আসছে।
তিন জন সাহাবী কোনো শরঈ ওযর ব্যতীত তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবীগণ তাদেরকে ৫০ দিনের জন্য বয়কট করেছিলেন। (কাব বিন মালিক, মুরারাহ বিন রাবী, হিলাল বিন উমাইয়াহ)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে বয়কট করেছিলেন এবং অন্যান্য লোকেদেরও তাদের বয়কট করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, অতঃপর পঞ্চাশ দিন অতিবাহিত হলে তারা আল্লাহর নিকট তওবা করে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে সংবর্ধনা করতে বলে তাদের তওবার খবর জানান দেন।
পাপ এবং বিদআতের জন্য বয়কট করা তিন দিনের জন্য সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি সেই ব্যক্তির অবস্থার উপর নির্ভর করে যে বিদ'আত করেছে এবং যার দ্বারা পাপ সংঘটিত হয়ে তা সে প্রকাশ্যে এনেছে।
যখন সে পাপ কাজ এবং ভ্রষ্টতা পরিত্যাগ করে তওবা করবে তখন তার মুসলিম ভাই তাকে সংবর্ধনা জানাবে। আর যখন সে প্রকাশ্যে তার পাপের বা বিদআতের উপর অটল থাকবে তখন তাকে বয়কট করাটাই উচিত কাজ হবে। সে তার পাপ থেকে তওবা না করা পর্যন্ত তাকে বয়কট করা জায়েজ, যদি না তাকে বয়কট করলে অনিষ্ট হতে পারে এবং তার ফলশ্রুতিতে অধিক মন্দ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে অনিষ্টকে প্রশ্রয় দিয়ে অধিক মন্দকে ডেকে আনা পরিহার করতে তাকে বয়কট করা উচিত নয়, কেননা শরীয়ার নীতি অনুযায়ী দুটি মন্দ কাজের মধ্যে ছোটটি করা হবে যাতে বড় অনিষ্টকে পরিহার করা যায় এবং ছোট প্রাপ্তির বিষয়টি উপেক্ষা করে দুটি লাভের ভেতরে অধিক লাভজনক বিষয়টি হাসিল করা যায়।
মানুষের মধ্যে মতভেদের ক্ষেত্রে এটি একটি উত্তম অবস্থান। সে পাপ এবং বিদ'আতের উপর অটল থাকলে পাপী এবং বিদআতীকে সংশোধনে তাকে বয়কট করাটাই শ্রেয়।
সে তওবা করে রুজু করলে তার মুসলিম ভাই তাকে স্বাগতম জানাবে। আর যখন এরূপ বয়কট তার পাপ বা বিদআতের চাইতে মুসলিমদের জন্য অনিষ্ট, ফিতনা এবং ক্রমান্বয়ে অধিক মন্দ সৃষ্টি করবে বা তার মন্দ আর দুর্ভোগকে বৃদ্ধি করবে এমন আশঙ্কা থাকলে বয়কট না করাই উচিত হবে। তবে সে সবসময়ই তাকে পথ দেখাবে এবং নসীহত করবে যতক্ষণ না সে সঠিক পথে ফিরে এসে নিজের ভুল বুঝতে পারছে। তার ভাই তাকে তার কাজের জন্য ঘৃণা এবং অসম্মতি প্রকাশ করবে যতক্ষণ সে উক্ত কাজ হতে না ফিরছে। একই সাথে তার অনিষ্ট বেড়ে যাবার, অনিষ্টকে কমানোর এবং মানুষকে তা থেকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি খেয়াল রাখবে। জ্বি।
আরবি:
لا يهجر المسلم أخاه فوق ثلاث أما الثلاث فإنها رخصة، لكن هذا الهجر فيما يتعلق بأمور الدنيا، إذا صار بينه وبين أخيه خصومة. نزاع.. دعاوى، فله أن يهجره ثلاثاً فأقل، وليس له أن يهجره فوق ثلاث، وخيرهما الذي يبدأ بالسلام.
أما إذا كان الهجر لله للمعاصي فهذا لا يتقيد بثلاث ولا بأربع ولا بأكثر، بل يجوز الهجر ويشرع الهجر لمن أظهر المعاصي ولو أكثر من ثلاثة أيام ولو سنة ولو سنتين، ولو أكثر منها، حتى يتوب العاصي، حتى يقلع، حتى يرجع عن ضلاله ومعصيته.
وقد هجر النبي ﷺ والصحابة ثلاثة من الصحابة خمسين ليلة لما تخلفوا عن غزوة تبوك بغير عذر شرعي، هجرهم النبي ﷺ وأمر الناس بهجرهم، حتى مضى عليهم خمسون ليلة ثم تاب الله عليهم، فأمر النبي ﷺ بالسلام عليهم وأعلن توبتهم عليه الصلاة والسلام.
فالمقصود: أن الهجر للمعاصي والبدع لا يتقيد بثلاثة أيام، بل ذلك يتقيد بحال صاحب البدعة صاحب المعصية التي أعلنها، فمتى تاب وأقلع عن معصيته وعن بدعته سلم عليه إخوانه، ومتى أصر على المعصية الظاهرة أو البدعة الظاهرة استحق أن يهجر، وشرع هجره حتى يتوب إلى الله من ذلك، إلا إذا كان هجره يزيد الشر ويترتب عليه مفاسد أكثر، فإنه لا يهجر حينئذ دفعاً للمضرة الكبرى والشر الأكبر على حسب قاعدة الشريعة في ارتكاب أدنى المفسدتين لتفويت كبراهما، وفي تحصيل أعلى المصلحتين ولو بفوات الدنيا منهما.
والحاصل: أنه مقام عظيم يتفاوت فيه الناس، فمتى كان الهجر أصلح للعاصي والمبتدع هجر المدة التي يبقى فيها مصراً على المعصية والبدعة، فإذا تاب وأعلن رجوعه سلم عليه إخوانه المسلمون، ومتى كان الهجر يزيد الشر ويزيد الفتنة ويترتب عليه شر أكثر من معصيته وبدعته على المسلمين أو هو يزداد شره وبلاؤه فإنه حينئذ لا يهجر ولكن ينصح ويوجه دائماً لعله يرجع إلى الصواب ويبين له خطؤه، ويظهر له من إخوانه الكراهة لعمله والاستنكار لعمله حتى يرجع من ذلك، مع العناية بما يدفع شره، ويقلل شره، ويسبب سلامة الناس منه. نعم.
অনুবাদ: সাফিন চৌধুরী
উৎস: শাইখ আব্দুল আজিজ বিন বায এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর ফতোয়া - লিংক
Facebook - Shafin Chowdhury
হাদিস: কোনো মুসলিমের জন্য তার (মুসলিম) ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি কথা না বলে থাকা অনুমোদিত নয়। তিন দিন অনুমোদিত। কিন্তু দুনিয়াবি বিষয়ে যদি তাদের ভেতরে কোনো মতবিরোধ হয় সেক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে। মামলা-মোকাদ্দমা নিয়ে বিবাদের ক্ষেত্রে সে তাকে তিন বা তার কম দিনের জন্য পরিহার করতে পারে। তবে তিন দিনের বেশি তাকে বর্জন করে চলার অধিকার নেই। তাদের উভয়ের মাঝে সে-ই উত্তম যে প্রথমে সালাম দিবে।
কিন্তু তার পাপের জন্য তাকে বয়কট করা হয়ে থাকলে সেটি তিন, চার বা তার বেশি দিনে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং যারা প্রকাশ্যে পাপ করেছে তাদের তিন দিনের বেশি, এক বছরের বেশি, দুই বছরের বেশি এবং তার চেয়েও অধিক সময়ের জন্য বয়কট করাটা জায়েজ এবং বয়কট করাটাই নির্দেশিত হবে। যতক্ষণ অবধি পাপী তওবা না করছে, যতক্ষণ অবধি সে নত স্বীকার না করছে, যতক্ষণ অবধি তার ভ্রষ্টতা এবং পাপ থেকে ফিরে না আসছে।
তিন জন সাহাবী কোনো শরঈ ওযর ব্যতীত তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবীগণ তাদেরকে ৫০ দিনের জন্য বয়কট করেছিলেন। (কাব বিন মালিক, মুরারাহ বিন রাবী, হিলাল বিন উমাইয়াহ)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে বয়কট করেছিলেন এবং অন্যান্য লোকেদেরও তাদের বয়কট করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, অতঃপর পঞ্চাশ দিন অতিবাহিত হলে তারা আল্লাহর নিকট তওবা করে। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে সংবর্ধনা করতে বলে তাদের তওবার খবর জানান দেন।
পাপ এবং বিদআতের জন্য বয়কট করা তিন দিনের জন্য সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি সেই ব্যক্তির অবস্থার উপর নির্ভর করে যে বিদ'আত করেছে এবং যার দ্বারা পাপ সংঘটিত হয়ে তা সে প্রকাশ্যে এনেছে।
যখন সে পাপ কাজ এবং ভ্রষ্টতা পরিত্যাগ করে তওবা করবে তখন তার মুসলিম ভাই তাকে সংবর্ধনা জানাবে। আর যখন সে প্রকাশ্যে তার পাপের বা বিদআতের উপর অটল থাকবে তখন তাকে বয়কট করাটাই উচিত কাজ হবে। সে তার পাপ থেকে তওবা না করা পর্যন্ত তাকে বয়কট করা জায়েজ, যদি না তাকে বয়কট করলে অনিষ্ট হতে পারে এবং তার ফলশ্রুতিতে অধিক মন্দ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে অনিষ্টকে প্রশ্রয় দিয়ে অধিক মন্দকে ডেকে আনা পরিহার করতে তাকে বয়কট করা উচিত নয়, কেননা শরীয়ার নীতি অনুযায়ী দুটি মন্দ কাজের মধ্যে ছোটটি করা হবে যাতে বড় অনিষ্টকে পরিহার করা যায় এবং ছোট প্রাপ্তির বিষয়টি উপেক্ষা করে দুটি লাভের ভেতরে অধিক লাভজনক বিষয়টি হাসিল করা যায়।
মানুষের মধ্যে মতভেদের ক্ষেত্রে এটি একটি উত্তম অবস্থান। সে পাপ এবং বিদ'আতের উপর অটল থাকলে পাপী এবং বিদআতীকে সংশোধনে তাকে বয়কট করাটাই শ্রেয়।
সে তওবা করে রুজু করলে তার মুসলিম ভাই তাকে স্বাগতম জানাবে। আর যখন এরূপ বয়কট তার পাপ বা বিদআতের চাইতে মুসলিমদের জন্য অনিষ্ট, ফিতনা এবং ক্রমান্বয়ে অধিক মন্দ সৃষ্টি করবে বা তার মন্দ আর দুর্ভোগকে বৃদ্ধি করবে এমন আশঙ্কা থাকলে বয়কট না করাই উচিত হবে। তবে সে সবসময়ই তাকে পথ দেখাবে এবং নসীহত করবে যতক্ষণ না সে সঠিক পথে ফিরে এসে নিজের ভুল বুঝতে পারছে। তার ভাই তাকে তার কাজের জন্য ঘৃণা এবং অসম্মতি প্রকাশ করবে যতক্ষণ সে উক্ত কাজ হতে না ফিরছে। একই সাথে তার অনিষ্ট বেড়ে যাবার, অনিষ্টকে কমানোর এবং মানুষকে তা থেকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি খেয়াল রাখবে। জ্বি।
আরবি:
لا يهجر المسلم أخاه فوق ثلاث أما الثلاث فإنها رخصة، لكن هذا الهجر فيما يتعلق بأمور الدنيا، إذا صار بينه وبين أخيه خصومة. نزاع.. دعاوى، فله أن يهجره ثلاثاً فأقل، وليس له أن يهجره فوق ثلاث، وخيرهما الذي يبدأ بالسلام.
أما إذا كان الهجر لله للمعاصي فهذا لا يتقيد بثلاث ولا بأربع ولا بأكثر، بل يجوز الهجر ويشرع الهجر لمن أظهر المعاصي ولو أكثر من ثلاثة أيام ولو سنة ولو سنتين، ولو أكثر منها، حتى يتوب العاصي، حتى يقلع، حتى يرجع عن ضلاله ومعصيته.
وقد هجر النبي ﷺ والصحابة ثلاثة من الصحابة خمسين ليلة لما تخلفوا عن غزوة تبوك بغير عذر شرعي، هجرهم النبي ﷺ وأمر الناس بهجرهم، حتى مضى عليهم خمسون ليلة ثم تاب الله عليهم، فأمر النبي ﷺ بالسلام عليهم وأعلن توبتهم عليه الصلاة والسلام.
فالمقصود: أن الهجر للمعاصي والبدع لا يتقيد بثلاثة أيام، بل ذلك يتقيد بحال صاحب البدعة صاحب المعصية التي أعلنها، فمتى تاب وأقلع عن معصيته وعن بدعته سلم عليه إخوانه، ومتى أصر على المعصية الظاهرة أو البدعة الظاهرة استحق أن يهجر، وشرع هجره حتى يتوب إلى الله من ذلك، إلا إذا كان هجره يزيد الشر ويترتب عليه مفاسد أكثر، فإنه لا يهجر حينئذ دفعاً للمضرة الكبرى والشر الأكبر على حسب قاعدة الشريعة في ارتكاب أدنى المفسدتين لتفويت كبراهما، وفي تحصيل أعلى المصلحتين ولو بفوات الدنيا منهما.
والحاصل: أنه مقام عظيم يتفاوت فيه الناس، فمتى كان الهجر أصلح للعاصي والمبتدع هجر المدة التي يبقى فيها مصراً على المعصية والبدعة، فإذا تاب وأعلن رجوعه سلم عليه إخوانه المسلمون، ومتى كان الهجر يزيد الشر ويزيد الفتنة ويترتب عليه شر أكثر من معصيته وبدعته على المسلمين أو هو يزداد شره وبلاؤه فإنه حينئذ لا يهجر ولكن ينصح ويوجه دائماً لعله يرجع إلى الصواب ويبين له خطؤه، ويظهر له من إخوانه الكراهة لعمله والاستنكار لعمله حتى يرجع من ذلك، مع العناية بما يدفع شره، ويقلل شره، ويسبب سلامة الناس منه. نعم.
অনুবাদ: সাফিন চৌধুরী
উৎস: শাইখ আব্দুল আজিজ বিন বায এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর ফতোয়া - লিংক
Facebook - Shafin Chowdhury
Last edited: