- Credit
- 1,533
- Thread starter
- #1
জ্ঞাতব্য ১: কোনো হাদীসের সনদ সহীহ হওয়া মানেই সেটা সুন্নাহ নয়। কারণ হাদীসের মাঝে:
এজন্য অবশ্যই আপনার নিকট সহীহ প্রমাণিত হাদীসটির ক্ষেত্রে সালাফদের আমল আছে কিনা তা দেখবেন এবং তার অর্থ ও ফিকহ বোঝার জন্য আলেমদের কথামালা বিবেচনায় রাখবেন।
জ্ঞাতব্য ২: কিছু সুন্নাহ রয়েছে, যেগুলো সহীহ সনদ বিশিষ্ট মারফূ' হাদীসে পাওয়া যায় না। বরং
জ্ঞাতব্য ৩: কোনো বিষয় অনুসৃত সুন্নাহ হিসেবে সাব্যস্ত হলে এবং লোকজনের সেটা পরিত্যাগ করা স্পষ্ট হলেই কেবল সেটাকে "পরিত্যক্ত সুন্নাহ" বলা যাবে। আর এরকম সুন্নাহ কেউ জাগ্রত করলে নিজে করার সওয়াব তো পাবেই, পাশাপাশি কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ করবে তাদের সওয়াবও সে পাবে; কারো সওয়াবে কোনো কমতি করা হবে না।
ইমাম মুসলিম রহিমাহুল্লাহ (হা/১০১৭) মুনযির ইবনু জারীর থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আমরা ভোরের দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় তার কাছে পাদুকাবিহীন, বস্ত্রহীন, গলায় চামড়ার আবা পরিহিত এবং তরবারি ঝুলিয়ে একদল লোক আসল। এদের অধিকাংশ কিংবা সকলেই মুযার গোত্রের লোক ছিল। অভাব অনটনে তাদের এ করুণ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখমণ্ডল পরিবর্তিত ও বিষন্ন হয়ে গেল। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, অতঃপর বেরিয়ে আসলেন। তিনি বিলাল রাযিয়াল্লাহু আনহুকে আযান দিতে নির্দেশ দিলেন। বিলাল রাযিয়াল্লাহু আনহু আযান ও ইকামাত দিলেন।
সালাত শেষ করে তিনি উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে মানব জাতি! তোমরা নিজেদের প্রতিপালককে ভয় করো যিনি তোমাদেরকে একটি মাত্র ব্যক্তি থেকে (আদম) থেকে সৃষ্টি করেছেন। ..... নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী"- (সূরা আন নিসা ৪ঃ ১)।
অতঃপর তিনি সূরা হাশরের শেষের দিকের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। প্রত্যেক ব্যক্তি যেন ভবিষ্যতের জন্য কী সঞ্চয় করেছে সেদিকে লক্ষ্য করে"- (সুরাহ আল হাশর ৫৯ঃ ১৮)।
অতঃপর উপস্থিত লোকদের কেউ তার দীনার, কেউ দিরহাম, কেউ কাপড়, কেউ এক সা' আটা ও কেউ এক সা' খেজুর দান করল। অবশেষে তিনি বললেন, "অন্ততঃ এক টুকরা খেজুর হলেও নিয়ে আসো"। তখন আনসার সম্পপ্রদায়ের এক ব্যক্তি একটি বিরাট থলি নিয়ে আসলেন। এর ভার তার হাত বহন করতে পারছিল না। সাহাবী বলেন, অতঃপর লোকেরা সারিবদ্ধভাবে একের পর এক দান করতে থাকল। ফলে খাদ্য ও কাপড়ের দু'টি স্তুপ হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মুবারক খাঁটি সোনার ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে হাসতে লাগল।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন উত্তম প্রথা বা কাজের প্রচলন করে সে তার কাজের সাওয়াব পাবে এবং তার পরে যারা তার এ কাজ দেখে তা করবে সে এর বিনিময়েও সাওয়াব পাবে। তবে এতে তাদের সাওয়াব কোন অংশে কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে (ইসলামের পরিপন্থী) কোন খারাপ প্রথা বা কাজের প্রচলন করবে, তাকে তার এ কাজের বোঝা (গুনাহ এবং শাস্তি) বহন করতে হবে। তারপর যারা তাকে অনুসরণ করে এ কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ বোঝাও তাকে বইতে হবে। তবে এতে তাদের অপরাধ ও শাস্তি কোন অংশেই কমবে না।"
আল্লাহই তাওফীকদাতা।
আরও পড়ুন - পরিত্যক্ত সুন্নাহ বোঝার মূলনীতি কি? বর্ণিত যেসব হাদীসে লোকজনের আমল নেই, সেগুলোকে কি আমরা পরিত্যক্ত সুন্নাহ হিসেবে গণ্য করব?
- 'আম মাখসূস তথা নির্দিষ্টতা-বোধক ব্যাপকার্থের হাদীস আছে।
- মুতলাক মুকায়্যাদ তথা শর্তযুক্ত হাদীস আছে।
- মুহকাম নয়, বরং মুতাশাবিহ হাদীস আছে।
এজন্য অবশ্যই আপনার নিকট সহীহ প্রমাণিত হাদীসটির ক্ষেত্রে সালাফদের আমল আছে কিনা তা দেখবেন এবং তার অর্থ ও ফিকহ বোঝার জন্য আলেমদের কথামালা বিবেচনায় রাখবেন।
জ্ঞাতব্য ২: কিছু সুন্নাহ রয়েছে, যেগুলো সহীহ সনদ বিশিষ্ট মারফূ' হাদীসে পাওয়া যায় না। বরং
- সাহাবীদের থেকে বর্ণিত হয় অথবা
- আলেমদের স্পষ্ট ভাষ্য থাকে অথবা
- আহলুস সুন্নাহর আলেমগণ সেটিকে সুন্নাহ বলে অভিহিত করেছেন।
জ্ঞাতব্য ৩: কোনো বিষয় অনুসৃত সুন্নাহ হিসেবে সাব্যস্ত হলে এবং লোকজনের সেটা পরিত্যাগ করা স্পষ্ট হলেই কেবল সেটাকে "পরিত্যক্ত সুন্নাহ" বলা যাবে। আর এরকম সুন্নাহ কেউ জাগ্রত করলে নিজে করার সওয়াব তো পাবেই, পাশাপাশি কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ করবে তাদের সওয়াবও সে পাবে; কারো সওয়াবে কোনো কমতি করা হবে না।
ইমাম মুসলিম রহিমাহুল্লাহ (হা/১০১৭) মুনযির ইবনু জারীর থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, আমরা ভোরের দিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় তার কাছে পাদুকাবিহীন, বস্ত্রহীন, গলায় চামড়ার আবা পরিহিত এবং তরবারি ঝুলিয়ে একদল লোক আসল। এদের অধিকাংশ কিংবা সকলেই মুযার গোত্রের লোক ছিল। অভাব অনটনে তাদের এ করুণ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখমণ্ডল পরিবর্তিত ও বিষন্ন হয়ে গেল। তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, অতঃপর বেরিয়ে আসলেন। তিনি বিলাল রাযিয়াল্লাহু আনহুকে আযান দিতে নির্দেশ দিলেন। বিলাল রাযিয়াল্লাহু আনহু আযান ও ইকামাত দিলেন।
সালাত শেষ করে তিনি উপস্থিত মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে মানব জাতি! তোমরা নিজেদের প্রতিপালককে ভয় করো যিনি তোমাদেরকে একটি মাত্র ব্যক্তি থেকে (আদম) থেকে সৃষ্টি করেছেন। ..... নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী"- (সূরা আন নিসা ৪ঃ ১)।
অতঃপর তিনি সূরা হাশরের শেষের দিকের এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। প্রত্যেক ব্যক্তি যেন ভবিষ্যতের জন্য কী সঞ্চয় করেছে সেদিকে লক্ষ্য করে"- (সুরাহ আল হাশর ৫৯ঃ ১৮)।
অতঃপর উপস্থিত লোকদের কেউ তার দীনার, কেউ দিরহাম, কেউ কাপড়, কেউ এক সা' আটা ও কেউ এক সা' খেজুর দান করল। অবশেষে তিনি বললেন, "অন্ততঃ এক টুকরা খেজুর হলেও নিয়ে আসো"। তখন আনসার সম্পপ্রদায়ের এক ব্যক্তি একটি বিরাট থলি নিয়ে আসলেন। এর ভার তার হাত বহন করতে পারছিল না। সাহাবী বলেন, অতঃপর লোকেরা সারিবদ্ধভাবে একের পর এক দান করতে থাকল। ফলে খাদ্য ও কাপড়ের দু'টি স্তুপ হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারা মুবারক খাঁটি সোনার ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে হাসতে লাগল।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোন উত্তম প্রথা বা কাজের প্রচলন করে সে তার কাজের সাওয়াব পাবে এবং তার পরে যারা তার এ কাজ দেখে তা করবে সে এর বিনিময়েও সাওয়াব পাবে। তবে এতে তাদের সাওয়াব কোন অংশে কমানো হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে (ইসলামের পরিপন্থী) কোন খারাপ প্রথা বা কাজের প্রচলন করবে, তাকে তার এ কাজের বোঝা (গুনাহ এবং শাস্তি) বহন করতে হবে। তারপর যারা তাকে অনুসরণ করে এ কাজ করবে তাদের সমপরিমাণ বোঝাও তাকে বইতে হবে। তবে এতে তাদের অপরাধ ও শাস্তি কোন অংশেই কমবে না।"
আল্লাহই তাওফীকদাতা।
আরও পড়ুন - পরিত্যক্ত সুন্নাহ বোঝার মূলনীতি কি? বর্ণিত যেসব হাদীসে লোকজনের আমল নেই, সেগুলোকে কি আমরা পরিত্যক্ত সুন্নাহ হিসেবে গণ্য করব?
- শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।