ড্রাইভারের সাথে ভ্রমণ

Joined
Jan 12, 2023
Threads
864
Comments
1,113
Solutions
20
Reactions
13,043
প্রশ্ন: কোনো কোনো ব্যক্তি তার কন্যাদেরকে বেগানা ড্রাইভারের সাথে স্কুল-কলেজ বা অন্যান্য স্থানে পাঠায়। কিন্তু তারা এর ভয়ংকর পরিণতি সম্পর্কে একটুও ভাবে না। এ বিষয়ে আপনার নছীহত কামনা করছি।

উত্তর: এর দুটি অবস্থা হতে পারে:

(১) কয়েকজন নারী এক সাথে থাকা। এ অবস্থায় বাসা থেকে নিকটে কোথাও গেলে কোনো অসুবিধা নেই। কারণ, রাসূল (ﷺ) বলেছেন, 'কোনো পুরুষ যেন অন্য নারীর সঙ্গে নিভৃতে অবস্থান না করে'। অতএব, কয়েকজন নারীর সাথে একজন পুরুষ থাকলে সেটিকে নির্জনতা বলার সুযোগ নেই। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো, ড্রাইভার যেন বিশ্বস্ত হয়। ড্রাইভার যদি বিশ্বস্ত না হয়, তাহলে কয়েকজন নারী একসাথে থাকলেও ঐ ড্রাইভারের সাথে কোথাও বের হওয়া অনুচিত।

(২) শুধু একজন নারীর ড্রাইভারের সাথে বের হওয়া। এটি এক মিনিটের সতর্ক জন্যও বৈধ নয়। কারণ, এটি স্পষ্ট নির্জনতা, যা থেকে রাসূল (ﷺ) করেছেন। তিনি বলেন, 'কোনো পুরুষ যেন অন্য নারীর সঙ্গে নিভৃতে অবস্থান না করে'।” কারণ, শয়তান তাদের মধ্যে তৃতীয়জন হয়ে তাদেরকে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে।

অতএব, বেগানা ড্রাইভারের সাথে কন্যাদেরকে একাকী কোথাও পাঠানো অভিভাবকদের জন্য জায়েয নেই। সাথে সাথে মাহরাম ছাড়া একাকী ড্রাইভারের সাথে যাওয়াও একজন নারীর জন্য হারাম। কারণ, এটি রাসূল (ﷺ) -এর নাফরমানী। আর যে রাসূল (ﷺ) -এর নাফরমানী করে, সে মূলত আল্লাহ তাআলার নাফরমানী করে। মহান আল্লাহ বলেন,

مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ​

'যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল' (আন-নিসা, ৪/৮০)।

তিনি আরও বলেন,

وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا
'যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল, সে স্পষ্টভাবে পথভ্রষ্ট হলো' (আল-আহযাব, ৩৩/৩৬)।

অতএব, হে মুসলিম ভাইয়েরা! আমাদের উপর কর্তব্য হলো, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল-এর নির্দেশ পালনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর অনুগত হওয়া। আর এতেই রয়েছে আমাদের জন্য মহাকল্যাণ এবং উত্তম প্রতিদান। আমরা যেন আমাদের স্ত্রী-সন্তানদের এ বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল ও সচেতন হই।

তাদের নিয়ে খেলা করার জন্য শয়তানকে সুযোগ না করে দেই। কারণ, শয়তান সর্বদা ভ্রষ্টতা ও ফেতনার দিকে নিয়ে যায়।

আমি মুসলিম ভাইদেরকে অনুরোধ করব, তারা যেন দুনিয়ার চাকচিক্যের মোহে অন্ধ ও উদাসীন না হয়ে যায়। আমরা মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীগুলো স্মরণ করব, তিনি বলেছেন,

وَأَصْحَابُ الشِّمَالِ مَا أَصْحَابُ الشِّمَالِ - فِي سَمُومٍ وَحَمِيمٍ - وظلَّ مِنْ يَحْمُوم - لَا بَارِدٍ وَلَا كَرِيم - إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَلِكَ مُتْرَفِينَ - وَكَانُوا يُصِرُّونَ عَلَى الْحِنْثِ الْعَظِيمِ​

'আর বাম দিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! তারা থাকবে অগ্নি ও ফুটন্ত পানির মধ্যে। আর কালোবর্ণের ধোঁয়ার ছায়ায়, যা শীতল নয়, আরামদায়কও নয়। ইতঃপূর্বে তারা তো ছিল ভোগ-বিলাসে মত্ত। আর তারা অবিরাম লিপ্ত ছিল ঘোরতর পাপকাজে' (আল-ওয়াক্বিআহ, ৫৬/৪১-৪৬)।

তিনি আরও বলেন,

وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ - فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا - وَيَصْلَى سَعِيرًا - إِنَّهُ كَانَ فِي أَهْلِهِ مَسْرُورًا​

'পক্ষান্তরে যার আমলনামা তাকে পিছন দিক থেকে দেওয়া হবে। ফলে সে মৃত্যুকে ডাকতে থাকবে এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে। এই ব্যক্তি দুনিয়ায় স্বীয় পরিজনের মধ্যে সানন্দে ছিল' (আল-ইনশিক্বাক, ৮৪/১০-১৩)।

মুসলিম পরিবার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মূল : শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে ছলেহ আল-উছায়মীন
-অনুবাদ : ড. আব্দুল্লাহিল কাফী মাদানী​


মাশতা মায়েলা দ্বারা কী উদ্দেশ্য
 
Last edited:
Back
Top