টাইট পোশাক ছোট-বড় সকলের শরীরের উঁচু-নিচু অংশগুলো ফুটিয়ে তোলে। আপনার নিকট থেকে এদের ব্যাপারে নছীহত কামনা করছি।

Joined
Jan 12, 2023
Threads
864
Comments
1,113
Solutions
20
Reactions
13,043
প্রশ্ন: অনেকেই তাদের কন্যাদেরকে খাটো ও টাইট পোশাক পরাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এসব টাইট পোশাক ছোট-বড় সকলের শরীরের উঁচু-নিচু অংশগুলো ফুটিয়ে তোলে। আপনার নিকট থেকে এদের ব্যাপারে নছীহত কামনা করছি।

উত্তর: প্রতিটি মানুষের উচিত, তার উপর অর্পিত দায়িত্বের প্রতি সচেতন হওয়া। তার উচিত, আল্লাহকে ভয় করা এবং যেসব মেয়ের উপর তার অভিভাবকত্ব রয়েছে, তাদেরকে টাইট ও খাটো পোশাক পরিধানে বাধা দেওয়া। রাসূল (ﷺ) বলেন, 'জাহান্নামীদের মধ্যে দুই শ্রেণির মানুষকে আমি এখনো বাস্তবে দেখিনি।

১. ঐ সমস্ত মানুষ, যাদের নিকট গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে। তারা এর দ্বারা লোকজনকে অন্যায়ভাবে প্রহার করবে।
২. ঐ সমস্ত মহিলা, যারা পোশাক পরা সত্ত্বেও তাদের নগ্নতা প্রকাশ পায়, আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা। যাদের মাথার খোঁপা বুখতী উটের উঁচু কুঁজের ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুগন্ধি এত এত দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়'।

এ সমস্ত টাইট পোশাক পরিহিতা নারীদেরকে উলঙ্গ বলাই শ্রেয়। কেননা পোশাক পরিধান করা সত্ত্বেও তাদের লজ্জাস্থান প্রকাশ পায়। আর পরপুরুষের সামনে মুখমণ্ডল, হাত-পাসহ শরীরের পুরো অংশ )عورة( লজ্জাস্থানের অন্তর্ভুক্ত। টাইট পোশাকের কারণে শরীরের উঁচু-নিচু অংশগুলো ফুটে উঠে। যে কারণে বাহ্যিক দৃষ্টিতে পোশাক পরা হলেও প্রকৃত অর্থে এটি নগ্নতা। নারীদের উচিত, আল্লাহকে ভয় করা এবং শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গগুলো প্রকাশ না করা।

যদি কোনো জরুরী প্রয়োজনে বাজারে যেতেই হয়, তাহলে সাধারণ ঢিলেঢালা পোশাকে পর্দার সাথে বের হবে। এমন পোশাক পরবে না, যাতে অন্যদের দৃষ্টি তার দিকে যায়। এমনকি সুগন্ধিও মাখবে না, যাতে পুরুষরা তার প্রতি আকৃষ্ট হয়। রাস্তায় দাম্ভিকতার সাথে চলাচল করবে না। রাসূল (ﷺ) বলেন, 'পুরুষের জন্য নারী জাতি অপেক্ষা অধিক ক্ষতিকর কোনো ফেতনা আমি রেখে গেলাম না'।

নারীদের ফেতনা খুবই মারাত্মক। খুব কম মানুষই আছে, যারা এ ফেতনা থেকে বাঁচতে পারে। আমাদের সকলের উচিত, ইয়াহুদী-খ্রিষ্টানসহ আল্লাহর সকল শত্রুদের পথ পরিহার করা, নইলে পরিস্থিতি ভয়ানক হবে।

রাসূল (ﷺ) বলেন, আল্লাহ তাআলা যালেমদের অবকাশ দিয়ে থাকেন। অবশেষে যখন তাকে ধরেন, তখন আর ছাড়েন না। এরপর রাসূল (ﷺ) এ আয়াত পাঠ করেন,

وَكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ إِنَّ أَخْذَهُ أَلِيمٌ شَدِيدٌ​

'আর এরকমই বটে আপনার রবের পাকড়াও, যখন তিনি কোনো জনপদবাসীকে পাকড়াও করেন তাদের যুলুমের দরুন। নিঃসন্দেহে তাঁর পাকড়াও বড় যন্ত্রণাদায়ক, অত্যন্ত কঠিন' (হৃদ, ১১/১০২)।

মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন,

وَأُمْلِي لَهُمْ إِنَّ كَيْدِي مَتِينٌ​

'আমি তাদেরকে অবকাশ দেই। নিশ্চয় আমার কৌশল অত্যন্ত দৃঢ়' (আল-আ'রাফ, ৭/১৮৩)।

যারা নারীদের পর্দাহীনতা এবং নারী-পুরুষের সহাবস্থানের দিকে আহ্বান করছে, তারা সুস্পষ্ট ভ্রান্তি ও অজ্ঞতার মধ্যে আছে। তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) -এর বিধানকে অমান্য করে চলেছে। পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যে যারা এ ফেতনায় পড়েছিল, তাদের পরিণতি সম্পর্কে তারা জানে না অথবা না জানার ভান করে। আজ অবশ্য তারাও এ ফেতনা থেকে মুক্তি পেতে চায়। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব? এগুলো এমন বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে, যা প্রবল প্রচেষ্টা ছাড়া দূর করা সম্ভব নয়।

মুসলিম পরিবার সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মূল : শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে ছলেহ আল-উছায়মীন
-অনুবাদ : ড. আব্দুল্লাহিল কাফী মাদানী​

 
Back
Top