সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর কথা বলে কিংবা স্থান পরিবর্তন করে ফরজ নামায থেকে নফল নামাযকে পৃথক করা মুস্তাহাবকথা বলে কিংবা স্থান পরিবর্তন করে ফরজ নামায থেকে নফল নামাযকে পৃথক করা মুস

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,135
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,583
Credits
24,212
প্রশ্ন: আমি ফরজ নামায শেষে যদি নফল নামায পড়তে চাই; সেক্ষেত্রে নফল নামাযের জন্য স্থান পরিবর্তন করা কি মুস্তাহাব; যাতে করে পৃথিবীর একাধিক স্থান আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়?


উত্তরঃ


আলহামদুলিল্লাহ।


হ্যাঁ; কথা বলে কিংবা স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে ফরজ নামায থেকে নফল নামাযকে পৃথক করা মুস্তাহাব। এ পৃথক করার সর্বোত্তম পদ্ধতি হচ্ছে- নিজ ঘরে গিয়ে নফল নামায আদায় করা। কারণ ফরজ নামায ছাড়া ব্যক্তির সর্বোত্তম নামায হচ্ছে- তার নিজ ঘরে আদায়কৃত নামায। এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহিহ হাদিস সাব্যস্ত হয়েছে। ফরজ নামায থেকে নফল নামাযকে পৃথক করার ব্যাপারে সহিহ মুসলিমে মুয়াবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “যখন তুমি জুমার নামায আদায় করবে তখন তুমি এর সাথে অন্য কোন নামাযকে মিলিয়ে ফেলবে না; কথা বলে কিংবা মসজিদ থেকে বেরিয়ে গিয়ে পৃথক করবে।” কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সে নির্দেশ দিতেন- “এক নামাযের সাথে যেন অন্য নামাযকে মিলিয়ে ফেলা না হয়; আমরা যেন কথা বলি কিংবা মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাই।”


ইমাম নববী সহিহ মুসলিমের ব্যাখ্যায় বলেন: “এ হাদিসের মধ্যে আমাদের মাযহাবের আলেমগণ (তথা শাফেয়ি ফিকাহবিদগণ) যা বলেন এর সপক্ষে দলিল রয়েছে। অর্থাৎ যে কোন সুন্নত নামায আদায় করার জন্য ফরজ নামায যে স্থানে আদায় করা হয়েছে সে স্থান ছেড়ে অন্যস্থানে যাওয়া মুস্তাহাব। আর সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে- বাড়ীতে গিয়ে সুন্নত নামায আদায় করা; কিংবা মসজিদের অন্য কোন জায়গায়, কিংবা মসজিদের বাইরে অন্য কোন স্থানে; যাতে করে ব্যক্তির সিজদার স্থান বৃদ্ধি পায় এবং যাতে করে দৃশ্যতঃ ফরয নামায থেকে নফল নামায পৃথক হয়ে যায়। তাঁর কথা: "কথা বলে” এর মধ্যে দলিল রয়েছে যে, এই দুই প্রকার নামাযের মাঝে কথা বলার মাধ্যমেও পৃথকীকরণ করা যায়। তবে স্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে পৃথক করা উত্তম; ইতিপূর্বে যেসব দলিল উল্লেখ করেছি সেগুলোর ভিত্তিতে। আল্লাহই ভাল জানেন।[সমাপ্ত]


আবু দাউদ (৮৫৪) ও ইবনে মাজাহ (১৪১৭) একটি হাদিস সংকলন করেছেন -হাদিসটির ভাষা ইবনে মাজা এর- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমাদের কেউ যখন নামায পড়ে তখন কি সে একটু সামনে কিংবা পেছনে, কিংবা ডানে কিংবা বামে সরে আসতে পারে না; মানে- নফল নামাযে” অর্থাৎ কেউ যদি ফরজ নামাযের পর নফল নামায পড়ে।[আলবানী সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]


আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা গ্রন্থে (২/৩৫৯) শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন: “


জুমার ফরজ নামায ও অন্য ফরজ নামায থেকে নফল নামাযকে পৃথক করা সুন্নত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহিহ হাদিসে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি এক নামাযের সাথে অন্য নামাযকে মিলিয়ে ফেলতে নিষেধ করেছেন। দাঁড়ানোর মাধ্যমে কিংবা কথা বলার মাধ্যমে দুই নামাযের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। তাই অনেক মানুষ যা করে থাকেন ‘(ফরজ) নামাযের সালাম ও দুই রাকাত সুন্নত নামাযের মাঝখানে কোন বিচ্ছিন্নতা তৈরী না করা। নিশ্চয় এটি করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিষেধাজ্ঞাতে লিপ্ত হওয়ার নামান্তর। এ নিষেধাজ্ঞার রহস্য হল যেন ফরজ নামায ও নফল নামাযের মধ্যে পার্থক্য তৈরী করা যায়। যেমনিভাবে ইবাদত ও ইবাদত নয় এমন কর্মের মধ্যে পার্থক্য করা হয়। এ কারণে অনতিবিলম্বে ইফতার করা, বিলম্বে সেহেরী খাওয়া ও ঈদের দিন নামাযের আগে খাবার গ্রহণ করা মুস্তাহাব করা হয়েছে এবং রমজান শুরু হওয়ার একদিন কিংবা দুইদিন আগে থেকেই রোজা রাখা নিষেধ করা হয়েছে। এ সবকিছুই করা হয়েছে যাতে করে রোজার মধ্যে আদিষ্ট ও অনাদিষ্ট বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য করা জন্য এবং ইবাদত ও গর-ইবাদতের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য। এবং একইভাবে জুমার সাথে অন্য কিছুর পার্থক্য তৈরী করা যায় যা পালন করা আল্লাহ তাআলা ফরজ করেছেন।[সমাপ্ত]


তাই ফরজ ও নফল নামাযের মধ্যে পার্থক্য করার কারণ হল- একটি থেকে অন্যটিকে পৃথক করা। কিছু কিছু আলেম অন্য একটি কারণও উল্লেখ করেন সেটি হচ্ছে- সিজদার স্থান বাড়ানো; যাতে করে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিতে পারে ইতিপূর্বে ইমাম নববীর বক্তব্যে যা এসেছে।


আল-রমলি তার ‘নিহায়াতুল মুহতাজ’ গ্রন্থে (১/৫৫২) বলেন: ফরজ নামায কিংবা নফল নামাযের জন্য পূর্বের ফরজ নামায কিংবা নফল নামায থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়া সুন্নত। যাতে করে ব্যক্তির সেজদার স্থান বাড়বে। যেহেতু সেজদার স্থানগুলো কেয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষী দিবে এবং এভাবে ভূখণ্ডকে ইবাদতের মাধ্যমে জীবন্ত করা হয়। যদি অন্য স্থানে স্থানান্তরিত না হয় তাহলে কোন মানুষের সাথে কথা বলে ছেদ তৈরী করবে।[সমাপ্ত]


আল্লাহই ভাল জানেন।
 
Top