‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

অন্যান্য ইবাদতের সংজ্ঞায়নে ভুল ত্রুটি

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
688
Comments
1,217
Solutions
17
Reactions
6,634
Credits
5,445
ইবাদত তাওক্বীফী তথা আল্লাহ ও তার রাসূলের কথায় সীমাবদ্ধ। অন্য ভাষায়, কুরআন হাদীছের দলীল ব্যতীত কোন বিষয়কে ইবাদত বলে গণ্য করা যাবে না। কুরআন হাদীছ দ্বারা যা প্রমাণিত নয় তা বিদ‘আত ও প্রত্যাখ্যাত।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
যারা এমন কোন কাজ করে যা আমাদের শরী‘আত অনুমোদিত নয় তা পরিত্যাজ্য।(১)

অর্থাৎ তার এ কাজ তার প্রতিই প্রত্যাখ্যাত হবে। এটা তার পক্ষ হতে গ্রহণ করা হবে না, বরং এ জন্য সে গুনাহগার হবে। কারণ তাতে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনুগত্য হবে না, বরং হবে অবাধ্যতা।
শারঈ ইবাদত আদায়ের ক্ষেত্রে সঠিক নীতি হলো, ঢিলেমী-অলসতা এবং অতিরঞ্জন-বাড়াবাড়ির মাঝে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা।

আল্লাহ তা‘আলা তার নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন, অতএব, তুমি এবং তোমার সাথে যারা তাওবা করেছে সবাই সোজা পথে চলো, যেমন তোমায় নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং সীমালঙ্ঘন করো না। সূরা হুদ ১১: ১১২।

উপরোক্ত আয়াতে ইবাদত আদায়ের সঠিক নীতি তুলে ধরা হয়েছে। আর তা হলো, ইবাদত আদায়ে মধ্যপথের উপর স্থায়ী থাকা। তাতে বাড়াবাড়ি বা অতিরঞ্জন এবং অবহেলা বা শিথিলতা থাকবে না। অর্থাৎ শরী‘আত যেভাবে আদেশ করেছে সেভাবেই ইবাদত করবে। এর পর আল্লাহ তা‘আলা তার বাণী ولا تطغوا (বাড়াবাড়ি করবে না) দ্বারা এ বিষয়টিকে আরো তাগিদ যুক্ত করেছেন।

তুগইয়ান” বা বাড়াবাড়ি হলো, কঠোরতা ও রূঢ়তার সহিত সীমাতিক্রম করা। আর এটাই হলো গুলু বা অতিরঞ্জন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তার তিনজন ছাহাবী কর্তৃক নিজেদের আমলের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ির কথা জানতে পারলেন, [যাদের একজন বলেছিলেন, আমি সারা জীবন সিয়াম রাখবো কোন দিন সিয়াম ছাড়বো না, অন্যজন বলেছিলেন, আমি সারা রাত সালাত আদায় করবো, রাত্রে কখনো ঘুমাবো না, তৃতীয় জন বলেছিলেন, আমি কখনো বিয়ে করবো না] তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে বলেছিলেন: তোমরা এমন কথা বলেছো! কিন্তু আমি সিয়াম রাখি এবং সিয়াম ছাড়ি, আমি বিয়েও করেছি। অতএব, যারা আমার সুনড়বাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তারা আমার দলের অন্তর্ভুক্ত নয়।(২) অথচ ইবাদতের ক্ষেত্রে বর্তমানে পরস্পর বিরোধী দু’টি দল দেখা যায়।

প্রথম দল: এরা ইবাদতের সংজ্ঞা বা মর্ম বুঝতে ত্রুটি করতঃ তা আদায়ে অবহেলা করেছে এমনকি অনেক ইবাদতকে তারা বাদই দিয়েছে। এরা কিছু নির্দিষ্ট কাজ ও কৃষ্টি-কালচারে ইবাদতকে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে যা শুধু মসজিদে আদায় করা হবে। এদের নিকটে বাড়ি, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বানিজ্য, রোড-ঘাট, লেনদেন, রাজনীতি, মতোবিরোধ মূলক বিষয়ের সমস্যা সমাধান এবং জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে ইবাদতের কোন স্থান নেই। হ্যাঁ, মসজিদের ফযীলত রয়েছে, মসজিদেই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ওয়াজিব, কিন্তু ইবাদত মসজিদের ভিতরে বাহিরে এক জন মুসলিমের পুরো জীবনকে শামিল (অন্তর্ভুক্ত) করে।

দ্বিতীয় দল: তারা ইবাদত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এত বাড়াবাড়ি ও কঠোরতা করেছে যে তাকে চরম পন্থায় নিয়ে গেছে। মুস্তাহাব আমলকে ওয়াজিবের পর্যায়ে উনিড়বত করেছে। কিছু হালাল বস্তুকেও হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছে। আর যারা তাদের এ নীতির বিপরীতে যাবে তাদের চিন্তা-ধারা ও নীতিকে পথ ভ্রষ্ট বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সবচেয়ে উত্তম দিক নির্দেশনা হলো মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পথ নির্দেশনা, এবং সবচেয়ে নিকৃষ্ট হলো দীনের মাঝে নতুন কিছু সংযোজন করা।​

শাইখ ড. সালিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান।
অনুবাদ: শাইখ মুখলিসুর রহমান মানসুর।​

১. সাহীহ বুখারী হা/৫০৬৩ ও সাহীহ মুসলিম হা/১৪০১, সুনানে নাসাঈ হা/৩২১৭।
২. সাহীহ্ মুসলিম ১৭১৮, সাহীহ বুখারী ২১৪২ হাদিছের অধ্যায়ে, দারাকুৎনী ৪৫৩৭।
 
COMMENTS ARE BELOW

Share this page