আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি তা হিফাযত করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর আল্লাহ বেজোড়। তিনি বেজোড় পছন্দ করেন।”
ইবন আবু উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বর্ণনায় (হিফাযত করে) এর স্হলে (যে গণনা করে) উল্লেখ আছে।[1]
উপরোক্ত বর্ণনাসূত্র ছাড়াও এ হাদীসের অনেক বর্ণনাসূত্র রয়েছে তাতে আল্লাহর নামসমূহ উল্লেখ আছে। হাদীসটি তিনটি সূত্রে তিরমিযীতে[2], ইবন মাজায়[3] ও মুসতাদরাক হাকেমে[4] বর্ণিত আছে[5]। এসব সূত্র সনদের দিক থেকে দুর্বল। আর মতনের দিক আলেমগণ ও মুহাক্কিকগণ তাদের মতামত পেশ করেছেন। নিচে তাদের কিছু মতামত উল্লেখ করা হলো:
[1] মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। সহীহ বুখারী, কিতাবুদ দাওয়াদ, পরিচ্ছেদ: মহান আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, হাদীস নং ৬৪১০; সহীহ মুসলিম, কিতাবুয যিকর, পরিচ্ছেদ: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ ও যে ব্যক্তি এগুলো গণনা করবে তার মর্যাদা, হাদীস নং ২৬৭৭।
[2] তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৭৪।
[3] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৮৬১।
[4] মুসতাদরাক হাকিম, ১/১৭।
[5] শাইখ মুহাম্মাদ ইবন হামদুল হামূদ তার ‘আন-নাহজুল আসমা ফি শরহে আসমাউল্লাহিল হুসনা’ কিতাবে (১/৫০) এবং শাইখ আব্দুল্লাহ ইবন সালিহ আল-গুসন তার ‘আসমাউল্লাহিল হুসনা’ কিতাবে (পৃ. ১৫৫) এ সব বর্ণনার সূত্র ও এ সংক্রান্ত আলেমদের মতামত বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন।
[6] আসমা ওয়াস-সিফাত, বায়হাকী, ১/৩২।
[7] মাজমূ‘উ ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ, ৬/৩৭৯।
[8] প্রাগুক্ত।
[9] তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৩/২৫৭।
[10] বুলূগুল মারাম, পৃ. ৩৪৬, হাদীস নং ১৩৯৬।
[11] তালখীসুল হাবীর, ৪/১৯০।
«لِلَّهِ تِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ اسْمًا، مِائَةٌ إِلَّا وَاحِدًا، لاَ يَحْفَظُهَا أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَ الجَنَّةَ، وَهُوَ وَتْرٌ يُحِبُّ الوَتْرَ»
“আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি তা হিফাযত করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর আল্লাহ বেজোড়। তিনি বেজোড় পছন্দ করেন।”
وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ أَبِي عُمَرَ: «مَنْ أَحْصَاهَا»
ইবন আবু উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বর্ণনায় (হিফাযত করে) এর স্হলে (যে গণনা করে) উল্লেখ আছে।[1]
উপরোক্ত বর্ণনাসূত্র ছাড়াও এ হাদীসের অনেক বর্ণনাসূত্র রয়েছে তাতে আল্লাহর নামসমূহ উল্লেখ আছে। হাদীসটি তিনটি সূত্রে তিরমিযীতে[2], ইবন মাজায়[3] ও মুসতাদরাক হাকেমে[4] বর্ণিত আছে[5]। এসব সূত্র সনদের দিক থেকে দুর্বল। আর মতনের দিক আলেমগণ ও মুহাক্কিকগণ তাদের মতামত পেশ করেছেন। নিচে তাদের কিছু মতামত উল্লেখ করা হলো:
- বায়হাকী রহ. আব্দুল আযীয ইবন হুসাইন থেকে বর্ণিত হাদীসের ব্যাপারে বলেন, সম্ভবত কতিপয় বর্ণনাকারীর থেকে কিছু ব্যাখ্যা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এমনিভাবে ওয়ালীদ ইবন মুসলিমের বর্ণনায়ও।[6]
- শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেন, হাদীস বিশরদগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, ওয়ালীদ ইবন মুসলিমের সূত্রে তিরমিযীর বর্ণনা ও আব্দুল মালিক ইবন মুহাম্মাদের সূত্রে ইবন মাজার বর্ণনা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী নয়; বরং তা কতিপয় সালাফের কথা।[7]
- তিনি আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নির্দিষ্টভাবে আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম বর্ণনা নেই। এ ব্যাপারে মানুষের কাছে যেসব বর্ণনা পাওয়া যায় তার মধ্যে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ হাদীস হলো ওয়ালীদ ইবন মুসলিম- শু‘আইব ইবন আবু হামযা থেকে বর্ণিত তিরমিযীতে বর্ণিত হাদীস। হাদীসের হাফিযগণ এ হাদীসের ব্যাপারে বলেছেন, হাদীসের মধ্যে এ সংযোজন বর্ণনাকারী ওয়ালীদ ইবন মুসলিম তার হাদীস বিশরদ শাইখদের থেকে সংযোজন করেছেন। এ ব্যাপারে ইবন মাজাহ বর্ণিত আরেকটি হাদীস আছে যা আরও দুর্বল। এ দু’ধরণের বর্ণনা ছাড়াও সালাফদের কেউ কেউ অন্য সূত্রে বর্ণনাকারীদের সংখ্যা উল্লেখ করেছেন।[8]
- ইবন কাসীর রহ. বলেন, হাদীসের হাফিযগণ এ ব্যাপারে একমত যে, তিরমিযীতে ওয়ালীদ ইবন মুসলিম থেকে বর্ণিত হাদীসে উল্লিখিত আল্লাহর নামসমূহ বর্ণনাকারীদের কর্তৃক প্রবিষ্ট করা হয়েছে। মূলত ওয়ালীদ ইবন সালাম ও আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ আস-সান‘আনী যুহাইর ইবন মুহাম্মাদ থেকে বর্ণনা করেন যে, তার কাছে একাধিক আহলে ইলম থেকে সংবাদ পৌঁছেছে যে, তারা কুরআন থেকে এ সব নাম সংগ্রহ করে হাদীসে একত্রিত করেছেন।[9]
- ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন, তাহকীক করার পরে প্রতিয়মান হয়েছে যে, হাদীসে এসব নাম বর্ণনাকারীদের দ্বারা অন্তর্ভুক্তিকরণ হয়েছে।[10]
- ইবন হাজার রহ. ইবন ‘আতীয়্যাহ রহ. থেকে বর্ণনা করেন, তিরমিযী রহ. বর্ণিত হাদীস মুতাওয়াতির নয় এবং এর সনদে কতিপয় বর্ণনাকারী রয়েছেন যারা শায তথা অপরিচিত।[11]
লেখক: শাইখ আব্দুর রহমান ইবন নাসের আস-সা‘দী
সংকলন, গবেষণা ও প্রস্তুতকরণ: ড: ‘উবাইদুল্লাহ ইবন ‘আলী আল ‘উবাইদ
অনুবাদক: আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
সংকলন, গবেষণা ও প্রস্তুতকরণ: ড: ‘উবাইদুল্লাহ ইবন ‘আলী আল ‘উবাইদ
অনুবাদক: আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী
[1] মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। সহীহ বুখারী, কিতাবুদ দাওয়াদ, পরিচ্ছেদ: মহান আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, হাদীস নং ৬৪১০; সহীহ মুসলিম, কিতাবুয যিকর, পরিচ্ছেদ: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ ও যে ব্যক্তি এগুলো গণনা করবে তার মর্যাদা, হাদীস নং ২৬৭৭।
[2] তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৭৪।
[3] ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৮৬১।
[4] মুসতাদরাক হাকিম, ১/১৭।
[5] শাইখ মুহাম্মাদ ইবন হামদুল হামূদ তার ‘আন-নাহজুল আসমা ফি শরহে আসমাউল্লাহিল হুসনা’ কিতাবে (১/৫০) এবং শাইখ আব্দুল্লাহ ইবন সালিহ আল-গুসন তার ‘আসমাউল্লাহিল হুসনা’ কিতাবে (পৃ. ১৫৫) এ সব বর্ণনার সূত্র ও এ সংক্রান্ত আলেমদের মতামত বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন।
[6] আসমা ওয়াস-সিফাত, বায়হাকী, ১/৩২।
[7] মাজমূ‘উ ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ, ৬/৩৭৯।
[8] প্রাগুক্ত।
[9] তাফসীরুল কুরআনিল আযীম, ৩/২৫৭।
[10] বুলূগুল মারাম, পৃ. ৩৪৬, হাদীস নং ১৩৯৬।
[11] তালখীসুল হাবীর, ৪/১৯০।