নিশ্চয় পুরো বিশ্বজগত -যাতে রয়েছে আসমান-যমীন, গ্রহ-নক্ষত্র, প্রাণীকূল, বৃক্ষ এবং জল-স্থল ও অন্তরীক্ষ, মালাঈকা, জিন্ন ও ইনসান...এর সবকিছুই আল্লাহর বশীভূত ও তাঁর জাগতিক নির্দেশের অনুগত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আকাশমণ্ডলী ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সকলেই স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৩]
তিনি আরো বলেন,
“বরং আকাশমণ্ডলী ও যমীনে যা কিছু আছে সব তাঁরই। সব তাঁরই অনুগত।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১১৬]
“আর আল্লাহর উদ্দেশ্যেই সাজদাহহ করছে যা কিছু রয়েছে আকাশমণ্ডলীতে এবং যেসকল প্রাণী রয়েছে যমীনে, আর মালাঈকাগণ যারা কখনো অহংকার করে না।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৪৯]
“তুমি কি দেখো না আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাজদাহ করে যা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও যা কিছু আছে যমীনে এবং সূর্য-চন্দ্র-নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজী, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সাজদাহ করে মানুষের মধ্যে অনেকে?” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ১৮]
“আল্লাহর জন্যই আকাশমণ্ডলী ও যমীনের সব কিছু ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় সাজদাবনত হয় এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের ছায়াগুলোও।” [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ১৫]
সুতরাং এ সৃষ্টি ও সৃষ্টজগতসমূহের সবকিছুই আল্লাহর অনুগত ও তাঁর ক্ষমতার কাছে বশীভূত। এগুলো আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী এবং তাঁর নির্দেশক্রমে পরিচালিত হয়। এর কোনো কিছুই আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না। অতি সুক্ষ্ম নিয়ম ও শৃঙ্খলার সাথে তারা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করে এবং অনিবার্য ফলাফলে উপনীত হয় আর নিজেদের স্রষ্টাকে সকল দোষ, ত্রুটি ও অক্ষমতা থেকে পবিত্র বলে ঘোষণা করে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“সপ্ত আকাশ, যমীন এবং এ সকলের অন্তবর্তী সকল কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পারো না।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৪৪]
সুতরাং নীরব ও সরব, জীবিত ও মৃত, এ সৃষ্টিজগতের সবকিছুই আল্লাহর অনুগত। তাঁর জাগতিক নির্দেশের অনুসারী। এসব কিছুই তাদের বাস্তব অবস্থা ও বক্তব্যের ভাষায় সকল দোষ-ত্রুটি ও অক্ষমতা থেকে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছে। কোনো বিবেকবান ব্যক্তি যখনই এ সৃষ্টিজগত নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে সে জানতে পারবে যে, এগুলো সত্যসহকারে এবং সত্যের উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি হয়েছে। আর এগুলো তাদের প্রতিপালকের নির্দেশমত পরিচালিত হয়, তাঁর নির্দেশ অমান্য করা ও তা থেকে পিছপা হওয়ার কোনো অপচেষ্টা এদের মধ্যে নেই। সকলেই স্বভাবজাত তাড়নায় তাদের স্রষ্টার স্বীকৃতি প্রদান করছে।
শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ রাহেমাহূল্লাহ বলেন,”তারা অনুগত ও আত্মসমর্পণকারী এবং স্বপ্রণোদিতভাবে বশীভূত হতে বাধ্য কয়েক দিক থেকেঃ
এক. তারা স্রষ্টার প্রতি তাদের হাজত, প্রয়োজন, উপযোগিতা ও জরুরত সম্পর্কে জ্ঞান রাখে।
দুই. আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীর ও ইচ্ছা যে তাদের ওপর জারী হচ্ছে, বিনয়ের সাথে তারা তা মেনে নেয় এবং তার প্রতি আত্মসমর্পণ করে।
তিন. বিপদে-আপদে তারা আল্লাহর কাছেই দো‘আ করে থাকে।
মুমিন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তার রবের নির্দেশের অনুগত হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত তাকদীরের লিখন অনুযায়ী যে সকল বালা-মুসীবত তার ওপর আপতিত হয় তা সে মেনে নেয়। কেননা সে বালা-মুসীবতের সময় স্বেচ্ছায় সবর ও অন্যান্য যেসব নির্দেশ তাকে করা হয়েছিল তা পালন করে থাকে। অতএব, সে স্বেচ্ছায় আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী এবং স্বেচ্ছায় সে আল্লাহর অনুগত।[1]
আর কাফির ব্যক্তি তার রবের জাগতিক নির্দেশ মেনে নিয়ে থাকে। জগতের সকল কিছুর সাজদাহ বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে, অনুগত থাকা। প্রত্যেক বস্তুর সাজদাহ সে বস্তু অনুপাতেই হয়ে থাকে যা তার জন্য উপযোগী। মহান রাববুল আলামীনের অনুগত হওয়া এ সাজদাহর মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। আর প্রত্যেক বস্তুর তাসবীহ পাঠ সে বস্তু অনুসারেই ধরে নিতে হবে প্রকৃত অর্থে, রূপক অর্থে নয়।
আর আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
﴿أَفَغَيۡرَ دِينِ ٱللَّهِ يَبۡغُونَ وَلَهُۥٓ أَسۡلَمَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعٗا وَكَرۡهٗا وَإِلَيۡهِ يُرۡجَعُونَ ٨٣ ﴾ [ال عمران: ٨٣]
“তারা কি আল্লাহর দীন ব্যতীত অন্য কিছু অনুসন্ধান করছে? অথচ আল্লাহরই কাছে আত্মসমর্পণ করেছে আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় ও অনিচ্ছায় এবং তাঁর কাছেই তাদেরকে ফিরে যেতে হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৩]
এ আয়াতটির ব্যাখ্যায় শায়খুল ইসলাম তাইমিয়্যা রহ. বলেন, “আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা স্বেচ্ছায় ও অনিচ্ছায় সৃষ্টিজগতের আত্মসমর্পণের কথা এখানে উল্লেখ করেছেন। কেননা সৃষ্টিজগতের সবকিছুই পরিপূর্ণভাবে তাঁরই ইবাদাত করে থাকে, চাই কোনো স্বীকৃতিদানকারী এর স্বীকৃতি দান করুক কিংবা তা অস্বীকার করুক। তারা তাঁর কাছে ঋনী, তাঁর দ্বারা পরিচালিত। সুতরাং তারা স্বেচ্ছায় ও অনিচ্ছায় তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকারী। আল্লাহ যা চেয়েছেন, যা তাকদীরে নির্ধারিত করেছেন এবং যে সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছেন সৃষ্টিজগতের কারো পক্ষেই তা থেকে বের হওয়ার সাধ্য নেই। আর তিনি ছাড়া কারো কোনো শক্তি ও সামর্থও নেই। তিনি সৃষ্টির সকলের রব, তাদের মালিক। তিনি যেমন ইচ্ছা তাদেরকে পরিচালিত করেন। তিনি তাদের প্রত্যেকের স্রষ্টা, তাদের অস্তিত্বদানকারী এবং তাদের অবয়বদানকারী। তিনি ছাড়া আর যা কিছু আছে সবই তাঁর অধিনস্ত, তাঁর সৃষ্ট ও তৈরিকৃত, তাঁর দেওয়া বৈশিষ্টমণ্ডিত, তাঁর মুখাপেক্ষী, তাঁর অনুগত, তাঁর কাছে পর্যদুস্ত। আর তিনি পবিত্র ও মহান একক সত্ত্বা, পরাক্রমশালী স্রষ্টা, সৃষ্টিকারী এবং অবয়বপ্রদানকারী।[2]
[1] মাজমু আল ফাতাওয়া: ১/৪৫।
[2] মাজমু আল ফাতাওয়া: ১০/২০০।
﴿وَلَهُۥٓ أَسۡلَمَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعٗا وَكَرۡهٗا ﴾ [ال عمران: ٨٣]
“আকাশমণ্ডলী ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সকলেই স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৩]
তিনি আরো বলেন,
﴿بَل لَّهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ كُلّٞ لَّهُۥ قَٰنِتُونَ ١١٦ ﴾ [البقرة: ١١٦]
“বরং আকাশমণ্ডলী ও যমীনে যা কিছু আছে সব তাঁরই। সব তাঁরই অনুগত।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১১৬]
﴿وَلِلَّهِۤ يَسۡجُدُۤ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ مِن دَآبَّةٖ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَهُمۡ لَا يَسۡتَكۡبِرُونَ ٤٩ ﴾ [النحل: ٤٩]
“আর আল্লাহর উদ্দেশ্যেই সাজদাহহ করছে যা কিছু রয়েছে আকাশমণ্ডলীতে এবং যেসকল প্রাণী রয়েছে যমীনে, আর মালাঈকাগণ যারা কখনো অহংকার করে না।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৪৯]
﴿أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يَسۡجُدُۤ لَهُۥۤ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُ وَٱلنُّجُومُ وَٱلۡجِبَالُ وَٱلشَّجَرُ وَٱلدَّوَآبُّ وَكَثِيرٞ مِّنَ ٱلنَّاسِۖ ﴾ [الحج: ١٨]
“তুমি কি দেখো না আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাজদাহ করে যা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও যা কিছু আছে যমীনে এবং সূর্য-চন্দ্র-নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজী, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সাজদাহ করে মানুষের মধ্যে অনেকে?” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ১৮]
﴿وَلِلَّهِۤ يَسۡجُدُۤ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعٗا وَكَرۡهٗا وَظِلَٰلُهُم بِٱلۡغُدُوِّ وَٱلۡأٓصَالِ۩ ١٥ ﴾ [الرعد: ١٥]
“আল্লাহর জন্যই আকাশমণ্ডলী ও যমীনের সব কিছু ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায় সাজদাবনত হয় এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের ছায়াগুলোও।” [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ১৫]
সুতরাং এ সৃষ্টি ও সৃষ্টজগতসমূহের সবকিছুই আল্লাহর অনুগত ও তাঁর ক্ষমতার কাছে বশীভূত। এগুলো আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী এবং তাঁর নির্দেশক্রমে পরিচালিত হয়। এর কোনো কিছুই আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে না। অতি সুক্ষ্ম নিয়ম ও শৃঙ্খলার সাথে তারা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করে এবং অনিবার্য ফলাফলে উপনীত হয় আর নিজেদের স্রষ্টাকে সকল দোষ, ত্রুটি ও অক্ষমতা থেকে পবিত্র বলে ঘোষণা করে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿تُسَبِّحُ لَهُ ٱلسَّمَٰوَٰتُ ٱلسَّبۡعُ وَٱلۡأَرۡضُ وَمَن فِيهِنَّۚ وَإِن مِّن شَيۡءٍ إِلَّا يُسَبِّحُ بِحَمۡدِهِۦ وَلَٰكِن لَّا تَفۡقَهُونَ تَسۡبِيحَهُمۡۚ ﴾ [الاسراء: ٤٤]
“সপ্ত আকাশ, যমীন এবং এ সকলের অন্তবর্তী সকল কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পারো না।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৪৪]
সুতরাং নীরব ও সরব, জীবিত ও মৃত, এ সৃষ্টিজগতের সবকিছুই আল্লাহর অনুগত। তাঁর জাগতিক নির্দেশের অনুসারী। এসব কিছুই তাদের বাস্তব অবস্থা ও বক্তব্যের ভাষায় সকল দোষ-ত্রুটি ও অক্ষমতা থেকে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছে। কোনো বিবেকবান ব্যক্তি যখনই এ সৃষ্টিজগত নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে সে জানতে পারবে যে, এগুলো সত্যসহকারে এবং সত্যের উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি হয়েছে। আর এগুলো তাদের প্রতিপালকের নির্দেশমত পরিচালিত হয়, তাঁর নির্দেশ অমান্য করা ও তা থেকে পিছপা হওয়ার কোনো অপচেষ্টা এদের মধ্যে নেই। সকলেই স্বভাবজাত তাড়নায় তাদের স্রষ্টার স্বীকৃতি প্রদান করছে।
শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ রাহেমাহূল্লাহ বলেন,”তারা অনুগত ও আত্মসমর্পণকারী এবং স্বপ্রণোদিতভাবে বশীভূত হতে বাধ্য কয়েক দিক থেকেঃ
এক. তারা স্রষ্টার প্রতি তাদের হাজত, প্রয়োজন, উপযোগিতা ও জরুরত সম্পর্কে জ্ঞান রাখে।
দুই. আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীর ও ইচ্ছা যে তাদের ওপর জারী হচ্ছে, বিনয়ের সাথে তারা তা মেনে নেয় এবং তার প্রতি আত্মসমর্পণ করে।
তিন. বিপদে-আপদে তারা আল্লাহর কাছেই দো‘আ করে থাকে।
মুমিন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তার রবের নির্দেশের অনুগত হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত তাকদীরের লিখন অনুযায়ী যে সকল বালা-মুসীবত তার ওপর আপতিত হয় তা সে মেনে নেয়। কেননা সে বালা-মুসীবতের সময় স্বেচ্ছায় সবর ও অন্যান্য যেসব নির্দেশ তাকে করা হয়েছিল তা পালন করে থাকে। অতএব, সে স্বেচ্ছায় আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী এবং স্বেচ্ছায় সে আল্লাহর অনুগত।[1]
আর কাফির ব্যক্তি তার রবের জাগতিক নির্দেশ মেনে নিয়ে থাকে। জগতের সকল কিছুর সাজদাহ বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে, অনুগত থাকা। প্রত্যেক বস্তুর সাজদাহ সে বস্তু অনুপাতেই হয়ে থাকে যা তার জন্য উপযোগী। মহান রাববুল আলামীনের অনুগত হওয়া এ সাজদাহর মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত। আর প্রত্যেক বস্তুর তাসবীহ পাঠ সে বস্তু অনুসারেই ধরে নিতে হবে প্রকৃত অর্থে, রূপক অর্থে নয়।
আর আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
﴿أَفَغَيۡرَ دِينِ ٱللَّهِ يَبۡغُونَ وَلَهُۥٓ أَسۡلَمَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعٗا وَكَرۡهٗا وَإِلَيۡهِ يُرۡجَعُونَ ٨٣ ﴾ [ال عمران: ٨٣]
“তারা কি আল্লাহর দীন ব্যতীত অন্য কিছু অনুসন্ধান করছে? অথচ আল্লাহরই কাছে আত্মসমর্পণ করেছে আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় ও অনিচ্ছায় এবং তাঁর কাছেই তাদেরকে ফিরে যেতে হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৩]
এ আয়াতটির ব্যাখ্যায় শায়খুল ইসলাম তাইমিয়্যা রহ. বলেন, “আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা স্বেচ্ছায় ও অনিচ্ছায় সৃষ্টিজগতের আত্মসমর্পণের কথা এখানে উল্লেখ করেছেন। কেননা সৃষ্টিজগতের সবকিছুই পরিপূর্ণভাবে তাঁরই ইবাদাত করে থাকে, চাই কোনো স্বীকৃতিদানকারী এর স্বীকৃতি দান করুক কিংবা তা অস্বীকার করুক। তারা তাঁর কাছে ঋনী, তাঁর দ্বারা পরিচালিত। সুতরাং তারা স্বেচ্ছায় ও অনিচ্ছায় তাঁর কাছে আত্মসমর্পণকারী। আল্লাহ যা চেয়েছেন, যা তাকদীরে নির্ধারিত করেছেন এবং যে সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছেন সৃষ্টিজগতের কারো পক্ষেই তা থেকে বের হওয়ার সাধ্য নেই। আর তিনি ছাড়া কারো কোনো শক্তি ও সামর্থও নেই। তিনি সৃষ্টির সকলের রব, তাদের মালিক। তিনি যেমন ইচ্ছা তাদেরকে পরিচালিত করেন। তিনি তাদের প্রত্যেকের স্রষ্টা, তাদের অস্তিত্বদানকারী এবং তাদের অবয়বদানকারী। তিনি ছাড়া আর যা কিছু আছে সবই তাঁর অধিনস্ত, তাঁর সৃষ্ট ও তৈরিকৃত, তাঁর দেওয়া বৈশিষ্টমণ্ডিত, তাঁর মুখাপেক্ষী, তাঁর অনুগত, তাঁর কাছে পর্যদুস্ত। আর তিনি পবিত্র ও মহান একক সত্ত্বা, পরাক্রমশালী স্রষ্টা, সৃষ্টিকারী এবং অবয়বপ্রদানকারী।[2]
তাওহীদ পরিচিতি
ড. সালিহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান
অনুবাদ: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ড. সালিহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান
অনুবাদ: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
[1] মাজমু আল ফাতাওয়া: ১/৪৫।
[2] মাজমু আল ফাতাওয়া: ১০/২০০।