'আরশ পরিচিতি
আরশ আল্লাহর সৃষ্টিসমূহের একটি যা তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টির পূর্বেই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা সেটাকে পানির উপর সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে প্রকার, বড়, প্রশস্ত ও সবচেয়ে ভারী সৃষ্টি এটি। আরশ হচ্ছে লাল ইয়াকূতের। সেটি গম্বুজের মতো। তার রয়েছে পায়া, তার রয়েছে ছায়া, তাকে বহন করে আটজন বৃহৎ সৃষ্টির ফিরিশতা, ফিরিশতাগণ আরশের চারপাশে তাওয়াফ করে, তারা তাদের রবের যিকির শব্দ ও মৌমাছির গুঞ্জনের মতো করে, "আরশ কারও কারও মৃত্যুতে তার জন্য কেঁপে উঠেছে, তার রয়েছে ক্যাঁ ক্যাঁ শব্দ। রেহেম বা আত্মীয়তার সম্পর্ক তার সাথে ঝুলে আছে, আল্লাহ তা'আলা তার উপর লিখে রেখেছেন, আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রাধান্য পাবে। আরশ আসমান ও যমীনসমূহের উপরে, আরশের নিচে জান্নাত। আল্লাহ তা'আলা আসমান ও যমীন সৃষ্টির পরে আরশের উপর উঠেছেন। আরশ আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে নিকটতম সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলা যেদিন আসমান ও যমীনকে ভাঁজ করে রাখবেন সেই কিয়ামতের দিন তিনি আরশকে ভাঁজ করবেন না, বরং আরশকে জান্নাত ও জাহান্নামের মতো অবশিষ্ট রাখবেন, বিনষ্ট করবেন না। কুরসী আরশের চেয়ে ক্ষুদ্র আকৃতির। কুরসী দু' পা রাখার স্থান আর তা 'আরশের জন্য সিঁড়ির মতো। এ হচ্ছে আরশের মোটামুটি পরিচয়। আমরা এখন এগুলো দলীল প্রমাণসহ আলোচনা করব।(রহমান আরশের উপর উঠেছেন,পৃ:-৩৯)
“আরশ শব্দের অর্থ:
আরশ শব্দের আভিধানিক অর্থ, সাধারণত যা উঁচু ও উপরে থাকে তাকেই বুঝায়। কুরআনে কারীমে সে অর্থে 'আরশ শব্দটির ব্যবহার এসেছে। [যেমন সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত: ১৩৭, সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৬৮; সূরা আল-আন'আম, আয়াত: ১৪১] তবে পরিভাষায় তা রাজা- বাদশাদের বসার খাটকে বুঝায়। যেমন- আল্লাহ তাআলা সাবার রাণী সম্পর্কে বলছেন, (ولها عرش عظيم) , "আর তার রয়েছে বড় একটি আরশ বা বসার স্থান"। [সূরা আন-নামল, আয়াত: ২৩] তাছাড়া "আরশ শব্দের অন্য অর্থও হতে পারে। তবে যখন কোনো রাজাধিরাজের সাথে সম্পৃক্ত হয় তখন তা কেবল রাজা-বাদশাদের খাটকেই বুঝায়।(১)
শরীআতের পরিভাষায়:
আল্লাহর আরশ হচ্ছে পায়া বিশিষ্ট একটি খাট যা ফিরিশতাগণ বহন করে; আর তা জগত সৃষ্টির উপর গম্বুজের মতো, সকল সৃষ্টিকুলের ছাদ, সবার উপরে ও সবচেয়ে বড়।
ইমাম তাবারী রাহিমাহুল্লাহ [ وَ تَرَی الۡمَلٰٓئِکَۃَ حَآفِّیۡنَ مِنۡ حَوۡلِ الۡعَرۡشِ(সূরা যুমার:৭৫)]এর ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে আরশ অর্থ খাট। তারপর তিনি সেটা তার সনদ দিয়ে সুদ্দী থেকে বর্ণনা করে বলে,"আরশের চারপাশে তারা ঘিরে আছে, আর আরশ হচ্ছে খাট" (২)
ইমাম তাবারী রাহিমাহুল্লাহ অন্য আয়াত [ ذول عرش ] এর ব্যাখ্যায় বলেন, খাটওয়ালা, যা তিনি ব্যতীত সকল কিছুকে পরিবেষ্টনকারী (৩)
বাইহাক্বী বলেন, তাফসীরকারদের মত হচ্ছে, "আরশ বলতে বুঝানো হয়েছে 'খাট'কে, আর তা একটি দেহ বিশিষ্ট বস্তু, যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। ফিরিশতাদেরকে তা বহন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাদেরকে সেটার সম্মান ও সেটার চার পাশে তাওয়াফ করে ইবাদাত করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন তিনি যমীনের বুকে একটি ঘর বানিয়েছেন, বনী আদমকে তার চারপাশে তাওয়াফ করার নির্দেশ দিয়েছেন, সালাতে সেটার দিকে মুখ করতে আদেশ করেছেন। তাফসীরকারগণ যে মতের দিকে গিয়েছেন সেটার সপক্ষে কুরআন, হাদীস, আছার এর প্রমাণসমূহ রয়েছে (৪)
তিনি আরও বলেন, 'আল-আরশ" তা বিবেকবানদের বিখ্যাত মত অনুযায়ী খাটকে বলা হয়।
ইমাম ইবন কাসীর বলেন, 'আরশ হচ্ছে এমন খাট যার পায়া রয়েছে, ফিরিশতারা তা বহন করে, আর তা জগতের উপর গম্বুজের মতো, সকল সৃষ্টিকুলের ছাদ। (৫)
ইমাম যাহাবী বলেন, 'তোমার কী ধারণা সে আরশের ব্যাপারে, যা সর্বোচ্চ মহান সত্তা নিজের জন্য গ্রহণ করেছেন, তার উচ্চতা, প্রশস্ততা, পায়া, গঠনশৈলী, বহনকারী, কুরূবীগণ, যারা সেটাকে চারপাশে ঘিরে আছে, তার সৌন্দর্য ও তার মূল্য সম্পর্কে? যেখানে বলা হচ্ছে যে, লাল রুবী পাথরের তৈরি। (৬)
বস্তুত ত্বাবারী, বাইহাকী, ইবন কাসীর, যাহাবী তারা যে মতটি বলেছেন, এটিই সকল সালাফে সালেহীনের মত।
(১) ইবনুল কাইয়্যিম মুখতাসারুস সাওয়া'য়িকুল মুরসালাহ(১/১৭,১৮)
(২) ত্বাবারী,(২৪/৩৭-৩৮)
(৩) ত্বাবারী,(২৪/৪৯)
(৪) বাইহাক্বী,আল-আসমা ওয়াস সিফত:৪৯৭
(৫) আল-বিদায় ওয়ান নিহায়া(১/১২)
(৬) আল-উলু,৫৭
আরশ আল্লাহর সৃষ্টিসমূহের একটি যা তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টির পূর্বেই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা সেটাকে পানির উপর সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে প্রকার, বড়, প্রশস্ত ও সবচেয়ে ভারী সৃষ্টি এটি। আরশ হচ্ছে লাল ইয়াকূতের। সেটি গম্বুজের মতো। তার রয়েছে পায়া, তার রয়েছে ছায়া, তাকে বহন করে আটজন বৃহৎ সৃষ্টির ফিরিশতা, ফিরিশতাগণ আরশের চারপাশে তাওয়াফ করে, তারা তাদের রবের যিকির শব্দ ও মৌমাছির গুঞ্জনের মতো করে, "আরশ কারও কারও মৃত্যুতে তার জন্য কেঁপে উঠেছে, তার রয়েছে ক্যাঁ ক্যাঁ শব্দ। রেহেম বা আত্মীয়তার সম্পর্ক তার সাথে ঝুলে আছে, আল্লাহ তা'আলা তার উপর লিখে রেখেছেন, আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রাধান্য পাবে। আরশ আসমান ও যমীনসমূহের উপরে, আরশের নিচে জান্নাত। আল্লাহ তা'আলা আসমান ও যমীন সৃষ্টির পরে আরশের উপর উঠেছেন। আরশ আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে নিকটতম সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলা যেদিন আসমান ও যমীনকে ভাঁজ করে রাখবেন সেই কিয়ামতের দিন তিনি আরশকে ভাঁজ করবেন না, বরং আরশকে জান্নাত ও জাহান্নামের মতো অবশিষ্ট রাখবেন, বিনষ্ট করবেন না। কুরসী আরশের চেয়ে ক্ষুদ্র আকৃতির। কুরসী দু' পা রাখার স্থান আর তা 'আরশের জন্য সিঁড়ির মতো। এ হচ্ছে আরশের মোটামুটি পরিচয়। আমরা এখন এগুলো দলীল প্রমাণসহ আলোচনা করব।(রহমান আরশের উপর উঠেছেন,পৃ:-৩৯)
“আরশ শব্দের অর্থ:
আরশ শব্দের আভিধানিক অর্থ, সাধারণত যা উঁচু ও উপরে থাকে তাকেই বুঝায়। কুরআনে কারীমে সে অর্থে 'আরশ শব্দটির ব্যবহার এসেছে। [যেমন সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত: ১৩৭, সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৬৮; সূরা আল-আন'আম, আয়াত: ১৪১] তবে পরিভাষায় তা রাজা- বাদশাদের বসার খাটকে বুঝায়। যেমন- আল্লাহ তাআলা সাবার রাণী সম্পর্কে বলছেন, (ولها عرش عظيم) , "আর তার রয়েছে বড় একটি আরশ বা বসার স্থান"। [সূরা আন-নামল, আয়াত: ২৩] তাছাড়া "আরশ শব্দের অন্য অর্থও হতে পারে। তবে যখন কোনো রাজাধিরাজের সাথে সম্পৃক্ত হয় তখন তা কেবল রাজা-বাদশাদের খাটকেই বুঝায়।(১)
শরীআতের পরিভাষায়:
আল্লাহর আরশ হচ্ছে পায়া বিশিষ্ট একটি খাট যা ফিরিশতাগণ বহন করে; আর তা জগত সৃষ্টির উপর গম্বুজের মতো, সকল সৃষ্টিকুলের ছাদ, সবার উপরে ও সবচেয়ে বড়।
ইমাম তাবারী রাহিমাহুল্লাহ [ وَ تَرَی الۡمَلٰٓئِکَۃَ حَآفِّیۡنَ مِنۡ حَوۡلِ الۡعَرۡشِ(সূরা যুমার:৭৫)]এর ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে আরশ অর্থ খাট। তারপর তিনি সেটা তার সনদ দিয়ে সুদ্দী থেকে বর্ণনা করে বলে,"আরশের চারপাশে তারা ঘিরে আছে, আর আরশ হচ্ছে খাট" (২)
ইমাম তাবারী রাহিমাহুল্লাহ অন্য আয়াত [ ذول عرش ] এর ব্যাখ্যায় বলেন, খাটওয়ালা, যা তিনি ব্যতীত সকল কিছুকে পরিবেষ্টনকারী (৩)
বাইহাক্বী বলেন, তাফসীরকারদের মত হচ্ছে, "আরশ বলতে বুঝানো হয়েছে 'খাট'কে, আর তা একটি দেহ বিশিষ্ট বস্তু, যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। ফিরিশতাদেরকে তা বহন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাদেরকে সেটার সম্মান ও সেটার চার পাশে তাওয়াফ করে ইবাদাত করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন তিনি যমীনের বুকে একটি ঘর বানিয়েছেন, বনী আদমকে তার চারপাশে তাওয়াফ করার নির্দেশ দিয়েছেন, সালাতে সেটার দিকে মুখ করতে আদেশ করেছেন। তাফসীরকারগণ যে মতের দিকে গিয়েছেন সেটার সপক্ষে কুরআন, হাদীস, আছার এর প্রমাণসমূহ রয়েছে (৪)
তিনি আরও বলেন, 'আল-আরশ" তা বিবেকবানদের বিখ্যাত মত অনুযায়ী খাটকে বলা হয়।
ইমাম ইবন কাসীর বলেন, 'আরশ হচ্ছে এমন খাট যার পায়া রয়েছে, ফিরিশতারা তা বহন করে, আর তা জগতের উপর গম্বুজের মতো, সকল সৃষ্টিকুলের ছাদ। (৫)
ইমাম যাহাবী বলেন, 'তোমার কী ধারণা সে আরশের ব্যাপারে, যা সর্বোচ্চ মহান সত্তা নিজের জন্য গ্রহণ করেছেন, তার উচ্চতা, প্রশস্ততা, পায়া, গঠনশৈলী, বহনকারী, কুরূবীগণ, যারা সেটাকে চারপাশে ঘিরে আছে, তার সৌন্দর্য ও তার মূল্য সম্পর্কে? যেখানে বলা হচ্ছে যে, লাল রুবী পাথরের তৈরি। (৬)
বস্তুত ত্বাবারী, বাইহাকী, ইবন কাসীর, যাহাবী তারা যে মতটি বলেছেন, এটিই সকল সালাফে সালেহীনের মত।
(১) ইবনুল কাইয়্যিম মুখতাসারুস সাওয়া'য়িকুল মুরসালাহ(১/১৭,১৮)
(২) ত্বাবারী,(২৪/৩৭-৩৮)
(৩) ত্বাবারী,(২৪/৪৯)
(৪) বাইহাক্বী,আল-আসমা ওয়াস সিফত:৪৯৭
(৫) আল-বিদায় ওয়ান নিহায়া(১/১২)
(৬) আল-উলু,৫৭