‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

আবু দারদা (রা:)'র আসবাবপত্রের অবস্থা

সাহাবী আবু দারদা রাদিআল্লাহু আনহু সিরিয়ার গভর্নর থাকাকালীন আমীরুল মুমিনীন উমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু গোপনে তাঁর অবস্থা জানার জন্য কোনো রাতের আঁধারে গভর্নর আবু দারদা'র বাড়িতে পৌঁছে তাঁর ঘরের কড়া নাড়লেন। ঘরের দারজা খোলা পেয়ে উমর ফারূক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু অন্ধকার ঘরে ঢুকে পড়লেন। আবু দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু কারো প্রবেশের পদধ্বনি আঁচ করে উঠে দাঁড়ালে দেখেন উমর ফারূক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু। তাঁকে খোশ আমদেদ জানালেন এবং বসতে বললেন। মুসলিম বিশ্বের দুই মহান নেতা রাতের অন্ধকারেই একান্ত পরিবেশে পারস্পরিক আলোচনায় নিমগ্ন হয়ে পড়লেন। আবু দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর ঘরে কুপি জ্বালানোর মতো তেল না থাকায় রাতের আঁধারে তারা একে অপরকে দেখতে পাচ্ছিলেন না। এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার ফাঁকে উমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আবূ দারদা' রাদিয়াল্লাহু আনহুর 'বালিশ' কেমন, আরামদায়ক, না সাধারণ তা হাত বাড়িয়ে দেখেন। তিনি দেখতে পান যে, আবূ দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু তার ঘোড়ার পিঠে ব্যবহৃত কাপড়টিকেই রাত্রিবেলা বালিশ হিসেবে ব্যবহার করছেন। উমর ফারূক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু এবার আবূ দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর বিছানার অবস্থা কেমন, তা হাত বাড়িয়ে দেখার চেষ্টা করেন। দেখেন, গুঁড়োবপাথর মিশ্রিত বালি সমতল করে নিয়ে একেই তিনি বিছানা বানিয়েছেন । এবার উমর ফারূক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আবূ দারদা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর লেপ-তোশকের অনুরূপভাবে খবর নিতে লাগলেন। দেখতে পেলেন যে, লেপ-তোশক বা কম্বল ইত্যাদি বলতে পাথর কণার বিছানায় তার একটি মাত্র পাতলা কম্বল যা দামেশকের প্রচণ্ড শীত প্রতিরোধের মোটেই উপযোগী নয়। এসব দেখে তিনি আবূ দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে বললেন : 'আমি কি আপনার প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর জন্য বাইতুলমাল থেকে উপযুক্ত ভাতার ব্যবস্থা করিনি? আমি কি আপনার মাসিক ভাতা যথাসময়ে আপনার কাছে প্রেরণ করিনি? আপনার এ দুরবস্থায় আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।'

আবূ দারদা' রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহু খালীফাতুল মুসলিমীনকে উত্তর দিলেন :

“হে খালীফাতুল মুসলিমীন! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সে হাদীসটি কি আপনার মনে পড়ে? যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শুনিয়েছিলেন?”

উমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বললেন : "কোনটি?"

আবূ দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বললেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আমাদের একথা বলেননি?

'দুনিয়ায় তোমাদের ধন-সম্পদ ও অর্থকড়ি যেন একজন মুসাফিরের সরঞ্জামাদির চেয়ে বেশি না হয়।'

উমর ফারূক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু উত্তর দিলেন : 'হ্যাঁ।'

আবু দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বললেন : “হে খালীফাতুল মুসলিমীন, এ সত্ত্বেও আমরা কী করছি?”

উমর ফারূক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আবূ দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর কথা শুনে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর সাথে সাথে আবু দারদা' রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু নিজেও কাঁদতে থাকলেন। অতঃপর তাদের উভয়ের কাঁদতে কাঁদতেই রাত ভোর হয়ে গেল।

– সাহাবীদের আলোকিত জীবন (১ম খন্ড), ড. আবদুর রহমান রাফাত পাশা, সবুজপত্র পাবলিকেশন্স

বি. দ্র : সবুজপত্র পাবলিকেশন্স সালাফী প্রকাশনী নয়। সকলকে সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছি। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে সম্মানিত সালাফী আলেমদের শরণাপন্ন হোন।
 

Share this page