‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

গল্প আবু দারদা (রা:) এর সম্পদবিমুখতা

প্রচন্ড শীতের কোনো এক রাতে তাঁর বাড়িতে বেশ কয়েকজন মেহমান আসেন। তাদের জন্য গরম গরম খাদ্য পরিবেশন করা হয়; কিন্তু শীত নিবারণের জন্য বিছানাপত্রের কোনো ব্যবস্থা না করায় মেহমানরা নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন। তাদেরই একজন আবূ দারদা' বানিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর কাছে গিয়ে এ প্রয়োজনের কথা বলার জন্য উদ্যোগী হলে অপর একজন তাকে নিবৃত্ত করে বললেন :

আরে রাখো, এভাবেই রাতটা কাটিয়ে দাও; কিন্তু তা উপেক্ষা করে তিনি তাঁর কক্ষের দরজায় পৌঁছে দেখেন, আবু দারদা রানিয়াল্লাহ তাআলা আনহু হয়ে এবং তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছেই বসে আছেন। তাঁদের উভয়ের গায়েই পাতলা একখানা চাদর, যা কোনো অবস্থাতেই শীত নিবারণ করতে পারে না। সেই মেহমান আবু দারদা রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহুর কাছে গিয়ে বললেন :

কী ব্যাপার, আমরা যেভাবে শীতবন্ত্রহীন অবস্থার রাত কাটাচ্ছি, আপনিও দেখছি একইভাবে রাত কাটাচ্ছেন। আপনাদের শীতবস্ত্র কোথায়?

আবু দারদা' বাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু উত্তর দিলেন :

আমাদের আরো একটি বাড়ি আছে, সেই বাড়িতে সব পাঠিয়ে দিয়েছি। সামান্য আসবাবপত্রও যদি বাড়িতে থাকত, তাহলে তা অবশ্যই আপনাদের জন্য পাঠিয়ে দিতাম। দ্বিতীয়ত, সে বাড়িতে পৌঁছতে যে রাস্তা অতিক্রম করতে হয়, সে পথ খুবই দুর্গম। সে পথের পথিকদের মধ্যে যারা বেশি বেশি সাজ-সরঞ্জামের অধিকারী, তাদের চেয়ে যারা সামান্য ও হালকা সাজ সামানের অধিকারী, তারাই শ্রেয়। আমরা অত্যধিক সাজ-সরঞ্জামের উপর হালকা সাজ-সামানকে প্রাধান্য দিয়েছি, যেন সহজেই সে পথ অতিক্রম করতে পারি।

অতঃপর মেহমানকে জিজ্ঞাসা করলেন :

আমার কথার মর্মার্থ কি বুঝেছেন?

মেহমান উত্তরে বললেন :

'জী, খুব ভালো করেই বুঝেছি, আমাকে উত্তম নসীহতের জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।’

আবু দারদা রাদিআল্লাহু আনহু দুনিয়ার মোহ, লোভ লালসা ও বিলাসিতাকে পরিত্যাগ করেছিলেন। জীবন ধারণের জন্য যতটুকু দরকার, এর উপরই তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন।

– সাহাবীদের আলোকিত জীবন (১ম খন্ড), ড. আবদুর রহমান রাফাত পাশা, সবুজপত্র পাবলিকেশন্স
 

Share this page