আবু ত্বহা আদনানের মতে মালহামা হতে যাচ্ছে আনুমানিক ৫-১০ বছরের মধ্যে

Joynal Bin Tofajjal

Student Of Knowledge

Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
343
Comments
476
Reactions
6,115
আবু ত্বহা আদনান বলেছেন, “নবিজি বলেছেন, যখন এই অবস্থা হবে, তখনই মালহামা শুরু হবে। সাহাবিরা বললেন, মালহামা কী জিনিস? নবিজি বললেন, এমন যুদ্ধ, যে যুদ্ধে একশজনের মধ্যে নিরানব্বইটা মানুষ মারা যাবে। একশজনের মধ্যে নিরানব্বইটা সৈন্য মারা যাবে। এবং এই যুদ্ধটা হবে, ইউফ্রেটিস বা ইরাকের ফোরাত নদীর সোনার পাহাড়কে কেন্দ্র করে। এটা সামনে হতে যাচ্ছে। এবং এই যুদ্ধটা হবে বিশ্বের আশিটা দেশের মধ্যে। বিশ্বের আশিটা দেশ একত্রিত হয়ে যুদ্ধ করবে সামনে। আপনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধ দেখেছেন না? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছেন। এগুলো এই যুদ্ধের সামনে কিছুই না। এটা হবে পারমাণবিক যুদ্ধ। সামনে হতে যাচ্ছে। এবং প্রত্যেক দেশ বারো হাজার করে সৈন্য পাঠাবে এই যুদ্ধে। এরা সবাই মিলে যখন এই যুদ্ধে অংশ নিবে, তখন এরা মুসলিমদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালাবে। সামনে হতে যাচ্ছে এটা, আগামী পাঁচ-দশ-পনেরো বছরের মধ্যে, আল্লাহ ভালো জানেন। তবে আমাদের অনুমান, দশ বছরের মধ্যে হতে পারে, পাঁচ বছরের মধ্যেও হতে পারে।” [দ্রষ্টব্য: https://youtu.be/npyaY-cHMKw (৮:২৮ মিনিট থেকে ৯:৩০ মিনিট)]

সুপ্রিয় পাঠক, আমরা ইতোমধ্যে দলিলসমৃদ্ধ সবিস্তার আলোচনা থেকে অবগত হয়েছি, হাদিসে বর্ণিত মালহামা কুবরা তথা রক্তক্ষয়ী মহাযুদ্ধ কেয়ামতের একটি আলামত এবং কেয়ামতের ঘটিতব্য আলামতগুলো কবে হবে তা বলা যাবে না, কেউ বললে সেটা বিশ্বাসও করা যাবে না। কারণ এগুলো পুরোপুরি গায়েবি জ্ঞানের অন্তর্গত, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। তথাপি আমরা বর্তমান যুগের আকিদার অন্যতম সেরা বিদ্বান, সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সাবেক সদস্য, আল্লামা ইউসুফ বিন মুহাম্মাদ আল-গাফিস হাফিযাহুল্লাহর একটি প্রাসঙ্গিক আলোচনা পেশ করছি।

শাইখ ইউসুফ আল-গাফিস হাফিযাহুল্লাহ আকিদাতুত তাহাবিয়্যার ভাষ্যে বলেছেন—
والحق أن التحديد للمسائل الخبرية، سواء كان تحديدًا للساعة، أو ما هو دون ذلك، كبعض الملاحم، والقتال الذي يكون مع اليهود أو غير ذلك؛ تحديد هذه الأمور بوقت معين وزمن معين وسنة معينة، لا شك أنه لا يجوز. ولا شك أنه من الافتيات على الغيب، سواء استعمل لهذا التحديد بعض الاستقراءات من الآثار التي جاءت عن بعض أهل الكتاب أو غيرهم، أو ما يقع فيه بعض الناس -وهو أشد- من اعتبار هذه الأمور بالمنامات، فيفسرون بعض الرؤى بأنها هذه تدل على أنه سيقع القتال بين المسلمين واليهود في تاريخ كذا وكذا، وأن هذه هي الفتنة أو الملحمة التي ذكرها النبي ﷺ، ولا شك أن هذا بدعةٌ لا أصل لها، بل يجب في هذه الأمور أن يؤمن بما حدث به الرسول ﷺ، فضلًا عما جاء في كتاب الله، وأما مرسى هذه الأمور ووقتها وزمنها، فإن ذلك إلى الله سبحانه وتعالى لا ينبغي التكلف بالبحث عنه.​
“প্রকৃতপক্ষে পুরোপুরি কুরআন-সুন্নাহর দলিলনির্ভর বিষয়গুলোর সময়কাল নির্ধারণ করার ব্যাপারটি; চাই সেটা কেয়ামতের সময়কাল নির্ধারণের ব্যাপার হোক, বা কেয়ামত ব্যতিরেকে অন্যান্য বিষয়ের সময়কাল নির্ধারণের ব্যাপার হোক, যেমন বিভিন্ন যুদ্ধবিগ্রহ এবং ইহুদিদের সাথে সংঘটিতব্য যুদ্ধ প্রভৃতি। কোনো নির্দিষ্ট ক্ষণ, নির্দিষ্ট সময়কাল, নির্দিষ্ট বছরের গণ্ডিতে এসব বিষয়ের সময়নির্ধারণ করা সন্দেহাতীতভাবে না-জায়েজ। নিঃসন্দেহে এটা গায়েবের ব্যাপারে বানিয়ে কথা বলার অন্তর্গত। এই সময়কাল নির্ধারণের জন্য কেউ কিতাবধারী ইহুদি-খ্রিষ্টানদের থেকে বর্ণিত বর্ণনাগুলোর গবেষণা ব্যবহার করুক, আর চাই কতিপয় মানুষ এসব বিষয় নির্ধারণের জন্য আরও ভয়ংকর যে পন্থায় নিপাতিত হয়েছে সেই পথ ব্যবহার করুক, অর্থাৎ স্বপ্নের মাধ্যমে এ জাতীয় বিষয় নির্ধারণ করা (এ কাজের বিধান একই থাকবে)।
একদল মানুষ কতিপয় স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে বলে, এসব স্বপ্ন থেকে প্রতিপন্ন হয়, অমুক অমুক তারিখে ইহুদি ও মুসলিমদের মাঝে যুদ্ধ সংঘটিত হবে, অথবা এটাই সেই ফিতনা বা মালহামা, যেটার কথা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। নিঃসন্দেহে এ কাজ ভিত্তিহীন বিদাত। বরং এসব ক্ষেত্রে আল্লাহর কিতাবে আগত বিষয়ের পাশাপাশি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন কেবল সেসবের প্রতি ইমান রাখতে হবে। পক্ষান্তরে এসব বিষয়ের সময়, ক্ষণ ও লগ্ন সম্পর্কিত জ্ঞান কেবল মহান আল্লাহর কাছেই সোপর্দিত। এসব জিনিস অনুসন্ধান করার মাধ্যমে বাড়াবাড়ি করা বাঞ্ছনীয় নয়।” [শাইখ গাফিস বিরচিত শারহুত তাহাবিয়্যা, পৃষ্ঠা: ২৪৫-২৪৬; মুদ্রণবিহীন সফটকপি]

আবু ত্বহা আদনান অনুমান করে ৫-১০ বছরের মধ্যে মালহামা শুরু হবে বলে যে মত ব্যক্ত করেছেন তা বাতিল এবং এরকম গায়েবি বিষয়ে এ জাতীয় অনুমানও নিষিদ্ধ, যা আমরা ইতঃপূর্বে আলোচনা করেছি। কারণ ঘটিতব্য মালহামা কুবরা তথা রক্তক্ষয়ী মহাযুদ্ধ পুরোপুরি দলিলনির্ভর বিষয়, এ নিয়ে ইজতিহাদ তথা গবেষণা করে মত ব্যক্ত করা না-জায়েজ। আল্লাহুল মুস্তাআন।





লিখেছেন: মুহাম্মাদ আব্দুল্ললাহ মৃধা।​
 
Last edited:
Back
Top