প্রবন্ধ অকাল কুষ্মান্ড - ইসলামী আক্বীদা পরিপন্থী বাংলা প্রবাদ

Joined
Jan 12, 2023
Threads
864
Comments
1,113
Solutions
20
Reactions
13,055
অকাল কুষ্মান্ড : বাংলা অভিধান অনুযায়ী সংস্কৃত শব্দ কুষ্মান্ড অর্থ কুমড়া। অকাল কুষ্মান্ড অর্থ অসময়ে জন্ম নেওয়া কুমড়া অর্থাৎ অকেজো, অপদার্থ বা অযোগ্য ব্যক্তি। এ প্রবাদটির পেছনের গল্প মহাভারতের কেন্দ্রীয় চরিত্র দুর্জধনের সাথে সম্পর্কযুক্ত। দুর্জধন ধৃতরাষ্ট্রের বড় সন্তান। ধৃতরাষ্ট্র ও পান্ডু বিচিত্রবীর্যের দুই পুত্র’।[1]

গান্ধার দেশের রাজা সুবলের কন্যা গান্ধারীর সাথে ধৃতরাষ্ট্রের বিবাহ হয় এবং কুন্তিভোজের রাজকন্যা কুন্তির সাথে পান্ডুর বিবাহ হয়। যৌবনে গান্ধারী দেবতা শিবের কাছ থেকে শত পুত্রের বর পেয়েছিলেন। কিন্তু বিবাহের পরে দুই বছর অতিক্রম হলেও গর্ভবতী গান্ধারীর কোন সন্তান হয় না। অপরদিকে কুন্তির প্রথম সন্তান যুধিষ্ঠিরের জন্ম হলে হিংসায় গান্ধারী নিজ পেটে আঘাত করে গর্ভপাত ঘটায়। গর্ভপাতে লোহার মত শক্ত একটি মাংসপিন্ড বেরিয়ে আসে। গান্ধারী রাগে সে মাংসপিন্ড ফেলে দিতে উদ্যত হয়। এমন সময় ঋষি ব্যাস আবিভূর্ত হয়ে সে মাংসপিন্ডটি একশত খন্ড করে ঘিয়ে পরিপূর্ণ (সম্ভবত কুমড়া সদৃশ) পাত্রে রেখে দেওয়ার পরামর্শ দেন। তার এক বছর পরে গান্ধারীর প্রথম সন্তান দুর্জধন, দুঃশলা নামে এক কন্যা এবং নিরানববই পুত্র পরপর জন্মগ্রহণ করে। ধৃতরাষ্ট্রের এ শত পুত্রের বংশকে কৌরব বলা হয়। মহাভারতের যুদ্ধে দুর্জধন পান্ডু পুত্রদের সাথে লড়াই করে নিজের বংশকে ধ্বংস করে। এ কারণে দুর্জধনকে অকালকুষ্মান্ড বা অপদার্থ বলা হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অযোগ্য ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে ‘অকালকুষ্মান্ড’ প্রবাদটি সমাজে প্রচলিত হয়’।[2]


[1]. এরা বিচিত্রবীর্যের ঔরসজাত নয়। সন্তান জন্মের আগেই বিচিত্রবীর্য যক্ষ্মা রোগে মারা যায়। বংশ রক্ষার্থে তার মাতা সত্যবতীর বিবাহ বর্হিভূত সন্তান মহাভারতের রচয়িতা ব্যাসদেবের ঔরসে ধৃতরাষ্ট্র ও পান্ডুর জন্ম হত (মহাভারত, বঙ্গানুবাদ : রাজশেখর বসু, আদিপর্ব, ৪২-৪৩, ৪৮ পৃ.)।
[2]. প্রবাদ সংগ্রহ, শ্রীকানাই লাল ঘোষাল, ১৪ যুগল কিশোর দাস লেন, কলকাতা- ১৮৯০ খ্রীঃ, ৫ পৃ।

 
Back
Top