ইবাদাত তিনটি উপাদানের সমষ্টি। সেটি হচ্ছে:
১. মহব্বত বা ভালোবাসা
২. খাউফ বা ভয়
৩. রাজা বা আশা
মহব্বত থাকবে বিনয়ের সাথে, আর ভয় ও আশা থাকবে পরস্পরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত -ইবাদাতের মধ্যে এ অনুভূতি সম্মিলিতভাবে থাকাটা জরুরী। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মুমিন বান্দাদের গুণ বর্ণনায় বলেছেন, ﴿يُحِبُّهُمۡ...
ইবাদাত হচ্ছে ওহী নির্ভর। এ কথার অর্থ হলো: আল-কুরআন ও সুন্নাহ’র দলীল ছাড়া ইবাদাতের কোনো কিছুই শরী‘আতসিদ্ধ নয়। আর যা শরী‘আতসিদ্ধ নয় তা বিদ‘আত ও প্রত্যাখ্যাত বলেই গণ্য হয়। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ»
“যে ব্যক্তি এমন...
ইবাদাতের মূল অর্থ হচ্ছে নম্র হওয়া ও বিনয়ী হওয়া। আর শরী‘আতের পরিভাষায় ইবাদাতের অনেকগুলো সংজ্ঞা রয়েছে। তবে তার অর্থ একটিই। এর মধ্যে একটি সংজ্ঞা হলো - ইবাদাত হচ্ছে রাসূলগণের ভাষায় আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্য করা। আরেকটি সংজ্ঞা হলো- ইবাদাত হচ্ছে আল্লাহর জন্য বিনয়ী ও নম্র হওয়া।...
শরী‘আত প্রণয়ন মহান আল্লাহ তা‘আলারই অধিকার। শরী‘আত প্রনয়ণের অর্থ হচ্ছে সে সকল রীতি-নীতি প্রণয়ন যা আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য নাযিল করেছেন। এ হচ্ছে সে রীতি-নীতি বান্দাগণ যা তাদের আকীদাহ, মু‘আমালাত ও অন্যান্য ক্ষেত্রে মেনে চলবে। এর মধ্যে রয়েছে হালাল হারামের বিধান। সুতরাং আল্লাহ যা হালাল করেছেন তা...
প্রথমত: শাহাদাত বাণীদ্বয়ের অর্থ
১. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো প্রকৃত ইলাহ নেই’ এ সাক্ষ্য দেওয়ার অর্থ হচ্ছে এ বিশ্বাস পোষণ করা ও এ স্বীকৃতি প্রদান করা যে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউই ইবাদাতের উপযুক্ত নয় আর এ বিষয়টি দৃঢ়ভাবে মেনে নেওয়া এবং তদনুযায়ী আমল করা। সুতরাং ‘লা-ইলাহা’ এ কথাটি...
তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ: ‘আল-উলুহিয়্যাহ’-এর অর্থ হচ্ছে ইবাদাত।
আর তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ হচ্ছে, বান্দা যেসব কাজ শরী‘আতসম্মত উপায়ে শুধুমাত্র আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য করে থাকে, সেসব কাজ দ্বারা কেবল আল্লাহ তা‘আলাকেই উদ্দেশ্য করা। যেমন, দো‘আ, মান্নত, যবেহ, আশা পোষণ, ভয়, তাওয়াক্কুল বা নির্ভরতা, আল্লাহর...
এর অর্থ হচ্ছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ তথা রুবুবিয়্যাতের ক্ষেত্রে একত্ববাদকে স্বীকার করে নেয়। যেমন, সে এ স্বীকৃতি প্রদান করে যে, মহান আল্লাহ ছাড়া জগতের কোনো স্রষ্টা নেই, রিযিকদাতা নেই, পরিচালনাকারী নেই, তার জন্য এ স্বীকৃতি দেওয়াও অপরিহার্য্য হয়ে উঠে যে, সকল প্রকার ইবাদাতের...
স্রষ্টার অস্তিত্ব ও তাঁর একত্ববাদ প্রমাণে আল-কুরআনের নীতি সঠিক ফিতরাত ও স্বভাব এবং সুস্থ বিবেকের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। আর এ নীতি বাস্তবায়িত হয়েছে এমন বিশুদ্ধ প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে যদ্বারা বিবেক সম্পন্ন সকল মানুষ সন্তুষ্ট হয় এবং প্রতিপক্ষ তা মেনে নেয়। এ সকল বিশুদ্ধ প্রমাণের মধ্যে রয়েছে:
১. এটা...
১. আল-কুরআন ও আস-সুন্নায় ‘আর-রব’ শব্দটির অর্থ:
‘আর-রাব’ মূলে ‘রাববা’, ‘ইয়ারুববু’ এর ক্রিয়ামূল। এর অর্থ হচ্ছে কোনো বস্তুকে প্রতিপালন করে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় তথা পূর্ণ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া। আরবীতে বলা হয়, ‘রববাহু, ওয়া-রাববা-হু, ওয়া-রাববাবাহু’। সুতরাং ‘রব’ শব্দটি কর্তৃকারকের জন্য ব্যবহৃত...
সাধারণ অর্থে “তাওহীদ” হচ্ছে: আল্লাহই একমাত্র রব -এ আকীদা পোষণ করে তাঁর জন্য ইবাদাতকে খালিস ও একনিষ্ঠ করা আর তাঁর সকল নামসমূহ ও সিফাতকে সাব্যস্ত করা। এ আলোকে তাওহীদ তিন প্রকার:
তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ, তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ, তাওহীদুল আসমা ওয়াস্-সিফাত। এসব প্রকারের প্রত্যেকটিরই একটি বিশেষ অর্থ রয়েছে...
তাওহীদ হচ্ছে সৃষ্টি ও সৃষ্টিজগতকে পরিচালনার কর্তৃপক্ষ হিসাবে আল্লাহকে একক বলে স্বীকার করা, তাঁর জন্য একনিষ্ঠভাবে ইবাদাত করা, তিনি ছাড়া অন্য যে কারোর ইবাদাত পরিত্যাগ করা এবং তাঁর যে সকল সুন্দর সুন্দর নাম ও মহান গুণাবলী রয়েছে তা সাব্যস্ত করা আর তাঁকে সকল দোষ ও ত্রুটি থেকে পবিত্র ও মুক্ত রাখা। এ...
বিশুদ্ধ আকীদা থেকে বিচ্যুত হওয়া ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন হওয়ার কারণ। কেননা বিশুদ্ধ আকীদাই কল্যাণকর আমল করার শক্তিশালী প্রেরণাদায়ক উপাদান। বিশুদ্ধ আকীদা ছাড়া যে কোনো ব্যক্তি ধারণা-কল্পনা ও সন্দেহের বশবর্তী হয়ে যেতে পারে, যা অতি সহজেই তার মন মস্তিষ্কে দানা বেঁধে সুখী জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে সঠিক...
আকীদার জ্ঞান ওহী নির্ভর। সুতরাং শরী‘আত প্রণেতার পক্ষ থেকে কোনো দলীল বা প্রমাণ ছাড়া কোনো আকীদা সাব্যস্ত করা যাবে না। আকীদার ক্ষেত্রে নিজস্ব রায়, অভিমত ও ইজতিহাদের কোনো অবকাশ নেই। সুতরাং আকীদার উৎস শুধুমাত্র আল-কুরআন ও সুন্নায় যে তথ্য এসেছে তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কেননা আল্লাহ সম্পর্কে এবং...
আকীদাগত বিষয়সমূহ হলো এমন যা কাজে রূপায়িত করার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় অর্থাৎ যার কোনো বাহ্যিক কার্যরূপ নেই। যেমন এই আকীদা পোষণ করা যে, আল্লাহ্ রব এবং তাঁর ইবাদাত করা ওয়াজিব। একইভাবে ঈমানের উল্লেখিত বাকী রুকনগুলোর প্রতিও বিশ্বাস রাখা। এগুলোকে বলা হয় মৌলিক বিষয়।
আর আমলী বিষয়সমূহ হলো এমন যা কার্যে পরিণত...
শরী‘আতের পরিভাষায় আকীদা হলো: আল্লাহর প্রতি, তাঁর মালাইকা (ফিরিশতা), তাঁর গ্রন্থসমূহ, তাঁর রাসূলগণ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান পোষণ এবং তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান রাখা। আর এগুলোকে বলা হয় ঈমানের রুকন।
তাওহীদ পরিচিতি
ড. সালিহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান
অনুবাদ: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সম্পাদনা...
আকীদা শব্দটি আরবী العَقدُ العَقدُ আল-‘আকদু থেকে গৃহিত। এর অর্থ কোনো কিছু বেঁধে রাখা। বলা হয় عَقدْتُ عَليْهِ القلبَ وَالضَّمِيْرَ অর্থাৎ আমি এর ওপর হৃদয় ও মনকে বেঁধেছি। আকীদা হলো ঐ বিষয়, মানুষ যা মেনে চলে। বলা হয়, ‘তার আছে সুন্দর আকীদা’ অর্থাৎ এমন আকীদা যা সন্দেহমুক্ত। আকীদা অন্তরের কাজ। অন্যভাবে...
ফেরেশতারা অদৃশ্য জগৎ। আল্লাহ তাদেরকে নূর দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তারা আল্লাহর নির্দেশ পালনে রত আছেন। “তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।”[সূরা তাহরীম, আয়াত:০৬]
ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:
১. এই স্বীকৃতি প্রদান করা যে...
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, ‘যে বলবে যে, আল্লাহ আসমানে আছেন, না যমীনে তা আমি জানি না, সে কুফরী করবে। কেননা আল্লাহ বলেন, রহমান আরশে সমাসীন। আর তার আরশ সপ্ত আকাশের উপর।
[ইজতিমাউল জুয়ূশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃ: ৯৯]
ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, ‘আল্লাহ আকাশের উপর এবং তাঁর জ্ঞানের পরিধি সর্বব্যাপী বিস্তৃত। কোন...