‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

হে হাকীম! জেনে রেখো, গ্রহণকারীর হাতের চেয়ে দাতার হাত সর্বদাই উত্তম

হুনাইনের যুদ্ধ শেষে সাহাবী হাকীম ইবনে হিযাম রাদিআল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গনীমতের সম্পদের আবেদন করলে তাঁকে তা দেওয়া হয়। এর পরেও তিনি আবারও আবেদন করেন, এবার আরো বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আবারও আবেদন করেন। এবার আরো বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এভাবে এর সংখ্যা একশতটি উটে গিয়ে দাঁড়ায়। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাস তাঁকে বলেন : “হে হাকীম! এসব মাল-সম্পদ খুবই প্রিয় ও আকর্ষণীয়, যারা তা কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করে আল্লাহ তাতে বরকত দান করেন। আর অকৃতজ্ঞ বা লোভীদের জন্য আল্লাহ তাতে কোনো বরকত রাখেননি; বরং তাদের জন্য রয়েছে শুধু অতৃপ্তি আর অতৃপ্তি। সে ঐ ক্ষুধার্ত পেটের ন্যায়, যা বারবার আহারের পরও অতৃপ্ত থাকে। হে হাকীম! জেনে রেখো, গ্রহণকারীর হাতের চেয়ে দাতার হাত সর্বদাই উত্তম।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসারামের কাছ থেকে এই নসীহত শোনার পর হাকীম ইবনে হিযাম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বললেন : 'হে আল্লাহর রাসূল! যিনি আপনাকে সত্য দীন সহকারে প্রেরণ করেছেন। তাঁর শপথ! আপনার পরে আর কারো কাছে কোনো প্রকার আবেদন করব না। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আর কারো কাছ থেকে কোনো সাহায্য নেব না।'

হাকীম ইবনে হিযাম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু অবশিষ্ট জীবনে তাঁর কৃত শপথকে বাস্তবে পরিণত করে দেখিয়েছিলেন।

আবূ বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর খিলাফতকালে একাধিকবার রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তার নির্ধারিত অর্থ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানানোর পরও তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। এমনিভাবে উমর ফারূক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর খিলাফতকালেও রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাঁর নির্ধারিত অর্থ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানোর পর প্রথম খলীফাকে যেমন উত্তর দিয়েছিলেন, তেমনি এবারও তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। এমনকি পরিশেষে উমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু জনসম্মুখে এর ব্যাখ্যায় বাধ্য হয়ে ঘোষণা দেন যে : ‘হে মুসলিম ভাই-বোনেরা! আমি বারবার হাকীম ইবনে হিযামকে তাঁর নির্দিষ্ট অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে আসছি। কিন্তু তিনি বারবারই তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন।'

এভাবেই হাকীম ইবনে হিযাম রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত অন্যের কাছ থেকে বা রাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ গ্রহণ করেননি।

– সাহাবীদের আলোকিত জীবন, দ্বিতীয় খন্ড; সবুজপত্র পাবলিকেশন্স, মূল: ড. আবদুর রহমান রাফাত পাশা
 
Last edited:

Share this page