সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর হজ্জ ও উমরার আদবসমূহ

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,133
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,491
Credits
24,212
প্রশ্ন: আমি আপনাদের ওয়েব সাইটে হজ্জ ও উমরা আদায় করার পদ্ধতি পড়েছি। এমন কিছু আদব বা শিষ্টাচার আছে কি একজন হাজী ও উমরা পালনকারীর যেগুলোতে ভূষিত হওয়া বাঞ্ছনীয়?


উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ।


আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সে সব মাসে নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয় সে ব্যক্তি হজ্বের সময় কোন যৌনাচার করবে না, গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না। আর তোমরা উত্তম কাজ থেকে যা-ই কর আল্লাহ্‌ তা জানেন। তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর। নিশ্চয় সবচেয়ে উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া। সুতরাং ওহে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! তোমরা আমার তাকওয়া অবলম্বন কর।”[সূরা বাকারা; ২: ১৯৭]


- তাই বান্দার উচিত হচ্ছে- বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্‌কে সম্মান দিয়ে, মর্যাদা দিয়ে, তাঁর ভালবাসা ও তাঁর প্রতি আনুগত্যশীল হয়ে হজ্জের কার্যাবলী সম্পন্ন করা। ধীরস্থির, গাম্ভীর্য ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামর পূর্ণ অনুসরণ করে আমলগুলো আদায় করা।


- এ মর্যাদাবান স্থানগুলোতে আল্লাহ্‌র যিকির, তাকবীর, তাসবীহ, তাহমীদ (আল্লাহ্‌র প্রশংসা করা) ও ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা করা)- এ মশগুল থাকা। কেননা ইহরাম বাঁধা থেকে শুরু করে ইহরাম থেকে হালাল হওয়া পর্যন্ত বান্দা ইবাদতের মধ্যেই থাকে। হজ্জ কোন এমন কোন বিনোদনমূলক খেল-তামাশা নয় যে, কোন বিধি-নিষেধ ছাড়া মানুষ যেভাবে খুশি সেভাবে উপভোগ করবে; কিছু কিছু মানুষকে যেভাবে করতে দেখা যায়। আপনি দেখবেন, কিছু কিছু লোক এমন বাড়াবাড়ি পর্যায়ের হাসি-তামাশা ও অন্যকে নিয়ে ঠাট্টা মশকরার মত গর্হিত কাজগুলোতে মেতে থাকে যেন মজা করা ও তামাশা করার জন্য হজ্জের বিধান আরোপ করা হয়েছে।


- হাজীসাহেব ও অন্যদের উপর আল্লাহ্‌ যা কিছু ওয়াজিব করেছেন সেগুলো রক্ষা করে চলা ওয়াজিব। যেমন- সময়মত জামাতের সাথে নামায আদায় করা, সৎ কাজের আদেশ করা ও অসৎ কাজে নিষেধ করা।


- হাজীসাহেবের কর্তব্য মুসলমানদের উপকার করা। দিক-নির্দেশনা দেয়া ও প্রয়োজনে সহযোগিতা করার মাধ্যমে তাদের প্রতি ইহসান করা, দুর্বলদের প্রতি দয়া করা। বিশেষত যে স্থানগুলোতে দয়া করা প্রয়োজন; যেমন ভিড়ের জায়গা ও এ ধরণের অন্য অবস্থাগুলোতে। কারণ মাখলুকের প্রতি দয়া আল্লাহ্‌র দয়াকে আনয়ন করে। আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাদের মধ্যে শুধু দয়ালুদের প্রতি দয়া করেন।


- যৌনাচার, পাপাচার, সীমালঙ্ঘন ও অসত্যের পক্ষে তর্ক পরিত্যাগ করা। তবে, সস্থানে সত্যের পক্ষে তর্ক করা ওয়াজিব।


- মানুষের উপর অন্যায় করা, তাদেরকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা। গীবত, নামিমা (কান-কথা লাগানো), গালি-গালাজ, মারামারি ও বেগানা নারীদের দিকে তাকানো ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা। এগুলো ইহরাম অবস্থাতে হারাম, ইহরাম ছাড়াও হারাম। তবে ইহরাম অবস্থায় এগুলোর হারাম হওয়া আরও বেশি জোরালো হয়।


- পবিত্র স্থানগুলোর সাথে মানানসই নয় এমন যে সব কথা অনেক মানুষ বলে থাকে সেগুলো থেকে বিরত থাকা। যেমন- কেউ কেউ জমরাতগুলোতে কঙ্কর নিক্ষেপ করে বলে যে, শয়তানকে কঙ্কর মেরেছি, কেউ কেউ গালি দিয়ে বসে কিংবা জুতা নিক্ষেপ করে ইত্যাদি যে সব কর্ম নম্রতা ও ইবাদতের মেজাজের সাথে মিলে না এবং জমরাতে কঙ্কর নিক্ষেপের উদ্দেশ্যের সাথে এগুলো সাংঘর্ষিক। কঙ্কর নিক্ষেপের উদ্দেশ্য হচ্ছে- আল্লাহ্‌র যিকির (স্মরণ)-কে প্রতিষ্ঠিত করা।


সূত্র: শাইখ মুহাম্মদ বিন উছাইমীন লিখিত ‘আল-মানহাজ লি মুরিদিল উমরা ওয়াল হাজ্জ’ পুস্তিকা।


সুত্র: Islamqa.info
 
Top