If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
উত্তর: সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
প্রথমত: যে রমযান (মাস) পেল কিন্তু সিয়াম পালনে সক্ষম নয় অত্যন্ত বৃদ্ধ হওয়ার জন্য (অতি বার্ধক্যের কারণে) অথবা সে এমন রোগী যার সুস্থতা লাভের আশা করা যায় না, তার ওপর সিয়াম পালন ফরয নয়, অক্ষমতার জন্য। সে সাওম ভঙ্গ করবে এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
আর ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, “এটি মানসূখ (রহিত) নয়, বরং তা অতি বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা সাওম পালন করতে পারবে না, তারা প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন।”[1]
আর ইবন কুদামাহ বলেছেন, “অতি বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর জন্য সাওম পালন যদি কঠিন ও অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়, তবে তারা সাওম ভঙ্গ করতে পারেন আর সেক্ষেত্রে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন… তবে তিনি যদি (মিসকীন) খাওয়াতেও অক্ষম হন, তবে তার ওপর কিছু (কোনো দায়িত্ব) বর্তায় না। কেননা,
আর সে রোগী যার সুস্থতার আশা করা যায় না সেও সাওম ভঙ্গ করবে এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে। কারণ, সে বৃদ্ধ লোকের পর্যায়ভুক্ত।”[2]
আর ‘আল-মূসূ‘আহ আল-ফিক্বহিয়্যাহ’-তে (৫/১১৭) আছে:
“হানাফী, শাফে‘ঈ ও হাম্বলী (ফিকহী মাযহাবের) আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন যে, ফিদয়া তখনই আদায় করা যাবে, যখন বার্ধক্যের বা এমন রোগ যার সুস্থতার আশা করা যায় না। এর কারণে সাওম ভঙ্গ করা দিনগুলোর কাযা আদায়ের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে যাবে। এর দলীল আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
শাইখ ইবন উসাইমীন ‘ফাতাওয়া আস-সিয়াম (পৃ. ১১১)’-এ বলেছেন,
আমাদের জানা উচিৎ যে, রোগী দুই প্রকার:
প্রথম প্রকার: এমন রোগী যার সুস্থতার আশা করা যায়। যেমন, হঠাৎ হওয়া রোগ যার থেকে সুস্থতা আশা করা যায়। তার হুকুম হলো যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
সে (এরূপ রোগী) শুধু সুস্থতার আশা করবে, এরপর সাওম পালন করে ফেলবে। যদি এমন হয় যে তার রোগ থেকেই গেল এবং সুস্থ হওয়ার আগেই সে মারা গেল, তবে তার ওপর কিছু বর্তায় না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তার ওপর অন্য দিনগুলোতে কাযা ওয়াজিব করেছিলেন এবং তা পাওয়ার আগেই সে মারা গেছে। এক্ষেত্রে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে রমযান আসার আগেই শা‘বান মাসে মারা গেল, তার পক্ষ থেকে কাযা করতে হবে না।
দ্বিতীয় প্রকার: এমন রোগ যা স্থায়ী। যেমন, ক্যান্সারের রোগ, (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই) কিডনীর রোগ, ডায়াবেটিস বা এ ধরণের স্থায়ী রোগ (যা অসহনীয়) যা থেকে রোগী সুস্থতা আশা করে না, সে রোগী রমযান মাসে সাওম ভঙ্গ করবে এবং এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়াবে ঠিক যেমন বৃদ্ধ পুরুষ ও নারী, যারা সিয়াম পালনে সক্ষম নয়, তারা সাওম ভঙ্গ করে এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়ায়। কুরআন থেকে এর দলীল হলো আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
দ্বিতীয়ত: আর ইত‘আম-এর (খাওয়ানোর) পদ্ধতি হলো প্রত্যেক মিসকীনকে অর্ধেক সা‘ (প্রায় ১.৫[3] কিলোগ্রাম) খাবার। যেমন, চাল বা ইত্যাদি দেওয়া অথবা খাবার বানিয়ে মিসকীনদের ডেকে খাওয়ানো।
ইমাম বুখারী বলেছেন, ‘আর বৃদ্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে যিনি সাওম পালনে সক্ষম নন, যেমন আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৃদ্ধ হওয়ার পর একবছর বা দুইবছর প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে রুটি ও গোশত খাইয়েছেন এবং সাওম ভঙ্গ করেছেন’।
শাইখ ইবন বাযকে একজন অতি বৃদ্ধা নারী সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল যিনি সাওম পালনে সক্ষম নন, তিনি কী করবেন?
তিনি উত্তরে বলেন: ‘তাকে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে আধা সা‘ খাবার খাওয়াতে হবে, তা সে দেশের খাদ্য দ্রব্য থেকে যেমন- খেজুর বা চাল বা এছাড়া অন্যান্য কিছু থেকে। ওজন হিসেবে এর পরিমাণ হলো প্রায় দেড় (১.৫) কিলোগ্রাম। যেমনি নবীর একদল সাহাবী ফাতওয়া দিয়েছেন, যাদের মাঝে ইবন আব্বাসও আছেন। আর যদি তিনি (অতি বৃদ্ধা নারী) দরিদ্র হন অর্থাৎ খাওয়াতে সক্ষম না হন, তবে তার ওপর কিছু বর্তায় না, আর এই কাফফারা একজন (মিসকীন)-কে বা অনেকজনকে (মিসকীনদের) দেওয়া যেতে পারে মাসের শুরুতে বা এর মাঝে বা এর শেষে। আর আল্লাহই তাওফীকদাতা।’[4]
আর শাইখ ইবন উসাইমীন বলেছেন, ‘তাই চিরস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগী, পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যারা বয়স্ক, তারা যদি সাওম পালনে অক্ষম হয়, তবে তাদের ওপর প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব। ফকিরকে খাবার দিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে হোক বা মাসের দিনের সমান সংখ্যক ফকিরদের দাওয়াত করে খাওয়ানো খাওয়ানো হোক, যেভাবে আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৃদ্ধ হওয়ার পর করতেন, তিনি এক মাসের পরিবর্তে ৩০ জন মিসকীনকে একত্রে দাওয়াত করে খাওয়াতেন।’[5]
ফাতওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে (১১/১৬৪) প্রশ্ন করা হয়েছিল, অক্ষম ব্যক্তি যেমন, বার্ধক্যের কারণে অক্ষম, বৃদ্ধ ব্যক্তি ও বৃদ্ধা নারী, এমন রোগী যার সুস্থতার আশা করা যায় না রমযান মাসে তার ইত‘আম (মিসকীন খাওয়ানো) সম্পর্কে।
তারা উত্তরে বলেন: ‘যে বার্ধক্যের কারণে রমযানে সাওম পালনে অক্ষম, যেমন বৃদ্ধ ব্যক্তি ও বৃদ্ধা নারী অথবা সাওম পালন যার জন্য খুবই কষ্টসাধ্য, তার সাওম ভঙ্গের ব্যাপারে শিথিলতা আছে, তার জন্য প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব, তা হলো গম, খেজুর, চাল বা এজাতীয় খাবার যা সে নিজ পরিবারকে খাওয়ায় তার অর্ধেক সা‘ প্রদান করা। একইভাবে এমন অসুস্থ ব্যক্তিও, যিনি সাওম পালনে অক্ষম বা তা তার জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য বা তা থেকে সুস্থতা আশা করা যায় না, সেও তাই করবে।’ এর দলীল আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
“আল্লাহ কারও ওপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপান না।” [আল-বাকারা, আয়াত: ২৮৬]
এবং আরও রয়েছে তাঁর বাণী:
আর আল্লাহই সবচেয়ে বেশি ভালো জানেন।
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৫০৫।
[2] আল-মুগনীতে (৪/৩৯৬)।
[3] ১.০৪০
[4] মাজমূ‘ ফাতওয়া ইবন বায (১৫/২০৩)।
[5] ফাতওয়া আস-সিয়াম, (পৃ. ১১১)।
প্রথমত: যে রমযান (মাস) পেল কিন্তু সিয়াম পালনে সক্ষম নয় অত্যন্ত বৃদ্ধ হওয়ার জন্য (অতি বার্ধক্যের কারণে) অথবা সে এমন রোগী যার সুস্থতা লাভের আশা করা যায় না, তার ওপর সিয়াম পালন ফরয নয়, অক্ষমতার জন্য। সে সাওম ভঙ্গ করবে এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ١٨٣ أَيَّامًۭا مَّعْدُودَٰتٍۢ ۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍۢ فَعِدَّةٌۭ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۚ وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدْيَةٌۭ طَعَامُ مِسْكِينٍۢ ۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًۭا فَهُوَ خَيْرٌۭ لَّهُۥ ۚ وَأَن تَصُومُوا۟ خَيْرٌۭ لَّكُمْ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ ١٨٤
“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমনটি ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পারো। নির্দিষ্ট কিছু দিনে। আর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ বা সফরে আছে, সে যাতে অন্য দিনগুলোতে তা আদায় করে নেয়, আর (তোমাদের মধ্যে) যারা (তাতেও) অপারগ, তারা যেন ফিদয়া হিসেবে মিসকীনকে খাবার খাওয়ায়, আর যে নাফল কল্যাণ হিসেবে তা (ফিদয়াহ) বেশি করে আদায় করে, তবে তা তার জন্য উত্তম। আর তোমরা যদি সাওম রাখ তবে তা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তা তোমরা জানতে।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৩-১৮৪]আর ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন, “এটি মানসূখ (রহিত) নয়, বরং তা অতি বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা সাওম পালন করতে পারবে না, তারা প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন।”[1]
আর ইবন কুদামাহ বলেছেন, “অতি বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর জন্য সাওম পালন যদি কঠিন ও অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়, তবে তারা সাওম ভঙ্গ করতে পারেন আর সেক্ষেত্রে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন… তবে তিনি যদি (মিসকীন) খাওয়াতেও অক্ষম হন, তবে তার ওপর কিছু (কোনো দায়িত্ব) বর্তায় না। কেননা,
لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَاۚ
“আল্লাহ কারও ওপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপান না।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৮৬]আর সে রোগী যার সুস্থতার আশা করা যায় না সেও সাওম ভঙ্গ করবে এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে। কারণ, সে বৃদ্ধ লোকের পর্যায়ভুক্ত।”[2]
আর ‘আল-মূসূ‘আহ আল-ফিক্বহিয়্যাহ’-তে (৫/১১৭) আছে:
“হানাফী, শাফে‘ঈ ও হাম্বলী (ফিকহী মাযহাবের) আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন যে, ফিদয়া তখনই আদায় করা যাবে, যখন বার্ধক্যের বা এমন রোগ যার সুস্থতার আশা করা যায় না। এর কারণে সাওম ভঙ্গ করা দিনগুলোর কাযা আদায়ের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে যাবে। এর দলীল আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدۡيَةٞ طَعَامُ مِسۡكِينٖ
“আর যারা তাতে (সিয়াম পালনে) অক্ষম, তারা ফিদয়া হিসেবে মিসকীন খাওয়াবে।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪] এর অর্থ যাদের ওপর সিয়াম পালন কষ্টসাধ্য।শাইখ ইবন উসাইমীন ‘ফাতাওয়া আস-সিয়াম (পৃ. ১১১)’-এ বলেছেন,
আমাদের জানা উচিৎ যে, রোগী দুই প্রকার:
প্রথম প্রকার: এমন রোগী যার সুস্থতার আশা করা যায়। যেমন, হঠাৎ হওয়া রোগ যার থেকে সুস্থতা আশা করা যায়। তার হুকুম হলো যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَ
“আর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ বা সফরে আছে, সে যাতে অন্য দিনগুলোতে তা আদায় করে নেয়।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪]সে (এরূপ রোগী) শুধু সুস্থতার আশা করবে, এরপর সাওম পালন করে ফেলবে। যদি এমন হয় যে তার রোগ থেকেই গেল এবং সুস্থ হওয়ার আগেই সে মারা গেল, তবে তার ওপর কিছু বর্তায় না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তার ওপর অন্য দিনগুলোতে কাযা ওয়াজিব করেছিলেন এবং তা পাওয়ার আগেই সে মারা গেছে। এক্ষেত্রে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে রমযান আসার আগেই শা‘বান মাসে মারা গেল, তার পক্ষ থেকে কাযা করতে হবে না।
দ্বিতীয় প্রকার: এমন রোগ যা স্থায়ী। যেমন, ক্যান্সারের রোগ, (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই) কিডনীর রোগ, ডায়াবেটিস বা এ ধরণের স্থায়ী রোগ (যা অসহনীয়) যা থেকে রোগী সুস্থতা আশা করে না, সে রোগী রমযান মাসে সাওম ভঙ্গ করবে এবং এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়াবে ঠিক যেমন বৃদ্ধ পুরুষ ও নারী, যারা সিয়াম পালনে সক্ষম নয়, তারা সাওম ভঙ্গ করে এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়ায়। কুরআন থেকে এর দলীল হলো আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدۡيَةٞ طَعَامُ مِسۡكِينٖ
“আর যারা তাতে (সিয়াম পালনে) অক্ষম, তারা যেন ফিদয়া হিসেবে মিসকীন খাওয়ায়।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪]দ্বিতীয়ত: আর ইত‘আম-এর (খাওয়ানোর) পদ্ধতি হলো প্রত্যেক মিসকীনকে অর্ধেক সা‘ (প্রায় ১.৫[3] কিলোগ্রাম) খাবার। যেমন, চাল বা ইত্যাদি দেওয়া অথবা খাবার বানিয়ে মিসকীনদের ডেকে খাওয়ানো।
ইমাম বুখারী বলেছেন, ‘আর বৃদ্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে যিনি সাওম পালনে সক্ষম নন, যেমন আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৃদ্ধ হওয়ার পর একবছর বা দুইবছর প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে রুটি ও গোশত খাইয়েছেন এবং সাওম ভঙ্গ করেছেন’।
শাইখ ইবন বাযকে একজন অতি বৃদ্ধা নারী সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল যিনি সাওম পালনে সক্ষম নন, তিনি কী করবেন?
তিনি উত্তরে বলেন: ‘তাকে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে আধা সা‘ খাবার খাওয়াতে হবে, তা সে দেশের খাদ্য দ্রব্য থেকে যেমন- খেজুর বা চাল বা এছাড়া অন্যান্য কিছু থেকে। ওজন হিসেবে এর পরিমাণ হলো প্রায় দেড় (১.৫) কিলোগ্রাম। যেমনি নবীর একদল সাহাবী ফাতওয়া দিয়েছেন, যাদের মাঝে ইবন আব্বাসও আছেন। আর যদি তিনি (অতি বৃদ্ধা নারী) দরিদ্র হন অর্থাৎ খাওয়াতে সক্ষম না হন, তবে তার ওপর কিছু বর্তায় না, আর এই কাফফারা একজন (মিসকীন)-কে বা অনেকজনকে (মিসকীনদের) দেওয়া যেতে পারে মাসের শুরুতে বা এর মাঝে বা এর শেষে। আর আল্লাহই তাওফীকদাতা।’[4]
আর শাইখ ইবন উসাইমীন বলেছেন, ‘তাই চিরস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগী, পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যারা বয়স্ক, তারা যদি সাওম পালনে অক্ষম হয়, তবে তাদের ওপর প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব। ফকিরকে খাবার দিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে হোক বা মাসের দিনের সমান সংখ্যক ফকিরদের দাওয়াত করে খাওয়ানো খাওয়ানো হোক, যেভাবে আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৃদ্ধ হওয়ার পর করতেন, তিনি এক মাসের পরিবর্তে ৩০ জন মিসকীনকে একত্রে দাওয়াত করে খাওয়াতেন।’[5]
ফাতওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে (১১/১৬৪) প্রশ্ন করা হয়েছিল, অক্ষম ব্যক্তি যেমন, বার্ধক্যের কারণে অক্ষম, বৃদ্ধ ব্যক্তি ও বৃদ্ধা নারী, এমন রোগী যার সুস্থতার আশা করা যায় না রমযান মাসে তার ইত‘আম (মিসকীন খাওয়ানো) সম্পর্কে।
তারা উত্তরে বলেন: ‘যে বার্ধক্যের কারণে রমযানে সাওম পালনে অক্ষম, যেমন বৃদ্ধ ব্যক্তি ও বৃদ্ধা নারী অথবা সাওম পালন যার জন্য খুবই কষ্টসাধ্য, তার সাওম ভঙ্গের ব্যাপারে শিথিলতা আছে, তার জন্য প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজিব, তা হলো গম, খেজুর, চাল বা এজাতীয় খাবার যা সে নিজ পরিবারকে খাওয়ায় তার অর্ধেক সা‘ প্রদান করা। একইভাবে এমন অসুস্থ ব্যক্তিও, যিনি সাওম পালনে অক্ষম বা তা তার জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য বা তা থেকে সুস্থতা আশা করা যায় না, সেও তাই করবে।’ এর দলীল আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَاۚ
“আল্লাহ কারও ওপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপান না।” [আল-বাকারা, আয়াত: ২৮৬]
এবং আরও রয়েছে তাঁর বাণী:
وَمَا جَعَلَ عَلَيۡكُمۡ فِي ٱلدِّينِ مِنۡ حَرَجٖۚ
“আর তিনি (আল্লাহ) দীনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোনো কাঠিন্য রাখেন নি।” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৭৮] এবং তাঁর বাণী:وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدۡيَةٞ طَعَامُ مِسۡكِينٖ
“আর যারা তাতে (সিয়াম পালনে) অক্ষম, তারা যেন ফিদয়া হিসেবে মিসকীন খাওয়ায়।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪]আর আল্লাহই সবচেয়ে বেশি ভালো জানেন।
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৫০৫।
[2] আল-মুগনীতে (৪/৩৯৬)।
[3] ১.০৪০
[4] মাজমূ‘ ফাতওয়া ইবন বায (১৫/২০৩)।
[5] ফাতওয়া আস-সিয়াম, (পৃ. ১১১)।
Last edited: