সুন্নাহপন্থি দাঈদের ব্যাপারে এটি একটি মিথ্যা ধারণা এবং বাস্তবতা পরিপন্থি অপবাদ। তাদের ব্যাপারে এমন কুধারণা ও জঘন্য অপবাদ অপনোদন করা উচিত। তাই মাযহাবের ব্যাপারে অবস্থান সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরছি।
আলেমগণ অবগত আছেন যে, চার মাযহাবসহ অন্যান্য মাযহাবের সমস্ত মাসআলা ঐকমত্যপূর্ণ নয়। বরং তা তিন প্রকার:
১. কিছু মাসআলায় সবাই একমত, যেমন: কাফিরদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা হারাম।
২. কিছু মাসআলায় তাদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে সে মতপার্থক্য ‘ইখতিলাফুত তানাঊ’-এর অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ সব মতই দলিলসম্মত। যেমন: সালাত শুরুর দুআ ও তাশাহহুদ।
৩. কিছু মাসআলা এমন বিরোধপূর্ণ ও পরস্পর বিরোধী যে, সেগুলোর মাঝে কোনোভাবেই সমন্বয় করা সম্ভব নয়। যেমন: নারীদের স্পর্শ করার কারণে অজু নষ্ট হওয়া, না হওয়ার মাসআলা। এ ব্যাপারে তিনটি প্রসিদ্ধ মত রয়েছে:
ক. অজু নষ্ট হয়ে যাবে,
খ. অজু নষ্ট হবে না,
গ. কামভাব সহকারে স্পর্শ করলে অজু নষ্ট হবে; আর কামভাব না থাকলে নষ্ট হবে না।
যখন মাসআলা-মাসাইলের এ অবস্থা তখন কীভাবে সুন্নাহর দাঈগণ মাযহাব ত্যাগের দাওয়াত দিতে পারেন! তারা মাযহাব ত্যাগের দাওয়াত দিলে তো প্রথম দুই প্রকার মাসআলাও তারা বর্জন করতেন। আর তারা প্রথম দুই প্রকার মাসআলা বর্জন করলে হক থেকে নিঃসন্দেহে বিচ্যুত হয়ে যাবেন।
বরং তারা সকল মাযহাবের মাঝে থেকেই হক তালাশ করেন। তারা নির্দিষ্ট কোনো মাযহাবকে অপরিহার্য করে নেন না। হক তালাশ করতে গিয়ে তাদের সামনে মাযহাবের ইমামদের মর্যাদা, তাদের জ্ঞানের গভীরতা, কুরআন-সুন্নাহ বোঝার ক্ষেত্রে তাদের সূক্ষ্মদর্শিতা ও বিজ্ঞত্ব প্রতিভাত হয়ে ওঠে। ফলে তারা তাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সূক্ষ্মদর্শিতা থেকে উপকৃত হতে চেষ্টা করেন।
তারা তৃতীয় প্রকার মাসআলায় নির্দিষ্ট মাযহাব মানেন না। কারণ, তৃতীয় প্রকারের মাসআলায় সকল সঠিক মত নির্দিষ্ট কোনো এক মাযহাবের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং সকল মাযহাবে ছড়িয়ে থাকে। দেখা যায়, এ মাসআলায় হানাফী মাযহাব সঠিক। আরেক মাসআলায় মালিকী মাযহাব সঠিক। অন্য মাসআলায় শাফিয়ী মাযহাব সঠিক। চতুর্থ মাসআলায় হাম্বালী মাযহাব
সঠিক। এ প্রকার মাসআলায় তারা যদি একটি মাযহাবকে আঁকড়ে ধরতেন, তবে বাকি মাযহাবের সঠিক মত থেকে তারা বঞ্চিত থাকতেন। আর জেনেশুনে সঠিক মত থেকে দূরে থাকা বৈধ নয়।
[মাকালাতুল আলবানী, পৃষ্ঠা: ৩৮-৪০, সারাংশ]
ফাতাওয়ায়ে আলবানী
সংকলন ও অনুবাদ: আব্দুল্লাহ মাহমুদ
আলেমগণ অবগত আছেন যে, চার মাযহাবসহ অন্যান্য মাযহাবের সমস্ত মাসআলা ঐকমত্যপূর্ণ নয়। বরং তা তিন প্রকার:
১. কিছু মাসআলায় সবাই একমত, যেমন: কাফিরদের সাদৃশ্য গ্রহণ করা হারাম।
২. কিছু মাসআলায় তাদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে সে মতপার্থক্য ‘ইখতিলাফুত তানাঊ’-এর অন্তর্ভুক্ত অর্থাৎ সব মতই দলিলসম্মত। যেমন: সালাত শুরুর দুআ ও তাশাহহুদ।
৩. কিছু মাসআলা এমন বিরোধপূর্ণ ও পরস্পর বিরোধী যে, সেগুলোর মাঝে কোনোভাবেই সমন্বয় করা সম্ভব নয়। যেমন: নারীদের স্পর্শ করার কারণে অজু নষ্ট হওয়া, না হওয়ার মাসআলা। এ ব্যাপারে তিনটি প্রসিদ্ধ মত রয়েছে:
ক. অজু নষ্ট হয়ে যাবে,
খ. অজু নষ্ট হবে না,
গ. কামভাব সহকারে স্পর্শ করলে অজু নষ্ট হবে; আর কামভাব না থাকলে নষ্ট হবে না।
যখন মাসআলা-মাসাইলের এ অবস্থা তখন কীভাবে সুন্নাহর দাঈগণ মাযহাব ত্যাগের দাওয়াত দিতে পারেন! তারা মাযহাব ত্যাগের দাওয়াত দিলে তো প্রথম দুই প্রকার মাসআলাও তারা বর্জন করতেন। আর তারা প্রথম দুই প্রকার মাসআলা বর্জন করলে হক থেকে নিঃসন্দেহে বিচ্যুত হয়ে যাবেন।
বরং তারা সকল মাযহাবের মাঝে থেকেই হক তালাশ করেন। তারা নির্দিষ্ট কোনো মাযহাবকে অপরিহার্য করে নেন না। হক তালাশ করতে গিয়ে তাদের সামনে মাযহাবের ইমামদের মর্যাদা, তাদের জ্ঞানের গভীরতা, কুরআন-সুন্নাহ বোঝার ক্ষেত্রে তাদের সূক্ষ্মদর্শিতা ও বিজ্ঞত্ব প্রতিভাত হয়ে ওঠে। ফলে তারা তাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সূক্ষ্মদর্শিতা থেকে উপকৃত হতে চেষ্টা করেন।
তারা তৃতীয় প্রকার মাসআলায় নির্দিষ্ট মাযহাব মানেন না। কারণ, তৃতীয় প্রকারের মাসআলায় সকল সঠিক মত নির্দিষ্ট কোনো এক মাযহাবের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না; বরং সকল মাযহাবে ছড়িয়ে থাকে। দেখা যায়, এ মাসআলায় হানাফী মাযহাব সঠিক। আরেক মাসআলায় মালিকী মাযহাব সঠিক। অন্য মাসআলায় শাফিয়ী মাযহাব সঠিক। চতুর্থ মাসআলায় হাম্বালী মাযহাব
সঠিক। এ প্রকার মাসআলায় তারা যদি একটি মাযহাবকে আঁকড়ে ধরতেন, তবে বাকি মাযহাবের সঠিক মত থেকে তারা বঞ্চিত থাকতেন। আর জেনেশুনে সঠিক মত থেকে দূরে থাকা বৈধ নয়।
[মাকালাতুল আলবানী, পৃষ্ঠা: ৩৮-৪০, সারাংশ]
ফাতাওয়ায়ে আলবানী
সংকলন ও অনুবাদ: আব্দুল্লাহ মাহমুদ
Last edited: