সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি।
মহান আল্লাহ বলেন,
উসামা ইবনু যায়দ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে তো শা'বান মাসে যে পরিমাণ সাওম পালন করতে দেখি বছরের অন্য কোনো মাসে সে পরিমাণ সাওম পালন করতে দেখি না। তিনি বললেন শা'বান মাস রজব এবং রামাদানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যে মাসের (গুরুত্ব সম্পর্কে) মানুষ খবর রাখে না অথচ এ মাসে আমলনামাসমূহ আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের নিকটে উত্তোলন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলনামা আল্লাহ তা’আলার নিকটে উত্তোলন করা হবে আমার সাওম পালনরত থাকি।
সুনানুন নাসাঈ, হা/২৩৫৯; নাসাঈ সুনানুল কুবরা, হা/২৬৭৮; মুসনাদু আহমাদ, হা/২১৭৫৩
শাইখ আলবানী হাসান বলেছেন।
শাইখ যুবায়র সানাদ হাসান বলেছেন।
শাইখ আরনাউত সানাদ হাসান বলেছেন।
২. শাবান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি সিয়াম পালন করতেন:
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা'বান এবং রামাদান মাসে সাওম পালন করতেন আর সোম ও বৃহস্পতিবারের সাওম-কে উত্তম মনে করতেন। - সুনানুন নাসাঈ, হা/২১৯১; দারুসসালাম, হা/২১৮৯
শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন।
শাইখ যুবায়র সহীহ বলেছেন।
আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে (এত অধিক) সাওম পালন করতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সাওম পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি) সাওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সাওম পালন করবেন না। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রামাদান ব্যতীত কোনো পুরো মাসের সওম পালন করতে দেখিনি এবং শা‘বান মাসের চেয়ে কোনো মাসে অধিক (নফল) সাওম পালন করতে দেখিনি। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৬৯; সহীহ মুসলিম, হা.এ. হা/২৬১২
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা'বান মাসে যত সিয়াম পালন করতেন সারা বছরে অন্য কোনো মাসে তিনি এত অধিক সিয়াম পালন করতেন না। আর তিনি (লোকেদের উদ্দেশ্যে) বলতেন, "তোমরা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী যত বেশি পারো আমল করো। কেননা, আল্লাহ তাআলা (তোমাদেরকে সাওয়াব দানে) ক্লান্ত বা বিরক্ত হবেন না যতক্ষণ তোমরা অক্ষম হয়ে না পড়বে। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে যা কোনো বান্দা অব্যাহতভাবে করে থাকে- যদিও তা পরিমাণে কম হয়। - সহীহ মুসলিম, হা/৭৮২ হা.এ. হা/২৬১৩ (সহীহ বুখারী, হা/১৯৭০)
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েক দিন ব্যতীত পূর্ণ শা’বান মাসের সাওম পালন করতেন। - সুনানুন নাসাঈ, হা/২৩৫৭
শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন।
শাইখ যুবায়র সহীহ বলেছেন।
ইবনু আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাদান ব্যতীত কোনো মাসে সম্পূর্ণ মাসের সওম পালন করেননি। তিনি এমনভাবে (নফল) সাওম পালন করতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো, আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন পরিত্যাগ করবেন না। আবার এমনভাবে (নফল) সাওম ছেড়ে দিতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন করবেন না। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৭১; সহীহ মুসলিম, হা/১১৫৭
৩. রামাদানকে স্বাগত জানাতে শাবানের শেষের দিকে সিয়াম রাখা নিষেধ:
আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শা’বান মাসের অর্ধেক বাকি থাকতে তোমরা আর সাওম পালন করো না। - সুনানুত তিরমিযী, হা/৭৩৮; সুনানু ইবনু মাজাহ, হা/১৬৫১
ইমাম তিরমিযী আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, কোনো কোনো আলিমদের মতানুযায়ী এই হাদীসটি সে সব লোকের জন্য প্রযোজ্য যে সাধারণত: (শা’বানে) সিয়াম পালন করে না, কিন্তু শা'বান মাসের কিছু দিন বাকি থাকতেই রামাদানের সম্মানার্থে সিয়াম পালন শুরু করে দেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্ত অভিমতের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি হাদীস আবু হুরায়রাহ (রা.)-এর সূত্রেও বর্ণিত আছে।
তা এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: (শা'বানের) সিয়াম রেখে তোমরা রামাদানকে স্বাগত জানাবে না। তবে কারো নির্ধারিত দিনগুলোর সিয়ামের সঙ্গে এই দিনের সিয়ামের মিল পড়ে গেলে ভিন্ন কথা। এ হাদীস হতে জানা গেল যে, কোনো ব্যক্তির রামাদানকে স্বাগত জানানোর জন্য (শা’বানের) সিয়াম রাখা মাকরূহ।
৪. পূর্ববর্তী বছরের সিয়াম বাকি থাকলে পূর্ণ করা:
আয়িশাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার উপর রামাদানের যে কাযা হয়ে যেত তা পরবর্তী শা‘বান ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না।
ইয়াহ্ইয়া (রা.) বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যস্ততার কারণে কিংবা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ব্যস্ততার কারণে। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৫০; সহীহ মুসলিম, হা/১১৪৬ হা.এ. হা/২৫৭৭
৫. কেউ যদি প্রতি মাস ও সপ্তাহের সিয়াম পালনে অভ্যস্ত হয় তাহলে সেটা শা’বান মাসেও চলমান থাকবে:
আবূ হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা এবং দু‘রাকাআত সালাতুদ-দুহা এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৮১
আবূ কাতাদাহ আনসারী (রা.) হতে বর্ণিত বিশাল হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রতি মাসে তিনদিন এবং গোটা রামাদান মাস সওম পালন করাই হলো সারা বছর সওম পালনের সমতুল্য। - সহীহ মুসলিম, হা.এ. হা/২৬৩৭
আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ তা'আলার দরবারে) আমল পেশ করা হয়। সুতরাং আমার আমলসমূহ যেন সিয়াম পালনাবস্থায় পেশ করা হোক, এটাই আমার পছন্দনীয়। - সুনানুত তিরমিযী, হা/৭৪৭
ইমাম তিরমিযী হাদীসটি হাসান গারীব বলেছেন।
শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন।
৬. প্রত্যেক মাসেই কিছু সিয়াম পালন:
আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রাহি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রা.) কে বললাম, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি রামাদান মাস ছাড়া অন্য কোনো সময় পূর্ণ মাস সিয়াম পালন করতেন? তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ তিনি আজীবন রামাদান ছাড়া অন্য কোনো সময় পূর্ণ এক মাস সিয়াম পালন করেননি। আর এমন কোনো মাসও অতিবাহিত হয়নি যাতে তিনি অন্তত কিছু সিয়াম পালন করেননি। - সহীহ মুসলিম, হা/১১৫৬, হা.এ. হা/২৬০৭
সর্বোপরি রামাদান মাসের প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহ তাআলা শাবান মাসের সিয়াম দ্বারা রামাদানের প্রস্তুতি নেওয়ার তাওফীক দিন। আমীন
আল্লাহই তাওফীকদাতা।
মহান আল্লাহ বলেন,
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
বলো, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। - সূরা আলে ইমরান, ৩:৩১
১. শাবান মাসে বাৎসরিক আমলনামা আল্লাহর নিকট পেশ করা হয়। কিন্তু তা কোন দিন তা অজানা:উসামা ইবনু যায়দ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে তো শা'বান মাসে যে পরিমাণ সাওম পালন করতে দেখি বছরের অন্য কোনো মাসে সে পরিমাণ সাওম পালন করতে দেখি না। তিনি বললেন শা'বান মাস রজব এবং রামাদানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যে মাসের (গুরুত্ব সম্পর্কে) মানুষ খবর রাখে না অথচ এ মাসে আমলনামাসমূহ আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের নিকটে উত্তোলন করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, আমার আমলনামা আল্লাহ তা’আলার নিকটে উত্তোলন করা হবে আমার সাওম পালনরত থাকি।
সুনানুন নাসাঈ, হা/২৩৫৯; নাসাঈ সুনানুল কুবরা, হা/২৬৭৮; মুসনাদু আহমাদ, হা/২১৭৫৩
শাইখ আলবানী হাসান বলেছেন।
শাইখ যুবায়র সানাদ হাসান বলেছেন।
শাইখ আরনাউত সানাদ হাসান বলেছেন।
২. শাবান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি সিয়াম পালন করতেন:
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা'বান এবং রামাদান মাসে সাওম পালন করতেন আর সোম ও বৃহস্পতিবারের সাওম-কে উত্তম মনে করতেন। - সুনানুন নাসাঈ, হা/২১৯১; দারুসসালাম, হা/২১৮৯
শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন।
শাইখ যুবায়র সহীহ বলেছেন।
আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধারে (এত অধিক) সাওম পালন করতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর সাওম পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি) সাওম পালন না করা অবস্থায় একাধারে কাটাতেন যে, আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) সাওম পালন করবেন না। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রামাদান ব্যতীত কোনো পুরো মাসের সওম পালন করতে দেখিনি এবং শা‘বান মাসের চেয়ে কোনো মাসে অধিক (নফল) সাওম পালন করতে দেখিনি। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৬৯; সহীহ মুসলিম, হা.এ. হা/২৬১২
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শা'বান মাসে যত সিয়াম পালন করতেন সারা বছরে অন্য কোনো মাসে তিনি এত অধিক সিয়াম পালন করতেন না। আর তিনি (লোকেদের উদ্দেশ্যে) বলতেন, "তোমরা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী যত বেশি পারো আমল করো। কেননা, আল্লাহ তাআলা (তোমাদেরকে সাওয়াব দানে) ক্লান্ত বা বিরক্ত হবেন না যতক্ষণ তোমরা অক্ষম হয়ে না পড়বে। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হচ্ছে যা কোনো বান্দা অব্যাহতভাবে করে থাকে- যদিও তা পরিমাণে কম হয়। - সহীহ মুসলিম, হা/৭৮২ হা.এ. হা/২৬১৩ (সহীহ বুখারী, হা/১৯৭০)
আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েক দিন ব্যতীত পূর্ণ শা’বান মাসের সাওম পালন করতেন। - সুনানুন নাসাঈ, হা/২৩৫৭
শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন।
শাইখ যুবায়র সহীহ বলেছেন।
ইবনু আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাদান ব্যতীত কোনো মাসে সম্পূর্ণ মাসের সওম পালন করেননি। তিনি এমনভাবে (নফল) সাওম পালন করতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো, আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন পরিত্যাগ করবেন না। আবার এমনভাবে (নফল) সাওম ছেড়ে দিতেন যে, কেউ বলতে চাইলে বলতে পারতো আল্লাহর কসম! তিনি আর সাওম পালন করবেন না। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৭১; সহীহ মুসলিম, হা/১১৫৭
৩. রামাদানকে স্বাগত জানাতে শাবানের শেষের দিকে সিয়াম রাখা নিষেধ:
আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শা’বান মাসের অর্ধেক বাকি থাকতে তোমরা আর সাওম পালন করো না। - সুনানুত তিরমিযী, হা/৭৩৮; সুনানু ইবনু মাজাহ, হা/১৬৫১
ইমাম তিরমিযী আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, কোনো কোনো আলিমদের মতানুযায়ী এই হাদীসটি সে সব লোকের জন্য প্রযোজ্য যে সাধারণত: (শা’বানে) সিয়াম পালন করে না, কিন্তু শা'বান মাসের কিছু দিন বাকি থাকতেই রামাদানের সম্মানার্থে সিয়াম পালন শুরু করে দেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উক্ত অভিমতের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি হাদীস আবু হুরায়রাহ (রা.)-এর সূত্রেও বর্ণিত আছে।
তা এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: (শা'বানের) সিয়াম রেখে তোমরা রামাদানকে স্বাগত জানাবে না। তবে কারো নির্ধারিত দিনগুলোর সিয়ামের সঙ্গে এই দিনের সিয়ামের মিল পড়ে গেলে ভিন্ন কথা। এ হাদীস হতে জানা গেল যে, কোনো ব্যক্তির রামাদানকে স্বাগত জানানোর জন্য (শা’বানের) সিয়াম রাখা মাকরূহ।
৪. পূর্ববর্তী বছরের সিয়াম বাকি থাকলে পূর্ণ করা:
আয়িশাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার উপর রামাদানের যে কাযা হয়ে যেত তা পরবর্তী শা‘বান ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না।
ইয়াহ্ইয়া (রা.) বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ব্যস্ততার কারণে কিংবা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ব্যস্ততার কারণে। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৫০; সহীহ মুসলিম, হা/১১৪৬ হা.এ. হা/২৫৭৭
৫. কেউ যদি প্রতি মাস ও সপ্তাহের সিয়াম পালনে অভ্যস্ত হয় তাহলে সেটা শা’বান মাসেও চলমান থাকবে:
আবূ হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার বন্ধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তিনটি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে তিন দিন করে সওম পালন করা এবং দু‘রাকাআত সালাতুদ-দুহা এবং ঘুমানোর পূর্বে বিতর সালাত আদায় করা। - সহীহ বুখারী, হা/১৯৮১
আবূ কাতাদাহ আনসারী (রা.) হতে বর্ণিত বিশাল হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রতি মাসে তিনদিন এবং গোটা রামাদান মাস সওম পালন করাই হলো সারা বছর সওম পালনের সমতুল্য। - সহীহ মুসলিম, হা.এ. হা/২৬৩৭
আবু হুরায়রাহ (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ তা'আলার দরবারে) আমল পেশ করা হয়। সুতরাং আমার আমলসমূহ যেন সিয়াম পালনাবস্থায় পেশ করা হোক, এটাই আমার পছন্দনীয়। - সুনানুত তিরমিযী, হা/৭৪৭
ইমাম তিরমিযী হাদীসটি হাসান গারীব বলেছেন।
শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন।
৬. প্রত্যেক মাসেই কিছু সিয়াম পালন:
আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রাহি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রা.) কে বললাম, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি রামাদান মাস ছাড়া অন্য কোনো সময় পূর্ণ মাস সিয়াম পালন করতেন? তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ তিনি আজীবন রামাদান ছাড়া অন্য কোনো সময় পূর্ণ এক মাস সিয়াম পালন করেননি। আর এমন কোনো মাসও অতিবাহিত হয়নি যাতে তিনি অন্তত কিছু সিয়াম পালন করেননি। - সহীহ মুসলিম, হা/১১৫৬, হা.এ. হা/২৬০৭
সর্বোপরি রামাদান মাসের প্রস্তুতি নিতে হবে। আল্লাহ তাআলা শাবান মাসের সিয়াম দ্বারা রামাদানের প্রস্তুতি নেওয়ার তাওফীক দিন। আমীন
আল্লাহই তাওফীকদাতা।