সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

প্রশ্নোত্তর শ্বশুরকে ‘আব্বা’ ও শাশুড়িকে ‘মা’ বলে ডাকা যাবে কি?

Mahmud ibn Shahidullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Q&A Master
Salafi User
Threads
520
Comments
533
Reactions
5,544
Credits
2,602
শ্বশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা ডাকা নিষেধ নয়; বরং এটি সৌহার্দ্য ও উত্তম শিষ্টাচারের নিদর্শন। পবিত্র কুরআনে জন্মদাত্রী মা ছাড়া অন্য মহিলাকে ‘মা’ বলার কথা এসেছে।

যেমন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীদেরকে মুমিনদের মা বলা হয়েছে (সূরা আল-আহযাব : ৬; সূরা ইউসুফ : ৯৯-১০০)।

অনুরূপভাবে নিজ জন্মদাতা পিতা ছাড়া অন্যকে পিতা বলার কথাও এসেছে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৩৩; সূরা আল-হজ্জ : ৭৮)।

নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীগণ জননী না হয়েও মুমিনদের মাতা। অনুরূপভাবে তিনিও মুমিনদের জনক না হয়েও ‘পিতা’।
মহান আল্লাহ বলেন,

اَلنَّبِیُّ اَوۡلٰی بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ مِنۡ اَنۡفُسِہِمۡ وَ اَزۡوَاجُہٗۤ اُمَّہٰتُہُمۡ​

‘নবী করীম মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠ এবং তার পত্নীরা তাদের মাতা’ (সূরা আল-আহযাব : ৬)। উক্ত আয়াতের اَلنَّبِیُّ اَوۡلٰی بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ এর ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণ বলেন, وهو أب للمؤمنين ‘নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুমিনদের পিতা’ (তাফসীরে সা‘আদী, পৃ. ৬৫৯; তাফসীরে ইবনু কাছীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৮১; ফাৎহুল ক্বাদীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২০)।
অন্যদিকে প্রকৃত সন্তান না হয়েও মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনাস (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে ‘হে আমার সন্তান!’ বলে সম্বোধন করতেন (সহীহ মুসলিম, হা/২১৫১)।

অতএব শ্বশুর-শাশুড়িকে আব্বা-আম্মা বলে ডাকাতে কোন দোষ নেই। তবে কিছু হাদীসে অন্যকে ‘বাবা’ বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ وَهْوَ يَعْلَمُ فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ​

‘যে ব্যক্তি পরের বাবাকে নিজের বাবা বলে, অথচ সে জানে যে, সে তার বাবা নয়, তাহলে সে ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম’ (সহীহ বুখারী, হা/৪৩২৬, ৬৭৬৬; সহীহ মুসলিম, হা/৬৩; মিশকাত, হা/৩৩১৪)।

মূলত এ জাতীয় হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বংশপরিচয় প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আসল পরিচয় গোপন রেখে নিজের বাবার নাম উল্লেখ না করে, অন্যের নাম উল্লেখ করা। যেমন- আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন অথবা এমন কোন দলীল বা স্থান যেখানে কোন ব্যক্তির জন্মদাতা বাবার নাম উল্লেখ করা যরূরী হয়, সেখানে যদি অন্য কারো নাম উল্লেখ করা হয়, তাহলে তা হারাম হবে। আর যেহেতু শ্বশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা ডাকার দ্বারা বংশপরিচয় গোপন হয় না, সেহেতু শ্বশুর-শাশুড়িকে বাবা-মা বলে আহ্বান করাতে কোন সমস্যা নেই। তবে কেউ যদি নিজ পিতা-মাতার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে শ্বশুর-শাশুড়িকে নিজ পিতা-মাতার জায়গায় স্থান দেয়, তাহলে সেটা হারাম হবে।



সূত্র: আল-ইখলাছ।​
 
Last edited:
Top