দাঁতন করা রোযাদার-অরোযাদার সকলের জন্য এবং দিনের শুরু ও শেষ ভাগে সব সময়কার জন্য সুন্নত। এ ব্যাপারে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর নির্দেশ ব্যাপক; তিনি বলেন, ‘‘দাঁতন করায় রয়েছে মুখের পবিত্রতা এবং প্রতিপালক আল্লাহর সন্তুষ্টি।[1]
প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘আমি উম্মতের জন্য কষ্টকর না জানলে তাদেরকে প্রত্যেক নামাযের সময় দাঁতন করতে আদেশ দিতাম।’’[2] অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘---তাদেরকে প্রত্যেক ওযূর সময় দাঁতন করতে আদেশ দিতাম।’’[3]
ইমাম ত্বাবারানী উত্তম সনদ দ্বারা বর্ণনা করেছেন যে, আব্দুর রহমান বিন গুন্ম বলেন, আমি মুআয বিন জাবাল (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আমি কি রোযা অবস্থায় দাঁতন করব?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ আমি বললাম, ‘দিনের কোন্ ভাগে?’ তিনি বললেন, ‘সকাল অথবা বিকালে।’ আমি বললাম, ‘লোকে তো রোযার বিকালে দাঁতন করাকে অপছন্দনীয় মনে করে। তারা বলে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘নিশ্চয়ই রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট কস্ত্তরীর সুবাস অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধময়।’’ মুআয (রাঃ) বললেন, ‘সুবহানাল্লাহ! তিনি তাদেরকে দাঁতন করতে আদেশ দিয়েছেন। আর যে জিনিস তিনি পরিষ্কার করতে আদেশ দিয়েছেন, সে জিনিসকে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্গন্ধময় করা উত্তম হতে পারে না। তাতে কোন প্রকারের মঙ্গল নেই; বরং তাতে অমঙ্গলই আছে।’[4]
কিন্তু যদি কোন দাঁতনে বিশেষ স্বাদ থাকে এবং তা তার থুথুকে প্রভাবান্বিত করে, তাহলে তার স্বাদ বা থুথু গিলে নেওয়া উচিৎ নয়।[5] পরন্তু সেই দাঁতন করা থেকে দূরে থাকা উচিৎ, যার দ্রবণশীল উপাদান (ও রস) আছে। যেমন কাঁচা (গাছের ডালের বা শিকড়ের) দাঁতন। তদনুরূপ সেই দাঁতন, যাতে তার নিজস্ব স্বাদ ছাড়া ভিন্ন স্বাদ; যেমন লেবু বা পুদ্বীনা (পেপারমে¦ট্, মেনথল) ইত্যাদির স্বাদ অতিরিক্ত করা হয়েছে এবং যা মুখের ভিতরে গিয়ে দ্রবীভূত হয়ে মুখগহ্বরে ছড়িয়ে পড়ে। আর ইচ্ছা করে তা গিলে ফেলা বৈধ নয়। তবে যদি অনিচ্ছাকৃত কারো গিলা যায়, তাহলে তাতে কোন ক্ষতি হয় না।[6]
পক্ষান্তরে রোযার দিনে দাঁতের মাজন (টুথ পেষ্ট্ বা পাওডার) ব্যবহার না করাই উত্তম। বরং তা রাত্রে এবং ফজরের আগে ব্যবহার করা উচিৎ। কারণ, মাজনের এমন প্রতিক্রিয়া ও সঞ্চার ক্ষমতা আছে, যার ফলে তা গলা ও পাকস্থলীতে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনুরূপ আশঙ্কার ফলেই মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) লাকীত্ব বিন সাবরাহকে বলেছিলেন, ‘‘(ওযূ করার সময়) তুমি নাকে খুব অতিরঞ্জিতভাবে পানি টেনে নিও। কিন্তু তোমার রোযা থাকলে নয়।’’[7]
বলা বাহুল্য, রোযাদারের জন্য মাজন ব্যবহার না করাই উত্তম। আর এ ব্যাপারে সংকীর্ণতা নেই। কারণ, সে ইফতার করে নেওয়া পর্যন্ত সময় অপেক্ষা করে যদি তা ব্যবহার করে, তাহলে সে এমন এক জিনিস থেকে দূরে থাকতে পারবে, যার দ্বারা তার রোযা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।[8]
পক্ষান্তরে নেশাদার ও দেহে অবসন্ন আনয়নকারী মাজন; যেমন, গুল-গুরাকু প্রভৃতি; যা ব্যবহারের ফলে মাথা ঘোরে অথবা ব্যবহারকারী জ্ঞানশূন্য হয়ে যায়, তা ব্যবহার করা বৈধ নয়; না রোযা অবস্থায় এবং না অন্য সময়। কারণ, তা মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর এই বাণীর আওতাভুক্ত হতে পারে, যাতে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক মাদকতা আনয়নকারী দ্রব্য হারাম।’’[9]
জ্ঞাতব্য যে, দাঁতের মাড়িতে ক্ষত থাকার ফলে অথবা দাঁতন করতে গিয়ে রক্ত বের হলে তা গিলে ফেলা বৈধ নয়; বরং তা বের করে ফেলা জরুরী। অবশ্য যদি তা নিজের ইচ্ছা ও এখতিয়ার ছাড়াই গলায় নেমে যায়, তাহলে তাতে কোন ক্ষতি হবে না।[10]
প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘আমি উম্মতের জন্য কষ্টকর না জানলে তাদেরকে প্রত্যেক নামাযের সময় দাঁতন করতে আদেশ দিতাম।’’[2] অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘---তাদেরকে প্রত্যেক ওযূর সময় দাঁতন করতে আদেশ দিতাম।’’[3]
ইমাম ত্বাবারানী উত্তম সনদ দ্বারা বর্ণনা করেছেন যে, আব্দুর রহমান বিন গুন্ম বলেন, আমি মুআয বিন জাবাল (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আমি কি রোযা অবস্থায় দাঁতন করব?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ আমি বললাম, ‘দিনের কোন্ ভাগে?’ তিনি বললেন, ‘সকাল অথবা বিকালে।’ আমি বললাম, ‘লোকে তো রোযার বিকালে দাঁতন করাকে অপছন্দনীয় মনে করে। তারা বলে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘নিশ্চয়ই রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট কস্ত্তরীর সুবাস অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধময়।’’ মুআয (রাঃ) বললেন, ‘সুবহানাল্লাহ! তিনি তাদেরকে দাঁতন করতে আদেশ দিয়েছেন। আর যে জিনিস তিনি পরিষ্কার করতে আদেশ দিয়েছেন, সে জিনিসকে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্গন্ধময় করা উত্তম হতে পারে না। তাতে কোন প্রকারের মঙ্গল নেই; বরং তাতে অমঙ্গলই আছে।’[4]
কিন্তু যদি কোন দাঁতনে বিশেষ স্বাদ থাকে এবং তা তার থুথুকে প্রভাবান্বিত করে, তাহলে তার স্বাদ বা থুথু গিলে নেওয়া উচিৎ নয়।[5] পরন্তু সেই দাঁতন করা থেকে দূরে থাকা উচিৎ, যার দ্রবণশীল উপাদান (ও রস) আছে। যেমন কাঁচা (গাছের ডালের বা শিকড়ের) দাঁতন। তদনুরূপ সেই দাঁতন, যাতে তার নিজস্ব স্বাদ ছাড়া ভিন্ন স্বাদ; যেমন লেবু বা পুদ্বীনা (পেপারমে¦ট্, মেনথল) ইত্যাদির স্বাদ অতিরিক্ত করা হয়েছে এবং যা মুখের ভিতরে গিয়ে দ্রবীভূত হয়ে মুখগহ্বরে ছড়িয়ে পড়ে। আর ইচ্ছা করে তা গিলে ফেলা বৈধ নয়। তবে যদি অনিচ্ছাকৃত কারো গিলা যায়, তাহলে তাতে কোন ক্ষতি হয় না।[6]
পক্ষান্তরে রোযার দিনে দাঁতের মাজন (টুথ পেষ্ট্ বা পাওডার) ব্যবহার না করাই উত্তম। বরং তা রাত্রে এবং ফজরের আগে ব্যবহার করা উচিৎ। কারণ, মাজনের এমন প্রতিক্রিয়া ও সঞ্চার ক্ষমতা আছে, যার ফলে তা গলা ও পাকস্থলীতে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনুরূপ আশঙ্কার ফলেই মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) লাকীত্ব বিন সাবরাহকে বলেছিলেন, ‘‘(ওযূ করার সময়) তুমি নাকে খুব অতিরঞ্জিতভাবে পানি টেনে নিও। কিন্তু তোমার রোযা থাকলে নয়।’’[7]
বলা বাহুল্য, রোযাদারের জন্য মাজন ব্যবহার না করাই উত্তম। আর এ ব্যাপারে সংকীর্ণতা নেই। কারণ, সে ইফতার করে নেওয়া পর্যন্ত সময় অপেক্ষা করে যদি তা ব্যবহার করে, তাহলে সে এমন এক জিনিস থেকে দূরে থাকতে পারবে, যার দ্বারা তার রোযা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।[8]
পক্ষান্তরে নেশাদার ও দেহে অবসন্ন আনয়নকারী মাজন; যেমন, গুল-গুরাকু প্রভৃতি; যা ব্যবহারের ফলে মাথা ঘোরে অথবা ব্যবহারকারী জ্ঞানশূন্য হয়ে যায়, তা ব্যবহার করা বৈধ নয়; না রোযা অবস্থায় এবং না অন্য সময়। কারণ, তা মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর এই বাণীর আওতাভুক্ত হতে পারে, যাতে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক মাদকতা আনয়নকারী দ্রব্য হারাম।’’[9]
জ্ঞাতব্য যে, দাঁতের মাড়িতে ক্ষত থাকার ফলে অথবা দাঁতন করতে গিয়ে রক্ত বের হলে তা গিলে ফেলা বৈধ নয়; বরং তা বের করে ফেলা জরুরী। অবশ্য যদি তা নিজের ইচ্ছা ও এখতিয়ার ছাড়াই গলায় নেমে যায়, তাহলে তাতে কোন ক্ষতি হবে না।[10]
[1] (আহমাদ, মুসনাদ ৬/৪৭, দারেমী, নাসাঈ ৫নং, ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ, বাইহাকী ১/৩৪, ইবনে হিববান, সহীহ, বুখারী (বিনা সনদে), মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৮১, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৬৬নং)
[2] (বুখারী ৮৮৭, মুসলিম ২৫২, সুনানে আরবাআহ; আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ)
[3] (আহমাদ, মুসনাদ ২/৪৬০, ৫১৭, প্রমুখ)
[4] (দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ১/১০৬)
[5] (ইবনে উষাইমীন, ফাসিঃ মুসনিদ ৩৯পৃঃ)
[6] (সাবঊনা মাসআলাহ ফিস্-সিয়াম ৫৪নং)
[7] (আহমাদ, মুসনাদ ৪/৩৩, আবূ দাঊদ ১৪২, তিরমিযী, নাসাঈ, সহীহ ইবনে মাজাহ, আলবানী ৩২৮নং)
[8] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪০৭, ৪৩২, সামানিয়া ওয়া আরবাঊন সুআলান ফিস্-সিয়াম, ইবনে উষাইমীন ৬৩পৃঃ)
[9] (বুখারী, মুসলিম, সুনানে আরবাআহ; আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ, সজাঃ ৪৫৫০নং)
[10] (ইবনে উষাইমীন, ফাসিঃ ৩৯পৃঃ, ৭০ঃ ৫৩নং)
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী