রোযা অবস্থায় কোন যন্ত্র দ্বারা অথবা যন্ত্র ছাড়াই, পা থেকে অথবা মাথার কোন শিরা থেকে, মুখে করে চুষে অথবা যে কোন প্রকারে দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হবে কি না, সে নিয়ে উলামাদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক উভয় শ্রেণীর বর্ণনা মজুদ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দেহ থেকে দূষিত রক্ত যে বের করে তার এবং যার বের করা হয় তারও রোযা নষ্ট হয়ে যায়।’’[1] এ কথাও বর্ণিত আছে যে, তিনি রোযা অবস্থায় নিজ দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করেছেন।[2] আর তিনি বলেছেন, ‘‘যে (অনিচ্ছাকৃত) বমি করে, যার স্বপ্নদোষ হয় এবং যে দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করে, তার রোযা নষ্ট হয় না।’’[3]
পরস্পর বিরোধী উক্ত সকল বর্ণনা দেখে কিছু উলামা মনে করেন যে, দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাদীস আজও নাসেখ (কার্যকর) এবং এর বিরোধী সকল হাদীস মনসূখ (রহিত)। পক্ষান্তরে অন্যান্য কিছু সত্য-সন্ধানী গবেষক উলামা মনে করেন যে, বরং প্রথম হাদীসটাই মনসূখ।
দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাদীস যে মনসূখ (রহিত) সে ব্যাপারে সাক্ষ্য বহন করে আনাস (রাঃ)-এর হাদীস। তিনি বলেন, ‘শুরু শুরু রোযাদারের জন্য দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করা মকরূহ ছিল। একদা জা’ফর বিন আবী তালেব রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলেন। তা দেখে তিনি বললেন, ‘‘এদের উভয়ের রোযা নষ্ট।’’ অতঃপর পরবর্তীকালে তিনি রোযাদারের জন্য দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করার অনুমতি দিলেন।’ আর সবয়ং আনাস রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করতেন।[4]
একদা তাঁকে প্রশ্ন করা হল, ‘আপনারা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে কি রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করাকে মকরূহ মনে করতেন?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘না। অবশ্য দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা করলে মকরূহ মনে করা হত।’[5]
তদনুরূপ আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) রোযাদারকে স্ত্রী-চুম্বন ও দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করার ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন।’[6]
ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ‘(পেটের ভিতরে) কিছু প্রবেশ করলে রোযা ভাঙ্গে, কিছু বাহির হলে নয়।’[7]
উপরোক্ত কিছু বর্ণনায় ‘অনুমতি’ দেওয়ার অর্থই হল যে, প্রথমে সে কাজ অবৈধ ছিল এবং পরে তা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। অতএব সঠিক মত এই যে, দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে কারো রোযা নষ্ট হবে না; যে বের করাবে তার এবং যে বের করে দেবে তারও নয়।[8]
বলা বাহুল্য, যদিও সঠিক মত এই যে, রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হবে না, তবুও উত্তম ও পূর্বসতর্কতামূলক আমল এই যে, রোযাদার তা বর্জন করবে। এর ফলে সে মতভেদের বেড়াজাল থেকে নিষ্কৃতি পাবে, খুন বের করার পর সে দৈহিক দুর্বলতার শিকার হবে না এবং যে ব্যক্তি মুখে টেনে খুন বের করে সে ব্যক্তির গলায় কিছু রক্ত চলে গিয়ে তারও রোযা নষ্ট না হয়ে যায়। অবশ্য একান্ত তা করার দরকার হলে দিনে না করে রাত্রে করবে। আর সেটাই হবে উভয়ের জন্য উত্তম।[9]৫৬নং)
পরস্পর বিরোধী উক্ত সকল বর্ণনা দেখে কিছু উলামা মনে করেন যে, দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাদীস আজও নাসেখ (কার্যকর) এবং এর বিরোধী সকল হাদীস মনসূখ (রহিত)। পক্ষান্তরে অন্যান্য কিছু সত্য-সন্ধানী গবেষক উলামা মনে করেন যে, বরং প্রথম হাদীসটাই মনসূখ।
দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাদীস যে মনসূখ (রহিত) সে ব্যাপারে সাক্ষ্য বহন করে আনাস (রাঃ)-এর হাদীস। তিনি বলেন, ‘শুরু শুরু রোযাদারের জন্য দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করা মকরূহ ছিল। একদা জা’ফর বিন আবী তালেব রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলেন। তা দেখে তিনি বললেন, ‘‘এদের উভয়ের রোযা নষ্ট।’’ অতঃপর পরবর্তীকালে তিনি রোযাদারের জন্য দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করার অনুমতি দিলেন।’ আর সবয়ং আনাস রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করতেন।[4]
একদা তাঁকে প্রশ্ন করা হল, ‘আপনারা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে কি রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করাকে মকরূহ মনে করতেন?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘না। অবশ্য দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা করলে মকরূহ মনে করা হত।’[5]
তদনুরূপ আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) রোযাদারকে স্ত্রী-চুম্বন ও দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করার ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন।’[6]
ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ‘(পেটের ভিতরে) কিছু প্রবেশ করলে রোযা ভাঙ্গে, কিছু বাহির হলে নয়।’[7]
উপরোক্ত কিছু বর্ণনায় ‘অনুমতি’ দেওয়ার অর্থই হল যে, প্রথমে সে কাজ অবৈধ ছিল এবং পরে তা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। অতএব সঠিক মত এই যে, দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে কারো রোযা নষ্ট হবে না; যে বের করাবে তার এবং যে বের করে দেবে তারও নয়।[8]
বলা বাহুল্য, যদিও সঠিক মত এই যে, রোযা অবস্থায় দেহ থেকে দূষিত রক্ত বের করলে রোযা নষ্ট হবে না, তবুও উত্তম ও পূর্বসতর্কতামূলক আমল এই যে, রোযাদার তা বর্জন করবে। এর ফলে সে মতভেদের বেড়াজাল থেকে নিষ্কৃতি পাবে, খুন বের করার পর সে দৈহিক দুর্বলতার শিকার হবে না এবং যে ব্যক্তি মুখে টেনে খুন বের করে সে ব্যক্তির গলায় কিছু রক্ত চলে গিয়ে তারও রোযা নষ্ট না হয়ে যায়। অবশ্য একান্ত তা করার দরকার হলে দিনে না করে রাত্রে করবে। আর সেটাই হবে উভয়ের জন্য উত্তম।[9]৫৬নং)
[1] (আহমাদ, মুসনাদ, আবূ দাঊদ ২৩৬৭, ইবনে মাজাহ ১৬৮০, দারেমী, সুনান ১৬৮১-১৬৮২, ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ ১৯৬২-১৯৬৩নং, ইবনে হিববান, সহীহ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ১/৪২৭, বাইহাকী ৪/২৬৫, প্রমুখ)
[2] (বুখারী ১৯৩৮-১৯৩৯, আবূ দাউদ ২৩৭২, তিরমিযী, ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ, বাইহাকী ৪/২৬৩)
[3] (আবূ দাঊদ, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৭৭৪২নং)
[4] (দারাকুত্বনী, সুনান ২৩৯নং, বাইহাকী ৪/২৬৮)
[5] (বুখারী : ১৯৪০নং)
[6] (ত্ববারানী, দারাকুত্বনী, ইরওয়াউল গালীল ৪/৭৪)
[7] (ইবনু আবী শাইবাহ ৯৩১৯নং, ইরওয়াউল গালীল ৪/৭৫)
[8] (দ্রঃ মুহাল্লা ৬/২০৪-২০৫, ইরওয়াউল গালীল ৪/৭৪)
[9] (দ্রঃ আহকামুস সাওমি অল-ই’তিকাফ, আবূ সারী মঃ আব্দুল হাদী ১৩৬পৃঃ, সাবঊনা মাসআলাহ ফিস্-সিয়াম, মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী