প্রবন্ধ রাসূলের সুন্নাহতে যিকিরের কয়েকটি পদ্ধতি

Abu Umar

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
665
Comments
1,233
Solutions
17
Reactions
7,655
রাসূলের সুন্নাহতে যিকিরের অসংখ্য পদ্ধতি এসেছে। তন্মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে:

لاَ إِلهَ إِلاَّ اللّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

১. আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহ, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদ, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর- এই দুআটি যে ব্যক্তি প্রত্যেকদিন একশত বার পাঠ করবে, তার দশটি দাস মুক্ত করার সওয়াব হবে। তার জন্য একশ’টি সওয়াব লেখা হবে। একশ’টি গোনাহ মুছে দেয়া হবে। সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তানের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকবে। এই দুআটি তার চেয়ে বেশি পড়া ছাড়া অন্য কোনো আমল দিয়ে ঐদিন তার আগে কেউ যেতে পারবে না। আর যে ব্যক্তি প্রত্যেক দিন ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’ একশ’ বার পাঠ করবে, সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও তার গোনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে’। (বুখারী ৩২৯৩, মুসলিম ২৬৯১)

لاَ إِلهَ إِلاَّ اللّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

২. আবু আইয়ূব রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহ, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদ, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর’- যে ব্যক্তি এই দু’আটি দশ বার পাঠ করবে, সে ইসমাঈল আ. এর বংশ থেকে চারটি ক্রীতদাস মুক্ত করার সওয়াব পাবে’। (বুখারী ৬৪০৪, মুসলিম ২৬৯৩)

৩. সা’দ বিন ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেন, ‘তোমাদের কেউ কি প্রত্যেক দিন এক হাজার নেকী কামাতে অক্ষম’? তখন একজন জিজ্ঞাসা করলো: কীভাবে এক হাজার নেকী কামাবে হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, ‘এক শত বার আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করবে, তাহলে তার জন্য এক হাজার নেকী লেখা হবে। অথবা এক হাজার গোনাহ মুছে দেয়া হবে’। (মুসলিম ২৬৯৮)

৪. আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক দিন একশত বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’ পাঠ করবে, সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও তার গোনাহগুলো মুছে দেয়া হবে’। (বুখারী ৬৪০৫, মুসলিম ২৬৯২) সহীহ মুসলিমের একটি বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সকাল বেলা ও সন্ধ্যা বেলা একশত বার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’ যিকির করবে, এটা একশত বার কিংবা আরও বেশি যিকিরকারী ব্যতীত আর কেউ কিয়ামতের দিন তার চেয়ে উত্তম আমল নিয়ে আসবে না’। (মুসলিম ২৬৯২)

বিভিন্ন ধরনের দুআ ও যিকির এবং তার ফযীলত সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস রয়েছে। এতক্ষণ আমরা কেবল প্রসিদ্ধ ও শ্রেষ্ঠ কিছু দুআ নিয়ে আলোচনা করলাম। এগুলো ছাড়াও অসংখ্য দুআ ও যিকির রয়েছে। উদাহরণত আবু মূসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন, ‘আমি কি তোমাকে জান্নাতের একটি ভাণ্ডারের পথ দেখিয়ে দিবো না’? আমি বললাম, জ্বী ‘আল্লাহর রাসূল অবশ্যই দিবেন’। তিনি ললেন, ‘বলো- লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। (বুখারী ৪২০২, মুসলিম ২৭০৪)

আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার’ বলা আমার কাছে পৃথিবীর সবকিছুর থেকে প্রিয়’। (মুসলিম ২৬৯৫)

ইস্তেগফারও এক ধরনের যিকির। আগার মুযানী রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘আমার অন্তর অস্থির হয়ে ওঠে। আমি প্রত্যেক দিন একশত বার আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করি’। (মুসলিম ২৭০২)

এটা ইস্তেগফার করার আমলী দলীল। প্রায়োগিকভাবে দেখানোর পাশাপাশি নবীজী উম্মতকে এটা পালনের মৌখিক নির্দেশনাও দিয়েছেন। সহীহ মুসলিমে আগার মুযানী রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো। আমি প্রত্যেক দিন আল্লাহর কাছে একশত বার তওবা করি’। (মুসলিম ২৭০২)

সহীহ বুখারীতে আবু হুরাইরা রা. এর হাদীস এসেছে। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে শুনেছি, ‘আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যেকদিন সত্তুর বার ইস্তেগফার ও তওবা করি’। (বুখারী ৬৩০৭) সুতরাং আমাদেরও উচিত ইস্তেগফার থেকে গাফিল না হওয়া।

যিকিরের অধ্যায়ের পাশাপাশি বক্ষ্যমাণ গ্রন্থের শেষ পর্যায়ে এসে আমরা একটি মহান যিকিরের দিকে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো। সেটি হচ্ছে বুখারী ও মুসলিমে আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীস। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, ‘দু’টি বাক্য এমন রয়েছে যা মুখে বলতে হালকা। অথচ কিয়ামতের দিন দাঁড়িপাল্লায় ভারী। আর আল্লাহর কাছেও অত্যন্ত প্রিয়। বাক্যদু’টি হলো: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আযীম’। (বুখারী ৬৪০৬, মুসলিম ২৬৯৪)

সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার; যার দয়ায় সুন্দর কর্মসমূহ সম্পাদিত হয়।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top