বর্তমানে সেলফি রোগে আক্রান্ত আমাদের যুব সমাজ। বিশেষ করে রমজান কেন্দ্রিক মুসল্লিদের এ রোগটা বেড়ে যায়। তাই ফেসবুক জুড়ে তাদের রমজান সেলফির ছড়াছড়ি।
যেমন: ইফতার রেডি করছি, ইফতার করলাম, ইফতার বিতরণ করছি, ইফতারের নানা আইটেমের ছবি, তারাবিহ পড়তে যাচ্ছি, তারাবিহ পড়ে এলাম, সেহেরি খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠলাম, তাহাজ্জুদ পড়লাম, ফজর নামাজ পড়লাম, হিজাব টা কেমন মানাইছে, কুরআন হাতে নিয়ে ছবি (পড়ুক অথবা না পড়ুন তা গুরুত্বপূর্ণ নয়), কুরআন খতম করব দুআ করবেন, হাসি মুখে টুপি পরা ছবি, নামাজের ছবি, সেজদার সেলফি, ফকিরকে দান করার সেলফি, উমরা করতে এসে ইহরাম, তওয়াফ ও কাবাকে সামনে নিয়ে দুআর ভঙ্গীতে নানা ঢং এর ছবি, অবশেষ কাবা শরীফ বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সবুজ গম্বুজ এর ছবি পোস্ট করে আমিন না লিখে যাবে না..ইত্যাদি।
এই টাইপের মৌসুম ভিত্তিক অজ্ঞ মুসল্লিতে ফেসবুক গরম। আল্লাহ এদেরকে হেদায়েত করুন। আমিন।
যাহোক, আমাদের কর্তব্য, যথাসম্ভব আমাদের নেকির কাজগুলোকে গোপন রাখা এবং একান্ত জরুরি বা বিশেষ সৎ উদ্দেশ্য ছাড়া (যেমন: কোনও অনুসরণীয় আলেম কর্তৃক মানুষকে শিক্ষা বা উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য, কোনও সংগঠন কর্তৃক ইফতার বিতরণের প্রমাণ উপস্থাপন, দাওয়াতি উদ্দেশ্যে নিউজ হিসেবে ইত্যাদি) ফেসবুকে পাবলিকের সামনে প্রকাশ না করা।
কেননা এতে অন্তরে রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা) সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর রিয়া সৃষ্টি হলে আমলের সওয়াব বরবাদ হয়ে যায়। বরং মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে ইবাদত করা হলে তা ছোট শিরকে পরিণত হয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّـهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ
“তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে।”
(সূরা আল বাইয়েনাত: ৫)
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ وَمَنْ يُرَائِي يُرَائِي اللَّهُ بِهِ
“যে ব্যক্তি খ্যাতি অর্জনের জন্য কোন কাজ করে, আল্লাহ তাআলা তার দোষ-ক্রটিকে লোক সমাজে প্রকাশ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য কোন কাজ করে, আল্লাহ তা’আলাও তার সাথে লোক দেখানোর আচরণ করবেন (প্রকৃত সাওয়াব হতে সে বঞ্চিত থাকবে)।”
[বুখারি ও মুসলিম]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন (হাদিসে কুদসি):
«من عمل عملا و أشرك فيه غيري تركته و شركه»
“যে ব্যক্তি কোন একটি আমল করল এবং তাতে সে আমার সাথে অন্য কাউকে শরিক করল (অর্থাৎ কাউকে খুশি করার, প্রশংসা করার বা দুনিয়ার কোনও স্বার্থ লোভে তা সম্পাদন করল) আমি তাকে ও তার আমলকে প্রত্যাখ্যান করি।”
(সহিহ মুসলিম)
হাদিসে গোপন ইবাদতের মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন সাত শ্রেণীর ব্যক্তিকে তার আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দানে ধন্য করবেন।
তাদের মধ্যে দু জন হল:
যে ব্যক্তি এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না। অপর ব্যক্তি হল যে, নির্জনে আল্লাহর জিকির করে, ফলে তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়।
[সহীহ বুখারি (ইফা), অধ্যায়: ১০/ আজান, ৪২৮। অনুচ্ছেদ: যিনি সালাতের অপেক্ষায় মসজিদে বসে থাকে তার এবং মসজিদের ফযিলত।]
আল্লাহ আমাদেরকে মাহে রমজানে অধিক পরিমাণে ইবাদত-বন্দেগি করা, এ ক্ষেত্রে যথাসম্ভ গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং তাতে যেন রিয়া তথা লোক প্রশংসা ও প্রদর্শনেচ্ছা প্রবেশ না করে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সচেতন থাকা। কেননা তা আমাদের আমলগুলোকে ধ্বংস করার এক গোপন ঘাতক। আল্লাহ হেফাজত করুন।
আমিন।
লেখক : আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি।
যেমন: ইফতার রেডি করছি, ইফতার করলাম, ইফতার বিতরণ করছি, ইফতারের নানা আইটেমের ছবি, তারাবিহ পড়তে যাচ্ছি, তারাবিহ পড়ে এলাম, সেহেরি খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠলাম, তাহাজ্জুদ পড়লাম, ফজর নামাজ পড়লাম, হিজাব টা কেমন মানাইছে, কুরআন হাতে নিয়ে ছবি (পড়ুক অথবা না পড়ুন তা গুরুত্বপূর্ণ নয়), কুরআন খতম করব দুআ করবেন, হাসি মুখে টুপি পরা ছবি, নামাজের ছবি, সেজদার সেলফি, ফকিরকে দান করার সেলফি, উমরা করতে এসে ইহরাম, তওয়াফ ও কাবাকে সামনে নিয়ে দুআর ভঙ্গীতে নানা ঢং এর ছবি, অবশেষ কাবা শরীফ বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সবুজ গম্বুজ এর ছবি পোস্ট করে আমিন না লিখে যাবে না..ইত্যাদি।
এই টাইপের মৌসুম ভিত্তিক অজ্ঞ মুসল্লিতে ফেসবুক গরম। আল্লাহ এদেরকে হেদায়েত করুন। আমিন।
যাহোক, আমাদের কর্তব্য, যথাসম্ভব আমাদের নেকির কাজগুলোকে গোপন রাখা এবং একান্ত জরুরি বা বিশেষ সৎ উদ্দেশ্য ছাড়া (যেমন: কোনও অনুসরণীয় আলেম কর্তৃক মানুষকে শিক্ষা বা উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য, কোনও সংগঠন কর্তৃক ইফতার বিতরণের প্রমাণ উপস্থাপন, দাওয়াতি উদ্দেশ্যে নিউজ হিসেবে ইত্যাদি) ফেসবুকে পাবলিকের সামনে প্রকাশ না করা।
কেননা এতে অন্তরে রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা) সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর রিয়া সৃষ্টি হলে আমলের সওয়াব বরবাদ হয়ে যায়। বরং মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে ইবাদত করা হলে তা ছোট শিরকে পরিণত হয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّـهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ
“তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে।”
(সূরা আল বাইয়েনাত: ৫)
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ وَمَنْ يُرَائِي يُرَائِي اللَّهُ بِهِ
“যে ব্যক্তি খ্যাতি অর্জনের জন্য কোন কাজ করে, আল্লাহ তাআলা তার দোষ-ক্রটিকে লোক সমাজে প্রকাশ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য কোন কাজ করে, আল্লাহ তা’আলাও তার সাথে লোক দেখানোর আচরণ করবেন (প্রকৃত সাওয়াব হতে সে বঞ্চিত থাকবে)।”
[বুখারি ও মুসলিম]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন (হাদিসে কুদসি):
«من عمل عملا و أشرك فيه غيري تركته و شركه»
“যে ব্যক্তি কোন একটি আমল করল এবং তাতে সে আমার সাথে অন্য কাউকে শরিক করল (অর্থাৎ কাউকে খুশি করার, প্রশংসা করার বা দুনিয়ার কোনও স্বার্থ লোভে তা সম্পাদন করল) আমি তাকে ও তার আমলকে প্রত্যাখ্যান করি।”
(সহিহ মুসলিম)
হাদিসে গোপন ইবাদতের মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন সাত শ্রেণীর ব্যক্তিকে তার আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দানে ধন্য করবেন।
তাদের মধ্যে দু জন হল:
যে ব্যক্তি এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না। অপর ব্যক্তি হল যে, নির্জনে আল্লাহর জিকির করে, ফলে তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়।
[সহীহ বুখারি (ইফা), অধ্যায়: ১০/ আজান, ৪২৮। অনুচ্ছেদ: যিনি সালাতের অপেক্ষায় মসজিদে বসে থাকে তার এবং মসজিদের ফযিলত।]
আল্লাহ আমাদেরকে মাহে রমজানে অধিক পরিমাণে ইবাদত-বন্দেগি করা, এ ক্ষেত্রে যথাসম্ভ গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং তাতে যেন রিয়া তথা লোক প্রশংসা ও প্রদর্শনেচ্ছা প্রবেশ না করে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সচেতন থাকা। কেননা তা আমাদের আমলগুলোকে ধ্বংস করার এক গোপন ঘাতক। আল্লাহ হেফাজত করুন।
আমিন।
লেখক : আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি।