যমযমের পানি পান - রুকিয়াহর উপকরন

Joynal Bin TofajjalVerified member

Student Of Knowledge
Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
344
Comments
475
Reactions
5,361
যমযমের পানি পান
ভূমিকা

হাদীসে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) যমযমের পানি পান করতেন এবং বলতেন:

“এতে বরকত রয়েছে”।

তিনি আরো বলেন:

“এতে পুষ্টি রয়েছে এবং এটা অসুস্থতার জন্য নিরাময়”। [আবু দাউদ, আত-তাইয়ালিসি, ৪৫৯।]

আরো বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন:

“পৃথিবীর বুকে সর্বোৎকৃষ্ট পানি হল যমযমের পানি, এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা মানুষের জন্য পুষ্টি যোগায় এবং এটা রোগ নিরাময় করে।” [আল-তাবারানি, আল-মুনযিরি বলেন, এই হাদিসের বর্ণনাকারীগণ সীকাত, (নির্ভরযোগ্য)]

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত আছে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন:

“যমযমের পানি যার জন্য পান করা হবে তারই কাজ করবে। তুমি যদি নিরাময় লাভের আশায় এ পানি পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করবেন; তুমি যদি এ পানি পরিপূর্ণতা অনুভব করার আশায়। পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমাকে পরিপূর্ণতা দান করবেন; তুমি যদি তোমার তৃষ্ণা মেটানোর জন্য এ পানি কর, আল্লাহ তোমার তৃষ্ণা মিটিয়ে দেবেন। জিবরাঈলের পদাঘাতে এর সৃষ্টি এবং আল্লাহ ইসমাঈলকে এটি দান করেছিলেন পানি পান করার জন্য।” [দারাকুতনী ও আল হাকিম, কিতাবুল মানাসিক, ১/৪৭৩]

আল হাকিম আরো উল্লেখ করেন, “আপনি যদি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে এ পানি পান করেন, তাহলে আল্লাহ আপনার আশ্রয় মঞ্জুর করবেন।”

ইবনে আব্বাস (রাঃ) এ যমযমের পানি পান করার সময় বলতেন:

“হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, পর্যাপ্ত খাবার এবং যে কোনো রোগ থেকে নিরাময় প্রার্থনা করছি।” [দেখুন: তাফসীর আল কুরতুবী, সুরা ইব্রাহিম, আয়াত-৩৭]

ইবনুল কাইয়িম (রহ) বলেন, আমি কিছুদিন মক্কায় কাটিয়েছিলাম, সেখানে থাকা অবস্থায় আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু কোনো ডাক্তার পেলাম না। তাই বাধ্য হয়ে আমার নিজের চিকিৎসা নিজেকেই করতে হয়েছিল। তো এ চিকিৎসার অংশ হিসেবে আমি যমযমের পানি পান করা শুরু করলাম। আমি এ পানি নিয়ে বেশ কয়েকবার কুরআন তেলাওয়াত করলাম এর উপর, অতঃপর পানি পান করলাম, এবং এ পদ্ধতি ব্যবহার করে আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলাম। এরপর থেকে অনেক ব্যথার ক্ষেত্রে আমি এর উপরই নির্ভর করলাম, এবং বেশ উপকারও পেয়েছি এ পদ্ধতি থেকে।

যেভাবে যমযমের পানি পান করতে হয়

আল্লাহর নামে পান শুরু করা সুন্নাত।

তিন ঢোকে পানি পান করা সুন্নাত।

পান করার সময় কিবলামুখী হবেন।

সবটুকু পানি পান করবেন এবং আল্লাহর প্রশংসা করবেন।

বর্ণিত আছে, আবূ মুলায়েখ (রহ) বলেন, ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, তুমি কি ঠিকভাবে যমযমের পানি পান কর? তিনি বললেন: সেটা কিভাবে? তিনি বললেন: যখন তুমি এ পানি পান করবে, তখন কিবলামুখী হবে, আল্লাহকে স্মরণ করবে এবং তিন ঢোকে পানি পান করবে, আর পান করা শেষ হলে আল্লাহর প্রশংসা করবে। কারণ আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেন:

“আমাদের ও মোনাফিকের মাঝে পার্থক্য হল তারা যমযমের পানি পরিপূর্ণভাবে পান করে না।” [যঈফ, দেখুন আল্লামা আলবানী (রঃ)-এর যঈফুল জামি ২২]

পরিপূর্ণভাবে পান করার অর্থ হল, এতটা পরিমাণে পানি পান করা যাতে তা বুকের পাঁজর পর্যন্ত পৌঁছায়। তবে যমযমের পানি না থাকলে সাধারণ বিশুদ্ধ পানি হলেও চলবে; এ পানির উপর রুকুইয়া পাঠ করতে হবে এবং রোগী এ পানি থেকে পান করবে এবং এটা দিয়ে ওযু বা শরীর ধৌত করবে।

মানুষ এভাবে চেষ্টা করেছে এবং রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে এটা ভালো কাজও করেছে।

ইউরোপের এক ডাক্তার এ প্রসঙ্গে বলেন: এ মহিলার সুস্থ হওয়ার কোনো আশাই ছিল না-তার ক্যান্সার হয়েছিল এবং তা পুরো শরীরে। ছড়িয়ে পড়েছিল-কিন্তু তিনদিন যমযমের পানি পান এবং পানি দিয়ে শরীর ধৌত করার পর তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন, এতটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেন তিনি, যেন কোনো দিন তার কোনো রোগই হয়নি। বক্তাদের মধ্যে। সবচেয়ে সত্যবাদী সেই মহা মানব যথার্থই বলেছেন:

“এ যমযমের পানি মানুষের পুষ্টি যোগায় এবং রোগ থেকে নিরাময় দান করে।”
 
Similar threads Most view View more
Back
Top