সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Shihab_Uddin

মোহরকে হ্রাস করুন

Shihab_Uddin

Member

Threads
5
Comments
9
Reactions
78
Credits
32
আবু ওয়াদাআহ বলেন, আমি সাঈদ বিন মুসাইয়েবের দরসে বসতাম। কিছু দিন তিনি আমাকে দেখতে না পেয়ে যখন আমি তাঁর নিকট এলাম, তখন আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি ছিলে কোথায়?’ আমি বললাম, ‘আমার স্ত্রী মারা গেল; সেই নিয়ে কিছুদিন ব্যস্ত ছিলাম।’ তিনি বললেন, ‘আমাদেরকে খবর দাওনি কেন? তার জানাযা পড়তাম।’ তারপর উঠে চলে আসার ইচ্ছা করলে তিনি আমাকে বললেন, ‘দ্বিতীয় বিবাহ করলে না কেন?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ আপনাকে রহম করুন! কে আমাকে মেয়ে দেবে? আমি তো দুই কি তিন দিরহামের মালিক মাত্র।’ তিনি বললেন, ‘যদি আমি দিই, তবে তুমি করবে কি?’ আমি বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’

সঙ্গে সঙ্গে খোৎবা পাঠ করে ২ কি ৩ দিরহাম মোহরের বিনিময়ে তাঁর মেয়ের সাথে আমার বিবাহ পড়িয়ে দিলেন। তারপর আমি উঠে এলাম। তখন খুশীতে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। ঘরে এসে লাগলাম চিন্তা করতে; ঋণ করতে হবে, কার নিকট করি? মাগরিবের নামায পড়লাম। রোযায় ছিলাম সেদিন। ইফতার ক’রে রাতের খানা খেলাম। খানা ছিল রুটি ও তেল। ইত্যবসরে কে দরজায় আঘাত করল। আমি বললাম, ‘কে?’ আগন্তুক বলল, ‘আমি সাঈদ।’ ভাবলাম, তিনি কি সাঈদ বিন মুসাইয়েব? তাঁকে তো চল্লিশ বছর যাবৎ ঘর থেকে মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও যেতে দেখা যায়নি। উঠে দরজা খুলতেই দেখি উনিই। ধারণা করলাম, হয়তো বা মত পরিবর্তন হয়েছে। আমি বললাম, ‘আবু মুহাম্মাদ! আপনি নিজে এলেন! আমাকে ডেকে পাঠাতে পারতেন? আমি আপনার নিকট আসতাম।’ তিনি বললেন, ‘না। এর হকদার তুমি।’ আমি বললাম, ‘আদেশ করুন।’ তিনি বললেন, ‘ভাবলাম, বিপত্নীক পুরুষ তুমি; অথচ তোমার বিবাহ হল। তাই তুমি একাকী রাত কাটাও এটা অপছন্দ করলাম। এই নাও তোমার স্ত্রী!’

দেখলাম, সে তাঁর সোজাসুজি পশ্চাতে সলজ্জ দন্ডায়মানা। অতঃপর তিনি তাকে দরজা পার করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে প্রস্থান করলেন। লজ্জায় সে যেন দরজার সাথে মিশে গেল। আমি বাড়ির ছাদে চড়ে প্রতিবেশীর সকলকে হাঁক দিলাম। সকলেই বলল, ‘কি ব্যাপার?’ আমি বললাম, ‘সাঈদ তাঁর মেয়ের সঙ্গে আমার বিবাহ দিয়েছেন। হঠাৎ করে তিনি তাঁর মেয়েকে আমার ঘরে দিয়ে গেলেন। ঐ ওখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’

সকল মহিলা তাকে দেখতে এল।

আমার মায়ের কাছে খবর গেলে তিনি এসে বললেন, ‘তিন দিন না সাজানো পর্যন্ত যদি তুমি ওকে স্পর্শ করো, তবে আমার চেহারা দেখা তোমার জন্য হারাম।’ অতএব তিন দিন অপেক্ষার পর তার সাথে বাসর-শয্যায় মিলিত হলাম। দেখলাম সে অন্যতমা সুন্দরী, কুরআনের হাফেয, আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর সুন্নাহ বিষয়ে সুবিজ্ঞা এবং স্বামীর অধিকার বিষয়ে সবজান্তা।

এরপর একমাস ওস্তাদ সাঈদের নিকট আমার যাওয়া-আসা ছিল না। অতঃপর একদিন তাঁর মসজিদে গিয়ে সালাম দিলে তিনি উত্তর দিলেন। কিন্তু কোন কথা বললেন না। তৎপর সমস্ত লোক যখন মসজিদ থেকে বের হয়ে গেল, তখন একা পেয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন। ‘ঐ লোকটার খবর কি?’ আমি বললাম, ‘তার খবর এমন; যা বন্ধুতে পছন্দ আর শত্রুতে অপছন্দ করবে।’ তিনি বললেন, ‘যদি তার কোন বিষয় তোমাকে সন্দিহান করে, তবে লাঠি ব্যবহার করো।’ অতঃপর বাড়ি ফিরে এলাম।

সাঈদের মেয়ে; যাকে খলীফা আব্দুল মালেক বিন মারওয়ান তাঁর ছেলে অলীদের জন্য পয়গাম দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজপরিবারে মেয়ের বিবাহ দিতে অস্বীকার করেছিলেন। অবশেষে পছন্দ করলেন এক দ্বীনদার গরীবকে!

[ওফায়াতুল আ'ইয়ান লি ইবনে খাল্লিকান - ২/৩৭৬ ]
 
Top