Joynal Bin Tofajjal
Student Of Knowledge
Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
- Joined
- Nov 25, 2022
- Threads
- 344
- Comments
- 475
- Reactions
- 5,348
- Thread Author
- #1
মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ভিত্তি
শাইখ আল-আল্লামা সালেহ আল ফাওযান আল ফাওযান হাফিয্বাহুল্লাহ তার إتحاف القاري ’তে বলেন,আর আমরা এ কথা বিশ্বাস করি যে সঠিক বিশুদ্ধ আক্বীদা ব্যাতিত এই উম্মাহর ঐক্য কখনোই সম্ভব নয়। আর এই আক্বীদা’ই সাহাবায়ে-কেরাম’কে ঐক্যবদ্ধ করেছিলো যখন তারা ছিলো একে অপরের শত্রু। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলছেন:
وٱذكروا نعمت ٱلله عليكم اذ كنتم اعداء فالف بين قلوبكم
আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। [১]
সাহাবায়ে-কেরামকে লড়াই ও বিভক্তির ধুম্রজাল হতে সরিয়ে কিসে তাদের মধ্যে একতা সৃষ্টি করলো? তারা কি লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহর আক্বীদার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হননি?
বিশুদ্ধ আক্বীদা ব্যতিত মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি হতে পারেনা। আক্বীদাতে ভিন্নতা থাকার কারণেই আজও মুসলিম সমাজগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি।
মুসলিমদের মধ্যকার ফিকহের বিষয় নিয়ে মতানৈক্য থাকতে পারে - একটি দলিলের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রকম রায় থাকতে পারে ।এটি কোনো মূখ্য বিষয় না কারণ এটি বৈধ মতানৈক্য। কিন্তু আক্বীদার মধ্যে ভিন্নতা গ্রহনযোগ্য নয় এবং যারা আক্বীদাতে ভিন্নতা অবলম্বন করেছে তারা কখনোই ঐক্যবদ্ধ হতে পারবেনা। যারা আক্বীদার মধ্যে ভিন্নতা প্রদর্শন করেছে তাদের সাথে কখনই ঐক্য সম্ভব নয় , সে যেই হউক না কেনো। কারণ তারা চায় বিপরীতমূখী দুটি জিনিসকে একত্রিত করতে যা কিনা পরস্পর বিরোধী, আর যা কিনা কখনোই সম্ভব নয়।
তারা যদি মুসলমানদের ঐক্য চায়, তাহলে তারা যেনো আগে তাদের ‘আক্বীদা’ সংশোধন করে; এই সেই আক্বীদা যার দাওয়াত প্রথম থেকে শেষ অবধি সকল রাসুলকেই দিতে হয়েছে। যারা এই উম্মাহর মধ্যকার ঐক্য চায় তারা যদি বাস্তবিক অর্থেই সত্যবাদী হয়ে থাকে তাহলে এই আক্বীদার মধ্যেই তাদের আগে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে অতঃপর তারা ঐক্যবদ্ধ হলে এই উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হবে। কিন্তু না, তাদের বাস্তব রূপ হলো এরূপ, যখন কেউ আক্বীদা বিশুদ্ধিকরণের কথা বলে তখন তারা উক্ত আহবানকারী’কে নিয়ে উপহাস করে, আর বলে ‘এই লোকটি তাকফির করেছে, এই লোকটি মানুষকে কাফির বলছে, সে মুসলমানদের মধ্যে বিভক্তি চায়, সে অমুক সে তমুক ইত্যাদি’।
আমরা তাদের বলিঃ আপনি সঠিক আক্বীদা ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন না, যদি আক্বীদা একত্রিত হয় তবে তারা সহজে ঐক্যবদ্ধ হবে।
هو ٱلذى ايدك بنصرهۦ وبٱلمومنين [*] والف بين قلوبهم لو انفقت ما فى ٱلارض جميعا ما الفت بين قلوبهم ولـكن ٱلله الف بينهم انهۥ عزيز حكيم
তিনিই তোমাকে শক্তি যুগিয়েছেন স্বীয় সাহায্যে ও মুসলমানদের মাধ্যমে। আর প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। যদি তুমি সেসব কিছু ব্যয় করে ফেলতে, যা কিছু যমীনের বুকে রয়েছে, তাদের মনে প্রীতি সঞ্চার করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মনে প্রীতি সঞ্চার করেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি পরাক্রমশালী, সুকৌশলী। [২]
وٱعتصموا بحبل ٱلله جميعا ولا تفرقوا وٱذكروا نعمت ٱلله عليكم اذ كنتم اعداء فالف بين قلوبكم فاصبحتم بنعمتهۦ اخونا وكنتم على شفا حفرة من ٱلنار فانقذكم منها كذلك يبين ٱلله لكم ءايـتهۦ لعلكم تهتدون
আর তোমরা সকলে আল্লাহ্র রশি দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণ কর, তোমরা ছিলে পরস্পর শত্রু অতঃপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে। তোমরা তো অগ্নিগর্তের দ্বারপ্রান্তে ছিলে, তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ স্পষ্টভাবে বিবৃত করেন যাতে তোমরা হেদায়াত পেতে পার। [৩]
وان هـذهۦ امتكم امة وحدة وانا ربكم فٱتقون
‘আর আপনাদের এ উম্মত তো একই উম্মত , এবং আমিই আপনাদের রব; অতএব আমারই তাকওয়া অবলম্বন করুন।’ [৪]
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,
ان هـذهۦ امتكم امة وحدة وانا ربكم فٱعبدون
তারা সকলেই তোমাদের ধর্মের; একই ধর্মে তো বিশ্বাসী সবাই এবং আমিই তোমাদের পালনকর্তা, অতএব আমার বন্দেগী কর। [৫]
একমাত্র আল্লাহর ইবাদত ছাড়া এবং তাকে একক রব হিসেবে গ্রহন করা ছাড়া ঐক্যবদ্ধ হওয়া যাবেনা, কারণ তিনিই সত্য ইলাহ তিনি ছাড়া সবই মিথ্যা।
ذلك بان ٱلله هو ٱلحق وان ما يدعون من دونهۦ هو ٱلبـطل وان ٱلله هو ٱلعلى ٱلكبير
এটা এ কারণেও যে, আল্লাহই সত্য; আর তাঁর পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে, তা মিথ্যা এবং আল্লাহই সবার উচ্চে, মহান। [৬]
এটি মুসলমানদের তাওহীদের দাবী যদি তারা সত্যবাদী হয় তবে তাদের উচিত ‘আক্বীদা’কে সংশোধন করা এবং তাদের উচিত এর থেকে বিচ্যুতি ও বিদ’আতগুলি দূর করা, আর এটি যেনো মুহাম্মাদ সাঃ এর নীতিতেই হয়, যাতে করে মুসলমানরা এতে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। [৭]
━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━
[১] আলে-ইমরান ১০৩
[২] আনফাল : ৬২,৬৩
[৩] আলে-ইমরান:১০৩
[৪] আল-মু’মিনুন: ৫২
[৫] আল-আম্বিয়া : ৯২
[৬] হজঃ ৬২
সূত্র: إتحاف القاري পৃষ্ঠা ৭-৮ (সালেহ আল ফাউযান)
━━━━━━━━━━━━
জয়নাল বিন তোফাজ্জল
ইসলামিক স্টাডিস(বিভাগ), দনিয়া ইউনিভার্সিটি ঢাকা
জয়নাল বিন তোফাজ্জল
ইসলামিক স্টাডিস(বিভাগ), দনিয়া ইউনিভার্সিটি ঢাকা
Last edited: