সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

উসূলুল ফিকহ মানুষ হারাম কর্ম সম্পাদনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলে গুনাহগার হবে যদিও সে তা সম্পাদন না করে

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
690
Comments
1,222
Solutions
17
Reactions
7,067
Credits
5,703
মানুষ হারাম কর্ম সম্পাদনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলে গুনাহগার হবে যদিও সে তা সম্পাদন না করে যখন সে উক্ত কর্মটি শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য পরিত্যাগ না করে।
আবূ কাবশাহ আল আনমারী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“দুনিয়া চার ধরনের মানুষের জন্য, এমন বান্দার জন্য যাকে আল্লাহ তা'আলা সম্পদ ও ‘ইলম দান করেছেন, আর সে সেই বিষয়ে স্বীয় রবকে ভয় করে চলে, সে হলো সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ স্থানে আছে। আর এমন বান্দার জন্য যাকে আল্লাহ তা'আলা ‘ইলম দিয়েছেন কিন্তু সম্পদ দেননি, আর সে খাঁটি নিয়্যাতের সাথে বলে: যদি আমার সম্পদ থাকত, তাহলে আমি অমুকের ন্যায় কাজ করতাম, তাহলে সে তার নিয়্যাত অনুসারেই ছাওয়াব পাবে এবং উভয়ের ছাওয়াবও সমান হবে। আর এমন বান্দার জন্য যাকে আল্লাহ তা'আলা সম্পদ দিয়েছেন কিন্তু ‘ইলম দেননি, সে তার ‘ইলম বিহীন সম্পদ নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে, স্বীয় রবকে তার সম্পদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো ভয় করে না, আত্মীয়দের ক্ষেত্রে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করে না, সম্পদের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলার কোনো হক্ব আছে বলে মনে করে না, তাহলে এই ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্থানে অবস্থান করছে। আর এমন বান্দার জন্য, যাকে আল্লাহ তা'আলা সম্পদ ও ‘ইলম কোনোটাই দান করেননি, কিন্তু সে বলে: যদি আমার সম্পদ থাকত, তাহলে আমি অমুকের (যেই সম্পদশালী ব্যক্তি মনে করে তার সম্পদে আল্লাহর কোনো হক্ব নেই ন্যায় তা ব্যয় করতাম, তাহলে সে তার নিয়্যাত অনুসারে প্রতিদান পাবে আর উভয়ের অপরাধের পরিমাণ একই হবে”।

ইমাম তিরমিযী হাদীসটি (২৩২৫) বর্ণনা করে বলেছেন: এটা হাসান পর্যায়ের সহীহ হাদীস।

এই হাদীসটি এই দিকে ইঙ্গিত করে যে, মানুষ গুনাহের কাজে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেই গুনাহগার হবে, যদিও সে তা সম্পাদন না করে, যদি সেই পাপকর্ম পরিত্যাগের কারণ আল্লাহর প্রতি ভয় না হয়ে তার অপারগতা হয়ে থাকে।

শায়খুল ইসলাম হাদীসটি উল্লেখ করে এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে মাজমূ' ফাতাওয়া গ্রন্থে (১০/৭৩৩) বলেছেন: এটা ঐ ব্যক্তির ঘটনা, যে এমন কথা বলেছে, এবং সেই কথাকে সে আন্তরিকভাবে স্বীকার করেছে। আর আল্লাহ তা'আলা তার দৃঢ় নিয়্যাত সম্পর্কে জেনেছেন এবং সেই ব্যক্তি একমাত্র অপারগতা ছাড়া অন্যকোনো কারণে সেই কাজটি পরিত্যাগ করেনি। আর এই জন্যেই উভয়ে ছাওয়াব ও শাস্তির ক্ষেত্রে সমান স্তরে উপনীত হয়েছে, কিন্তু এই অবস্থা প্রত্যেক এই কথার বক্তার জন্য প্রযোজ্য নয়: “যদি এই অমুকের ন্যায় আমারও এই বস্তুটি থাকত, তাহলে আমি বস্তুটি তার মতই ব্যবহার করতাম” তবে বক্তার নিয়্যাত যদি দৃঢ় হয়, যেই নিয়্যাতের সাথে কর্ম সম্পাদনের উপস্থিতি ওয়াজিব হয়ে যায় যদি তা সম্পাদনের সক্ষমতা থাকে, অন্যথায় অনেক মানুষই এমন কথা দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলতে পারবে, যারা সক্ষমতা অর্জন করলে তাদের দৃঢ় প্রত্যয় ভেঙ্গে যাবে।

তিনি একই গ্রন্থে (১০/৭৩৬, ৭৩৭) বলেছেন: এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, অভিপ্রায়, সঙ্কল্প ও ইচ্ছা এই বিষয়গুলো কখনো দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে সংঘটিত হয়, যা সম্পাদনের পথে একমাত্র অপারগতা ছাড়া আর কোনো অন্তরায় থাকে না। আবার কখনো এটা এমন দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে সংঘটিত নাও হতে পারে। আর কোনো অপরাধের সংকল্পকারী যদি সেই অপরাধটি করতে সক্ষম হওয়ার পরেও তা না করে, তাহলে আল্লাহ তা'আলা সেই অপরাধের গুনাহ তার আমলনামায় লিখবেন না। যেমনটি তিনি সহীহ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন, চাই তার এই সংকল্পকে “ইরাদাহ” অথবা “’আযাম” বলা হোক অথবা না বলা হোক, যখন সে কর্মটি করতে সক্ষম হবে এবং তা করার সংকল্প করবে এবং দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে তা করার নিয়্যাত করবে কিন্তু সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা সম্পাদন করবে না, তার এমন অভিপ্রায়কে দৃঢ়তাপূর্ণ সংকল্প বলা যায় না।

 
COMMENTS ARE BELOW

Golam Rabby

Knowledge Sharer

ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Top Active User
Threads
853
Comments
1,002
Reactions
9,522
Credits
4,302
মানুষ হারাম কর্ম সম্পাদনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলে গুনাহগার হবে যদিও সে তা সম্পাদন না করে যখন সে উক্ত কর্মটি শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য পরিত্যাগ না করে।
আবূ কাবশাহ আল আনমারী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“দুনিয়া চার ধরনের মানুষের জন্য, এমন বান্দার জন্য যাকে আল্লাহ তা'আলা সম্পদ ও ‘ইলম দান করেছেন, আর সে সেই বিষয়ে স্বীয় রবকে ভয় করে চলে, সে হলো সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ স্থানে আছে। আর এমন বান্দার জন্য যাকে আল্লাহ তা'আলা ‘ইলম দিয়েছেন কিন্তু সম্পদ দেননি, আর সে খাঁটি নিয়্যাতের সাথে বলে: যদি আমার সম্পদ থাকত, তাহলে আমি অমুকের ন্যায় কাজ করতাম, তাহলে সে তার নিয়্যাত অনুসারেই ছাওয়াব পাবে এবং উভয়ের ছাওয়াবও সমান হবে। আর এমন বান্দার জন্য যাকে আল্লাহ তা'আলা সম্পদ দিয়েছেন কিন্তু ‘ইলম দেননি, সে তার ‘ইলম বিহীন সম্পদ নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে, স্বীয় রবকে তার সম্পদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোনো ভয় করে না, আত্মীয়দের ক্ষেত্রে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করে না, সম্পদের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলার কোনো হক্ব আছে বলে মনে করে না, তাহলে এই ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্থানে অবস্থান করছে। আর এমন বান্দার জন্য, যাকে আল্লাহ তা'আলা সম্পদ ও ‘ইলম কোনোটাই দান করেননি, কিন্তু সে বলে: যদি আমার সম্পদ থাকত, তাহলে আমি অমুকের (যেই সম্পদশালী ব্যক্তি মনে করে তার সম্পদে আল্লাহর কোনো হক্ব নেই ন্যায় তা ব্যয় করতাম, তাহলে সে তার নিয়্যাত অনুসারে প্রতিদান পাবে আর উভয়ের অপরাধের পরিমাণ একই হবে”।

ইমাম তিরমিযী হাদীসটি (২৩২৫) বর্ণনা করে বলেছেন: এটা হাসান পর্যায়ের সহীহ হাদীস।

এই হাদীসটি এই দিকে ইঙ্গিত করে যে, মানুষ গুনাহের কাজে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেই গুনাহগার হবে, যদিও সে তা সম্পাদন না করে, যদি সেই পাপকর্ম পরিত্যাগের কারণ আল্লাহর প্রতি ভয় না হয়ে তার অপারগতা হয়ে থাকে।

শায়খুল ইসলাম হাদীসটি উল্লেখ করে এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে মাজমূ' ফাতাওয়া গ্রন্থে (১০/৭৩৩) বলেছেন: এটা ঐ ব্যক্তির ঘটনা, যে এমন কথা বলেছে, এবং সেই কথাকে সে আন্তরিকভাবে স্বীকার করেছে। আর আল্লাহ তা'আলা তার দৃঢ় নিয়্যাত সম্পর্কে জেনেছেন এবং সেই ব্যক্তি একমাত্র অপারগতা ছাড়া অন্যকোনো কারণে সেই কাজটি পরিত্যাগ করেনি। আর এই জন্যেই উভয়ে ছাওয়াব ও শাস্তির ক্ষেত্রে সমান স্তরে উপনীত হয়েছে, কিন্তু এই অবস্থা প্রত্যেক এই কথার বক্তার জন্য প্রযোজ্য নয়: “যদি এই অমুকের ন্যায় আমারও এই বস্তুটি থাকত, তাহলে আমি বস্তুটি তার মতই ব্যবহার করতাম” তবে বক্তার নিয়্যাত যদি দৃঢ় হয়, যেই নিয়্যাতের সাথে কর্ম সম্পাদনের উপস্থিতি ওয়াজিব হয়ে যায় যদি তা সম্পাদনের সক্ষমতা থাকে, অন্যথায় অনেক মানুষই এমন কথা দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলতে পারবে, যারা সক্ষমতা অর্জন করলে তাদের দৃঢ় প্রত্যয় ভেঙ্গে যাবে।

তিনি একই গ্রন্থে (১০/৭৩৬, ৭৩৭) বলেছেন: এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, অভিপ্রায়, সঙ্কল্প ও ইচ্ছা এই বিষয়গুলো কখনো দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে সংঘটিত হয়, যা সম্পাদনের পথে একমাত্র অপারগতা ছাড়া আর কোনো অন্তরায় থাকে না। আবার কখনো এটা এমন দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে সংঘটিত নাও হতে পারে। আর কোনো অপরাধের সংকল্পকারী যদি সেই অপরাধটি করতে সক্ষম হওয়ার পরেও তা না করে, তাহলে আল্লাহ তা'আলা সেই অপরাধের গুনাহ তার আমলনামায় লিখবেন না। যেমনটি তিনি সহীহ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন, চাই তার এই সংকল্পকে “ইরাদাহ” অথবা “’আযাম” বলা হোক অথবা না বলা হোক, যখন সে কর্মটি করতে সক্ষম হবে এবং তা করার সংকল্প করবে এবং দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে তা করার নিয়্যাত করবে কিন্তু সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা সম্পাদন করবে না, তার এমন অভিপ্রায়কে দৃঢ়তাপূর্ণ সংকল্প বলা যায় না।

জাযাকাল্লাহু খাইরান.
সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি মূলনীতি জানলাম.
 

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
690
Comments
1,222
Solutions
17
Reactions
7,067
Credits
5,703
জাযাকাল্লাহু খাইরান.
সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি মূলনীতি জানলাম.
ওয়া ইয়্যাক।
 
Top