‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর মহামারী ছড়িয়ে পড়া কিংবা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকা অবস্থায় জুমার নামায ও নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়ার হুকুম

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,132
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
38,951
Credits
24,212
প্রশ্ন: মহামারী ছড়িয়ে পড়া কিংবা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকা অবস্থায় জুমার নামায ও জামাতের সাথে নামাযে উপস্থিত না হওয়ার রুখসত বা অবকাশের হুকুম কী?


উত্তর: আলহামদু লিল্লাহ।


সৌদি আরবের উচ্চ উলামা পরিষদের সদস্যগণ কর্তৃক ইস্যুকৃত সিদ্ধান্ত নং-২৪৬; তারিখ: ১৬/৭/১৪৪১ হিজরী; এর বক্তব্য নিম্নরূপ:


সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্‌র জন্য। আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীবর্গের প্রতি। অতঃপর:


১৬/৭/১৪৪১ তারিখ রোজ বুধবার রিয়াদে অনুষ্ঠিত উচ্চ উলামা পরিষদের চব্বিশতম অসাধারণ সভায় পরিষদের কাছে পেশকৃত 'মহামারী ছড়িয়ে পড়া কিংবা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকা অবস্থায় জুমার নামায ও জামাতের সাথে নামাযে উপস্থিত না হওয়ার রুখসত (অবকাশ)-এর বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। ইসলামী শরিয়তের দলিলপ্রমাণ, উদ্দেশ্যলক্ষ্য, নীতিমালা ও এ সংক্রান্ত আলেমদের বক্তব্য সর্বোতভাবে অবগতির পর উচ্চ উলামা পরিষদ নিম্নোক্ত ঘোষণা দেয়:


এক: মহামারী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জুমার নামায ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়া হারাম। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: لَا يُورِدُ مُمْرِضٌ عَلَى مُصِحٍّ "অসুস্থ পশুকে যেন সুস্থ পশুর মাঝে প্রবেশ করানো না হয়।"[বুখারী (৫৩২৮) ও মুসলিম (৪১১৭)]


তিনি আরও বলেন: إِذَا سَمِعْتُمْ بِالطَّاعُونِ بِأَرْضٍ فَلَا تَدْخُلُوهَا وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلَا تَخْرُجُوا مِنْهَا “তোমরা কোন এলাকায় প্লেগ রোগের সংবাদ শুনলে সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোন এলাকায় তোমরা অবস্থান করার মধ্যে সেখানে প্লেগ রোগ শুরু হয় তবে তোমরা সেখান থেকে বের হবে না।"[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম]


দুই: বিশেষজ্ঞরা যার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তাকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে তার উপর ওয়াজিব হচ্ছে— এ সিদ্ধান্ত মেনে চলা, নামাযের জামাতে ও জুমার নামাযে হাজির না হওয়া। নামাযগুলো নিজের বাসায় কিংবা তার কোয়ারেন্টাইনের স্থলে আদায় করা। যেহেতু আল-শারিদ বিন সুওয়াইদ আছ-ছাকাফি (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন: "ছাকীফদের প্রতিনিধি দলে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তি ছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কাছে লোক পাঠিয়ে জানালেন যে, নিশ্চয় আমি আপনার বাইআত গ্রহণ করেছি; অতএব আপনি ফিরে যান।"[সহিহ মুসলিম]


তিন: যে ব্যক্তি এই আশঙ্কা করছে যে সে নিজে আক্রান্ত হবে কিংবা অন্যকে আক্রান্ত করবে তার জন্য জুমার নামায ও নামাযের জামাতে হাজির হওয়ার রুখসত (অবকাশ) রয়েছে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: لَا ضَرَرَ وَلَا ضِرَارَ “নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নয় এবং অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করা নয়।”[ইবনে মাজাহ] উল্লেখিত অবস্থাগুলোতে যে ব্যক্তি জুমার নামাযে উপস্থিত হবে না, সে জুমার বদলে নিজগৃহে চার রাকাত যোহরের নামায আদায় করবে।


এই বিবৃতি দেয়ার সাথে সাথে উচ্চ উলামা পরিষদ সকলকে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যে সকল আদেশ, দিকনির্দেশনা ও নিয়মকানুন জারী করা হয় সেগুলো মেনে চলার উপদেশ দিচ্ছে।


আরও উপদেশ দিচ্ছে— আল্লাহকে ভয় করার, দোয়ার মাধ্যমে ও আকুতি মিনতি করার মাধ্যমে তাঁর কাছে ধর্ণা দেয়ার; যাতে করে তিনি এ মহামারী উঠিয়ে নেন। আল্লাহ বলেন:


وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ وَإِنْ يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَادَّ لِفَضْلِهِ يُصِيبُ بِهِ مَنْ يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ


"আল্লাহ যদি তোমাকে বিপদে ফেলেন তবে তিনি ব্যতীত তা থেকে উদ্ধার করার ক্ষমতা কারো নেই। আর তিনি যদি তোমার কল্যাণের ইচ্ছা করেন তবে তাঁর অনুগ্রহ প্রতিহত করার ক্ষমতা কারো নেই। তাঁর বান্দাদের মধ্যে তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে কল্যাণ দান করেন। আর তিনি অধিক ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।"[সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৭]


তিনি আরও বলেন: وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ "আর তোমাদের পালনকর্তা বলেন: তোমরা আমাকে ডাকো; আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো।"[সূরা গাফের; আয়াত: ৬০]


আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীবর্গের প্রতি আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।


সুত্র: Islamqa.info
 

Share this page