‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

প্রশ্নোত্তর মধ্য শাবানে কি রোযা রাখা যাবে; এ সংক্রান্ত হাদিসটি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Threads
4,134
Comments
4,353
Solutions
1
Reactions
37,496
Credits
24,212
প্রশ্নঃ অর্ধ শাবানের রাত্রিতে তোমরা কিয়ামুল লাইল পালন কর এবং দিনে রোযা রাখ" হাদিস যয়ীফ (দুর্বল) জানার পরেও আমলের ফযিলতের বিবেচনা থেকে সে হাদিস গ্রহণ করা কি আমাদের জন্য জায়েয হবে? উল্লেখ্য, সে নফল রোযাটি আল্লাহ্‌র জন্য ইবাদত হিসেবে পালিত হয়; যেমনিভাবে কিয়ামুল লাইলও ইবাদত হিসেবে পালিত হয়।


উত্তরঃ
আলহামদু লিল্লাহ।


এক:


মধ্যবর্তী শাবানে নামায পড়া, রোযা রাখা ও ইবাদত করার ব্যাপারে যে হাদিসগুলো বর্ণিত হয়েছে সেগুলো যয়ীফ (দুর্বল) শ্রেণীর হাদিস নয়; বরং মাওযু (বানোয়াট) ও বাতিল শ্রেণীয়। এমন হাদিস গ্রহণ করা ও এর উপর আমল করা জায়েয নয়; সেটা ফযিলতের হোক কিংবা অন্য ক্ষেত্রে হোক।


এ বিষয়ে উদ্ধৃত রেওয়ায়েতগুলো বাতিল হওয়ার ব্যাপারে বহু আলেম হুকুম দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইবনুল জাওযি তাঁর রচিত 'আল-মাওযুআত' গ্রন্থে (২/৪৪০-৪৪৫), ইবনুল কাইয়্যেম তাঁর রচিত 'আল-মানার আল-মুনিফ' গ্রন্থে (১৭৪ নং থেকে ১৭৭), আবু শামা আস-শাফেয়ি তাঁর রচিত 'আল-বায়িছ আলা ইনকারিল বিদা ওয়াল হাওয়াদিছ' গ্রন্থে (১২৪-১৩৭), আল-ইরাক্বি তাঁর রচিত 'তাখরিজু ইহইয়ায়ি উলুমিদ দ্বীন' গ্রন্থে (নং-৫৮২) এবং শাইখুল ইসলাম 'মাজমুউল ফাতাওয়া' গ্রন্থে (২৮/১৩৮) এ বর্ণনাগুলো বাতিল হওয়ার ব্যাপারে আলেমদের ঐক্যমত উদ্ধৃত করেছেন।


শাইখ বিন বায (রহঃ) মধ্য শাবানের রাত্রি (শবে বরাত) উদযাপনের হুকুম সম্পর্কে বলেন: নামায কিংবা অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে মধ্য শাবানের রাত্রি উদযাপন করা এবং ঐ দিনে বিশেষ রোযা রাখা: অধিকাংশ আলেমের নিকট গর্হিত বিদাত। পবিত্র শরিয়তে এর পক্ষে কোন দলিল নেই।


তিনি আরও বলেন:মধ্য শাবানের রাত (শবে বরাত) এর ব্যাপারে কোন সহিহ হাদিস নেই। এ বিষয়ে উদ্ধৃত সকল হাদিস মাওযু (বানোয়াট) ও যয়ীফ (দুর্বল); যেগুলোর কোন ভিত্তি নেই। এই রাত্রির কোন বিশেষত্ব নেই; না তেলাওয়াত, না বিশেষ কোন নামায,না সমাবেশ। কোন কোন আলেম যে বিশেষত্বের কথা বলেছেন সেটা দুর্বল অভিমত। অতএব, এ রাতে বিশেষ কোন ইবাদত করা জায়েয নয়। এটাই সঠিক। আল্লাহ্‌ই তাওফিকদাতা।


[ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা (৪/৫১১)]


[দেখুন: 8907 নং প্রশ্নোত্তর]


দুই:


যদি আমরা মেনেও নিই যে, এ সংক্রান্ত হাদিসগুলো মাওযু (বানোয়াট) নয়; যয়ীফ (দুর্বল): আলেমগণের বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে যয়ীফ (দুর্বল) হাদিসের উপর সাধারণভাবে আমল না করা; এমনকি যদি সেটা আমলের ফযিলতের ক্ষেত্রে হয় কিংবা উৎসাহপ্রদান ও নিরুৎসাহিত করণের ক্ষেত্রে হয় তবুও। সহিহ হাদিসে যা পাওয়া যায় সেটা গ্রহণ করাই একজন মুসলিমের জন্য যথেষ্ট। এ রাতকে ও দিনকে বিশেষত্ব প্রদান নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে যেমন জানা যায় না; তাঁর সাহাবীবর্গ থেকেও জানা যায় না।


আল্লামা আহমাদ শাকির (রহঃ) বলেন: "যয়ীফ (দুর্বল) হাদিস গ্রহণ না করার ক্ষেত্রে বিধিবিধান সংক্রান্ত বিষয়াবলী কিংবা ফযিলতপূর্ণ বিষয়াবলীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে যা সাব্যস্ত হয়েছে; 'সহিহ হাদিস' হিসেবে কিংবা 'হাসান হাদিস' হিসেবে; সেটা ছাড়া যা সহিহ সাব্যস্ত হয়নি সেটা দিয়ে কারো দলিল দেয়ার অধিকার নেই।[আল-বায়িছ আল-হাছিছ (১/২৭৮)]


আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন: القول المنيف في حكم العمل بالحديث الضعيف


এবং দেখুন: 44877 নং প্রশ্নোত্তর।


আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।


সুত্রঃ islamqa.info
 

Share this page