বিবাহের সময় ছেলে-মেয়েদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা যাবে কি?
উত্তর : না, গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা যাবে না। কেননা এগুলো বিজাতীয়দের থেকে আগত কুসংস্কার। আর বিজাতীয়দের সাদৃশ্য অবলম্বন করা সম্পূর্ণভাবে হারাম। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি সেই সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে (আবূ দাউদ, হা/৪০৩১)। সুতরাং গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকতে হবে। তবে অনুষ্ঠান ছাড়াই বর-কনে গায়ে হলুদ দিতে পারে যা খালা, ফুফু, দাদী, নানী ও নিজ বোনেরা বাস্তবায়ন করবে। একদা রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুর রহমান ইবনু আউফের শরীরে হলুদ চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন, ‘তুমি কি বিবাহ করেছ’ (আবূ দাউদ হা/২১০৯)। এতে বুঝা যায়, বর-কনে উভয়েই গায়ে হলুদ দিতে পারে। তবে প্রচলিত যুবতী মেয়েদের মাধ্যমে হলুদ মাখার অনুষ্ঠান অবশ্যই বর্জন করতে হবে।
সোর্স: ***
বিবাহ উপলক্ষ্যে বিবাহের আগের দিন বা ২-৩ দিন পূর্বে গায়ে হলুদ করা জায়েয হবে কি? এছাড়া এসব অনুষ্ঠানে মেয়েরা পর্দার মধ্যে হলুদ শাড়ী পরতে পারবে কি?
উত্তর : এরূপ গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান শরী‘আত সম্মত নয়। এগুলো কুসংস্কার ও অমুসলিমদের অনুকরণ। যা নিষিদ্ধ (আবূদাঊদ হা/৪০৩১; মিশকাত হা/৪৩৪৭)। তবে বর-কনে চাইলে নিজেরা হলুদ মাখতে পারে (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৩২১০ ‘ওয়ালীমা’ অনুচ্ছেদ)। মূলতঃ গায়ে হলুদ হিন্দুদের বৈবাহিক রীতি। বৈদিক যুগ থেকে ভারতীয় হিন্দুসমাজে গাত্রহরিদ্রা বা অধিবাস বিবাহ অনুষ্ঠানের অবশ্য পালনীয় শাস্ত্রাচার ও লোকাচার হিসাবে পালিত হয়ে এসেছে। পুরাণ মতে বিয়ের আগে গায়ে হলুদ সর্বপ্রথম মাখানো হয়েছিল পার্বতীকে শিবরাত্রির আগে, সেই থেকেই এই অনুষ্ঠানের জন্ম। হিন্দু সমাজে বর-কনের দাম্পত্য জীবনকে যেকোন ধরনের অকল্যাণ বা অপশক্তির অনিষ্ট থেকে মুক্ত রাখার কামনা থেকে যেসব লোকাচার পালন করা হয়, গায়ে হলুদ এসবেরই একটি। ভারতবর্ষে মুসলমানরা আসার পর তারাও এসব রীতিপদ্ধতি অনুসরণ করতে থাকে (বাংলাপিডিয়া; দৈনিক আনন্দবাজার, কলিকাতা)। উল্লেখ্য, বিবাহ অনুষ্ঠানে নারীরা পর্দার মধ্যে যেকোন শালীন পোষাক পরিধান করতে পারে।
সোর্স: ***